بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুনদয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে,
الٓمّٓۚ﴿۱﴾
২-১ : আলিফ্ - লাম - মিম,
ذٰ لِكَ الۡڪِتٰبُ لَا رَيۡبَۛۚۖ فِيۡهِۛۚ هُدًى لِّلۡمُتَّقِيۡنَۙ﴿۲﴾
২-২ : ইহা সেই কিতাব; ইহাতে কোন সন্দেহ নাই, মুত্তাকীদের জন্য ইহা পথ - নির্দেশ,
الَّذِيۡنَ يُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡغَيۡبِ وَ يُقِيۡمُوۡنَ الصَّلٰوةَ وَمِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ يُنۡفِقُوۡنَۙ﴿۳﴾
২-৩ : যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,
وَالَّذِيۡنَ يُؤۡمِنُوۡنَ بِمَۤا اُنۡزِلَ اِلَيۡكَ وَمَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِكَۚ وَبِالۡاٰخِرَةِ هُمۡ يُوۡقِنُوۡنَؕ ﴿۴﴾
২-৪ : এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,
اُولٰٓٮِٕكَ عَلٰى هُدًى مِّنۡ رَّبِّهِمۡ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ﴿۵﴾
২-৫ : তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক - নির্দেশিত পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا سَوَآءٌ عَلَيۡهِمۡ ءَاَنۡذَرۡتَهُمۡ اَمۡ لَمۡ تُنۡذِرۡهُمۡ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ﴿۶﴾
২-৬ : যাহারা কুফরী করিয়াছে তুমি তাহাদেরকে সতর্ক কর বা না কর, তাহাদের পক্ষে উভয়ই সমান; তাহারা ঈমান আনিবে না।
خَتَمَ اللّٰهُ عَلَىٰ قُلُوۡبِهِمۡ وَعَلٰى سَمۡعِهِمۡؕ وَعَلٰىٓ اَبۡصَارِهِمۡ غِشَاوَةٌ وَّلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيۡمٌ ﴿۷﴾
২-৭ : আল্লাহ্ তাহাদের হৃদয় ও কর্ণ মোহর করিয়া দিয়াছেন, তাহাদের চক্ষুর উপর আবরণ রহিয়াছে এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে মহাশাস্তি।
وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَبِالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَمَا هُمۡ بِمُؤۡمِنِيۡنَۘ﴿۸﴾
২-৮ : আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও রহিয়াছে যাহারা বলে, ‘আমরা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনিয়াছি’, কিন্তু তাহারা মু’মিন নয়;
يُخٰدِعُوۡنَ اللّٰهَ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا ۚ وَمَا يَخۡدَعُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَهُمۡ وَمَا يَشۡعُرُوۡنَؕ﴿۹﴾
২-৯ : আল্লাহ্ এবং মু’মিনগণকে তাহারা প্রতারিত করিতে চাহে। অথচ তাহারা যে নিজেদেরকে ভিন্ন কাহাকেও প্রতারিত করে না, ইহা তাহারা বুঝিতে পারে না।
فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ مَّرَضٌۙ فَزَادَهُمُ اللّٰهُ مَرَضًا ۚ وَّلَهُمۡ عَذَابٌ اَلِيۡمٌۙۢبِمَا كَانُوۡا يَكۡذِبُوۡنَ﴿۱۰﴾
২-১০ : তাহাদের অন্তরে ব্যাধি রহিয়াছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাহাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করিয়াছেন ও তাহাদের জন্য রহিয়াছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তাহারা মিথ্যাবাদী।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمۡ لَا تُفۡسِدُوۡا فِىۡ الۡاَرۡضِۙ قَالُوۡاۤ اِنَّمَا نَحۡنُ مُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۱﴾
২-১১ : তাহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করিও না’, তাহারা বলে, ‘আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী’।
اَلَا ۤ اِنَّهُمۡ هُمُ الۡمُفۡسِدُوۡنَ وَلٰـكِنۡ لَّا يَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۲﴾
২-১২ : সাবধান! ইহারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু ইহারা বুঝিতে পারে না।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمۡ اٰمِنُوۡا كَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ قَالُوۡاۤ اَنُؤۡمِنُ كَمَاۤ اٰمَنَ السُّفَهَآءُ ؕ اَلَاۤ اِنَّهُمۡ هُمُ السُّفَهَآءُ وَلٰـكِنۡ لَّا يَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳﴾
২-১৩ : যখন তাহাদেরকে বলা হয়, যে সকল লোক ঈমান আনিয়াছে তোমরাও তাহাদের মত ঈমান আনয়ন কর, তাহারা বলে, ‘নির্বোধগণ যেরূপ ঈমান আনিয়াছে আমরাও কি সেইরূপ ঈমান আনিব?’ সাবধান! ইহারাই নির্বোধ, কিন্তু ইহারা জানে না।
وَاِذَا لَقُوۡا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا قَالُوۡاۤ اٰمَنَّا ۖۚ وَاِذَا خَلَوۡا اِلٰى شَيٰطِيۡنِهِمۡۙ قَالُوۡاۤ اِنَّا مَعَكُمۡۙ اِنَّمَا نَحۡنُ مُسۡتَهۡزِءُوۡنَ ﴿۱۴﴾
২-১৪ : যখন তাহারা মু’মিনগণের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান আনিয়াছি’; আর যখন তাহারা নিভৃতে তাহাদের শয়তানদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই রহিয়াছি; আমরা শুধু তাহাদের সঙ্গে ঠাট্টা - তামাশা করিয়া থাকি।’
اَللّٰهُ يَسۡتَهۡزِئُ بِهِمۡ وَيَمُدُّهُمۡ فِىۡ طُغۡيَانِهِمۡ يَعۡمَهُوۡنَ﴿۱۵﴾
২-১৫ : আল্লাহ্ তাহাদের সঙ্গে তামাশা করেন এবং তাহাদেরকে তাহাদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়াইবার অবকাশ দেন।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ اشۡتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالۡهُدٰى فَمَا رَبِحَتۡ تِّجَارَتُهُمۡ وَمَا كَانُوۡا مُهۡتَدِيۡنَ﴿۱۶﴾
২-১৬ : ইহারাই হিদায়াতের বিনিময়ে ভ্রান্তি ক্রয় করিয়াছে। সুতরাং তাহাদের ব্যবসা লাভজনক হয় নাই, তাহারা সৎপথেও পরিচালিত নহে।
مَثَلُهُمۡ كَمَثَلِ الَّذِى اسۡتَوۡقَدَ نَارًا ۚ فَلَمَّاۤ اَضَآءَتۡ مَا حَوۡلَهٗ ذَهَبَ اللّٰهُ بِنُوۡرِهِمۡ وَتَرَكَهُمۡ فِىۡ ظُلُمٰتٍ لَّا يُبۡصِرُوۡنَ ﴿۱۷﴾
২-১৭ : তাহাদের উপমা : যেমন এক ব্যক্তি অগ্নি প্রজ্বলিত করিল; উহা যখন তাহার চতুর্দিক আলোকিত করিল আল্লাহ্ তখন তাহাদের জ্যোতি অপসারিত করিলেন এবং তাহাদেরকে ঘোর অন্ধকারে ফেলিয়া দিলেন, তাহারা কিছুই দেখিতে পায় না -
صُمٌّۢ بُكۡمٌ عُمۡىٌ فَهُمۡ لَا يَرۡجِعُوۡنَ ۙ﴿۱۸﴾
২-১৮ : তাহারা বধির, মূক, অন্ধ, সুতরাং তাহারা ফিরিবে না।
اَوۡ كَصَيِّبٍ مِّنَ السَّمَآءِ فِيۡهِ ظُلُمٰتٌ وَّرَعۡدٌ وَّبَرۡقٌ ۚ يَجۡعَلُوۡنَ اَصَابِعَهُمۡ فِىۡۤ اٰذَانِهِمۡ مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الۡمَوۡتِؕ وَاللّٰهُ مُحِيۡطٌۢ بِالۡكٰفِرِيۡنَ ﴿۱۹﴾
২-১৯ : কিংবা যেমন আকাশের বর্ষণমুখর ঘন মেঘ - যাহাতে রহিয়াছে ঘোর অন্ধকার, বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুৎ - চমক। বজ্রধ্বনিতে মৃত্যুভয়ে তাহারা তাহাদের কর্ণে অঙ্গুলি প্রবেশ করায়। আল্লাহ্ কাফিরদের পরিবেষ্টন করিয়া রহিয়াছেন।
يَكَادُ الۡبَرۡقُ يَخۡطَفُ اَبۡصَارَهُمۡؕ كُلَّمَاۤ اَضَآءَ لَهُمۡ مَّشَوۡا فِيۡهِۙ وَاِذَاۤ اَظۡلَمَ عَلَيۡهِمۡ قَامُوۡاؕ وَلَوۡ شَآءَ اللّٰهُ لَذَهَبَ بِسَمۡعِهِمۡ وَاَبۡصَارِهِمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۲۰﴾
২-২০ : বিদ্যুৎ - চমক তাহাদের দৃষ্টিশক্তি প্রায় কাড়িয়া নেয়। যখনই বিদ্যুতালোক তাহাদের সম্মুখে উদ্ভাসিত হয় তাহারা তখনই তাহাতে পথ চলিতে থাকে এবং যখন তাহারা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়, তখন তাহারা থমকিয়া দাঁড়ায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে তাহাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি হরণ করিতেন। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اعۡبُدُوۡا رَبَّكُمُ الَّذِىۡ خَلَقَكُمۡ وَالَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَ ۙ ﴿۲۱﴾
২-২১ : হে মানুষ! তোমরা তোমাদের সেই প্রতিপালকের ‘ইবাদত কর যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে সৃষ্টি করিয়াছেন যাহাতে তোমরা মুত্তাকী হইতে পার,
الَّذِىۡ جَعَلَ لَـكُمُ الۡاَرۡضَ فِرَاشًا وَّالسَّمَآءَ بِنَآءً وَّاَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخۡرَجَ بِهٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزۡقًا لَّـكُمۡۚ فَلَا تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ اَنۡدَادًا وَّاَنۡـتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۲﴾
২-২২ : যিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিছানা ও আকাশকে ছাদ করিয়াছেন এবং আকাশ হইতে পানি বর্ষণ করিয়া তদ্দ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্য ফলমূল উৎপাদন করেন। সুতরাং তোমরা জানিয়া - শুনিয়া কাহাকেও আল্লাহ্র সমকক্ষ দাঁড় করাইও না।
وَاِنۡ کُنۡتُمۡ فِىۡ رَيۡبٍ مِّمَّا نَزَّلۡنَا عَلٰى عَبۡدِنَا فَاۡتُوۡا بِسُوۡرَةٍ مِّنۡ مِّثۡلِهٖ وَادۡعُوۡا شُهَدَآءَكُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ﴿۲۳﴾
২-২৩ : আমি আমার বান্দার প্রতি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছি তাহাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকিলে তোমরা ইহার অনুরূপ কোন সূরা আনয়ন কর এবং তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহ্বান কর।
فَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلُوۡا وَلَنۡ تَفۡعَلُوۡا فَاتَّقُوۡا النَّارَ الَّتِىۡ وَقُوۡدُهَا النَّاسُ وَالۡحِجَارَةُ ۖۚ اُعِدَّتۡ لِلۡكٰفِرِيۡنَ ﴿۲۴﴾
২-২৪ : যদি তোমরা আনয়ন না কর এবং কখনই করিতে পারিবে না, তবে সেই আগুনকে ভয় কর, মানুষ ও পাথর হইবে যাহার ইন্ধন, কাফিরদের জন্য যাহা প্রস্তুত করিয়া রাখা হইয়াছে।
وَبَشِّرِ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُؕ ڪُلَّمَا رُزِقُوۡا مِنۡهَا مِنۡ ثَمَرَةٍ رِّزۡقًا ۙ قَالُوۡا هٰذَا الَّذِىۡ رُزِقۡنَا مِنۡ قَبۡلُ وَاُتُوۡا بِهٖ مُتَشَابِهًا ؕ وَلَهُمۡ فِيۡهَآ اَزۡوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ ۙ وَّهُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۲۵﴾
২-২৫ : যাহারা ঈমান আনয়ন করে ও সৎকর্ম করে তাহাদেরকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে জান্নাত - যাহার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত। যখনই তাহাদেরকে ফলমূল খাইতে দেওয়া হইবে তখনই তাহারা বলিবে, ‘আমাদেরকে পূর্বে জীবিকারূপে যাহা দেওয়া হইত ইহা তো তাহাই; তাহাদেরকে অনুরূপ ফলই দেওয়া হইবে এবং সেখানে তাহাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী রহিয়াছে, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَسۡتَحۡـىٖۤ اَنۡ يَّضۡرِبَ مَثَلًا مَّا بَعُوۡضَةً فَمَا فَوۡقَهَا ؕ فَاَمَّا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا فَيَعۡلَمُوۡنَ اَنَّهُ الۡحَـقُّ مِنۡ رَّبِّهِمۡۚ وَاَمَّا الَّذِيۡنَ ڪَفَرُوۡا فَيَقُوۡلُوۡنَ مَاذَآ اَرَادَ اللّٰهُ بِهٰذَا مَثَلًا ۘ يُضِلُّ بِهٖ ڪَثِيۡرًا وَّيَهۡدِىۡ بِهٖ كَثِيۡرًا ؕ وَمَا يُضِلُّ بِهٖۤ اِلَّا الۡفٰسِقِيۡنَۙ ﴿۲۶﴾
২-২৬ : আল্লাহ্ মশা কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র কোন বস্তুর উপমা দিতে সংকোচ বোধ করেন না। সুতরাং যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারা জানে যে, নিশ্চয়ই ইহা সত্য - যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে আসিয়াছে। কিন্তু যাহারা কাফির তাহারা বলে, আল্লাহ্ কী অভিপ্রায়ে এই উপমা পেশ করিয়াছেন? ইহা দ্বারা অনেককেই তিনি বিভ্রান্ত করেন, আবার বহু লোককে সৎপথে পরিচালিত করেন। বস্তুত তিনি পথ - পরিত্যাগকারীগণ ব্যতীত আর কাহাকেও বিভ্রান্ত করেন না -
الَّذِيۡنَ يَنۡقُضُوۡنَ عَهۡدَ اللّٰهِ مِنۡۢ بَعۡدِ مِيۡثَاقِهٖ وَيَقۡطَعُوۡنَ مَآ اَمَرَ اللّٰهُ بِهٖۤ اَنۡ يُّوۡصَلَ وَيُفۡسِدُوۡنَ فِى الۡاَرۡضِؕ اُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۲۷﴾
২-২৭ : যাহারা আল্লাহ্র সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হইবার পর উহা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখিতে আল্লাহ্ আদেশ করিয়াছেন তাহা ছিন্ন করে এবং দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি করিয়া বেড়ায়, তাহারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
كَيۡفَ تَكۡفُرُوۡنَ بِاللّٰهِ وَڪُنۡتُمۡ اَمۡوَاتًا فَاَحۡيَاکُمۡۚ ثُمَّ يُمِيۡتُكُمۡ ثُمَّ يُحۡيِيۡكُمۡ ثُمَّ اِلَيۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ﴿۲۸﴾
২-২৮ : তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করিয়াছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাইবেন ও পুনরায় জীবন্ত করিবেন, পরিণামে তাঁহার দিকেই তোমাদেরকে ফিরাইয়া আনা হইবে।
هُوَ الَّذِىۡ خَلَقَ لَـكُمۡ مَّا فِى الۡاَرۡضِ جَمِيۡعًا ثُمَّ اسۡتَوٰۤى اِلَى السَّمَآءِ فَسَوّٰٮهُنَّ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍؕ وَهُوَ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمٌ ﴿۲۹﴾
২-২৯ : তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করিয়াছেন, তৎপর তিনি আকাশের দিকে মনোসংযোগ করেন এবং উহাকে সপ্তাকাশে বিন্যস্ত করেন; তিনি সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
وَاِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلٰٓٮِٕكَةِ اِنِّىۡ جَاعِلٌ فِى الۡاَرۡضِ خَلِيۡفَةً ؕ قَالُوۡٓا اَتَجۡعَلُ فِيۡهَا مَنۡ يُّفۡسِدُ فِيۡهَا وَيَسۡفِكُ الدِّمَآءَۚ وَنَحۡنُ نُسَبِّحُ بِحَمۡدِكَ وَنُقَدِّسُ لَـكَؕ قَالَ اِنِّىۡٓ اَعۡلَمُ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۰﴾
২-৩০ : স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদের বলিলেন, ‘আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করিতেছি’, তাহারা বলিল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাহাকেও সৃষ্টি করিবেন, যে অশান্তি ঘটাইবে ও রক্তপাত করিবে? আমরাই তো আপনার সপ্রশংস স্তুতিগান ও পবিত্রতা ঘোষণা করি। তিনি বলিলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি যাহা জানি তাহা তোমরা জান না।’
وَعَلَّمَ اٰدَمَ الۡاَسۡمَآءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمۡ عَلَى الۡمَلٰٓٮِٕكَةِ فَقَالَ اَنۡۢبِــُٔوۡنِىۡ بِاَسۡمَآءِ هٰٓؤُلَآءِ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ﴿۳۱﴾
২-৩১ : আর তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন, তারপর সেই সমুদয় ফিরিশতাদের সম্মুখে প্রকাশ করিলেন এবং বলিলেন, ‘এই সমুদয়ের নাম আমাকে বলিয়া দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
قَالُوۡا سُبۡحٰنَكَ لَا عِلۡمَ لَنَآ اِلَّا مَا عَلَّمۡتَنَا ؕ اِنَّكَ اَنۡتَ الۡعَلِيۡمُ الۡحَكِيۡمُ﴿۳۲﴾
২-৩২ : তাহারা বলিল, ‘আপনি মহান, পবিত্র। আপনি আমাদেরকে যাহা শিক্ষা দিয়াছেন তাহা ছাড়া আমাদের তো কোন জ্ঞানই নাই। বস্তুত আপনি জ্ঞানময় ও প্রজ্ঞাময়।’
قَالَ يٰٓـاٰدَمُ اَنۡۢبِئۡهُمۡ بِاَسۡمَآٮِٕهِمۡۚ فَلَمَّآ اَنۡۢبَاَهُمۡ بِاَسۡمَآٮِٕهِمۡۙ قَالَ اَلَمۡ اَقُل لَّـكُمۡ اِنِّىۡٓ اَعۡلَمُ غَيۡبَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِۙ وَاَعۡلَمُ مَا تُبۡدُوۡنَ وَمَا كُنۡتُمۡ تَكۡتُمُوۡنَ﴿۳۳﴾
২-৩৩ : তিনি বলিলেন, ‘হে আদম! তাহাদেরকে এই সকল নাম বলিয়া দাও।’ সে তাহাদেরকে এই সকলের নাম বলিয়া দিলে তিনি বলিলেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলি নাই যে, আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর অদৃশ্য বস্তু সম্বন্ধে আমি নিশ্চিতভাবে অবহিত এবং তোমরা যাহা ব্যক্ত কর বা গোপন রাখ আমি তাহাও জানি?’
وَاِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓٮِٕكَةِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡٓا اِلَّاۤ اِبۡلِيۡسَؕ اَبٰى وَاسۡتَكۡبَرَ وَكَانَ مِنَ الۡكٰفِرِيۡنَ ﴿۳۴﴾
২-৩৪ : যখন আমি ফিরিশতাদের বলিলাম, ‘আদমকে সিজ্দা কর’, তখন ইব্লীস ব্যতীত সকলেই সিজ্দা করিল; সে অমান্য করিল ও অহংকার করিল। সুতরাং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হইল।
وَقُلۡنَا يٰٓـاٰدَمُ اسۡكُنۡ اَنۡتَ وَزَوۡجُكَ الۡجَـنَّةَ وَكُلَا مِنۡهَا رَغَدًا حَيۡثُ شِئۡتُمَا وَلَا تَقۡرَبَا هٰذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِيۡنَ﴿۳۵﴾
২-৩৫ : এবং আমি বলিলাম, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেথা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হইও না ; হইলে তোমরা অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হইবে।’
فَاَزَلَّهُمَا الشَّيۡطٰنُ عَنۡهَا فَاَخۡرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِيۡهِ وَقُلۡنَا اهۡبِطُوۡا بَعۡضُكُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ ۚ وَلَـكُمۡ فِى الۡاَرۡضِ مُسۡتَقَرٌّ وَّمَتَاعٌ اِلٰى حِيۡنٍ﴿۳۶﴾
২-৩৬ : কিন্তু শয়তান উহা হইতে তাহাদের পদস্খলন ঘটাইল এবং তাহারা যেখানে ছিল সেখান হইতে তাহাদেরকে বহিষ্কার করিল। আমি বলিলাম, ‘তোমরা একে অন্যের শত্রুরূপে নামিয়া যাও, পৃথিবীতে কিছুকালের জন্য তোমাদের বসবাস ও জীবিকা রহিল।’
فَتَلَقّٰٓى اٰدَمُ مِنۡ رَّبِّهٖ كَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَيۡهِؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ﴿۳۷﴾
২-৩৭ : অতঃপর আদম তাহার প্রতিপালকের নিকট হইতে কিছু বাণী প্রাপ্ত হইল। আল্লাহ্ তাহার প্রতি ক্ষমাপরবশ হইলেন। নিশ্চয়ই তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
قُلۡنَا اهۡبِطُوۡا مِنۡهَا جَمِيۡعًا ۚ فَاِمَّا يَاۡتِيَنَّكُمۡ مِّنِّىۡ هُدًى فَمَنۡ تَبِعَ هُدَاىَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَ ﴿۳۸﴾
২-৩৮ : আমি বলিলাম, ‘তোমরা সকলেই এই স্থান হইতে নামিয়া যাও। পরে যখন আমার পক্ষ হইতে তোমাদের নিকট সৎপথের কোন নির্দেশ আসিবে তখন যাহারা আমার সৎপথের নির্দেশ অনুসরণ করিবে তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।’
وَالَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَكَذَّبُوۡا بِـاٰيٰتِنَآ اُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۳۹﴾
২-৩৯ : যাহারা কুফরী করিবে এবং আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করিবে তাহারাই অগ্নিবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
يٰبَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ اذۡكُرُوۡا نِعۡمَتِىَ الَّتِىۡٓ اَنۡعَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ وَاَوۡفُوۡا بِعَهۡدِىۡٓ اُوۡفِ بِعَهۡدِكُمۡۚ وَاِيَّاىَ فَارۡهَبُوۡنِ﴿۴۰﴾
২-৪০ : হে বনী ইসরাঈল! আমার সেই অনুগ্রহকে তোমরা স্মরণ কর যদ্দ্বারা আমি তোমাদেরকে অনুগৃহীত করিয়াছি এবং আমার সঙ্গে তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে আমার অঙ্গীকার পূর্ণ করিব। আর তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর।
وَاٰمِنُوۡا بِمَآ اَنۡزَلۡتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمۡ وَلَا تَكُوۡنُوۡآ اَوَّلَ كَافِرٍۢ بِهٖ وَلَا تَشۡتَرُوۡا بِاٰيٰتِىۡ ثَمَنًا قَلِيۡلًا وَّاِيَّاىَ فَاتَّقُوۡنِ﴿۴۱﴾
২-৪১ : আমি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছি তোমরা তাহাতে ঈমান আন। ইহা তোমাদের নিকট যাহা আছে উহার প্রত্যায়নকারী। আর তোমরাই উহার প্রথম প্রত্যাখ্যানকারী হইও না এবং আমার আয়াতের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করিও না। তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর।
وَلَا تَلۡبِسُوا الۡحَـقَّ بِالۡبَاطِلِ وَتَكۡتُمُوا الۡحَـقَّ وَاَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۲﴾
২-৪২ : তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া - শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।
وَاَقِيۡمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَارۡكَعُوۡا مَعَ الرّٰكِعِيۡنَ ﴿۴۳﴾
২-৪৩ : তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যাহারা রুকূ‘ করে তাহাদের সঙ্গে রুকূ‘ কর।
اَتَاۡمُرُوۡنَ النَّاسَ بِالۡبِرِّ وَتَنۡسَوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ وَاَنۡتُمۡ تَتۡلُوۡنَ الۡكِتٰبَؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ﴿۴۴﴾
২-৪৪ : তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও, আর নিজদেরকে বিস্মৃত হও? অথচ তোমরা কিতাব অধ্যয়ন কর। তবে কি তোমরা বুঝ না?
وَاسۡتَعِيۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ وَاِنَّهَا لَكَبِيۡرَةٌ اِلَّا عَلَى الۡخٰشِعِيۡنَۙ ﴿۴۵﴾
২-৪৫ : তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর এবং ইহা বিনীতগণ ব্যতীত আর সকলের নিকট নিশ্চিতভাবে কঠিন।
الَّذِيۡنَ يَظُنُّوۡنَ اَنَّهُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّهِمۡ وَاَنَّهُمۡ اِلَيۡهِ رٰجِعُوۡنَ﴿۴۶﴾
২-৪৬ : তাহারাই বিনীত যাহারা বিশ্বাস করে যে, তাহাদের প্রতিপালকের সঙ্গে নিশ্চিতভাবে তাহাদের সাক্ষাতকার ঘটিবে এবং তাঁহারই দিকে তাহারা ফিরিয়া যাইবে।
يٰبَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ اذۡكُرُوۡا نِعۡمَتِىَ الَّتِىۡٓ اَنۡعَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ وَاَنِّىۡ فَضَّلۡتُكُمۡ عَلَى الۡعٰلَمِيۡنَ﴿۴۷﴾
২-৪৭ : হে বনী ইসরাঈল ! আমার সেই অনুগ্রহকে স্মরণ কর যদ্দ্বারা আমি তোমাদেরকে অনুগৃহীত করিয়াছিলাম এবং বিশ্বে সবার উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছিলাম।
وَاتَّقُوۡا يَوۡمًا لَّا تَجۡزِىۡ نَفۡسٌ عَنۡ نَّفۡسٍ شَیْــٴً۬ــا وَّلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا شَفَاعَةٌ وَّلَا يُؤۡخَذُ مِنۡهَا عَدۡلٌ وَّلَا هُمۡ يُنۡصَرُوۡنَ ﴿۴۸﴾
২-৪৮ : তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যেদিন কেহ কাহারও কোন কাজে আসিবে না, কাহারও সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে না, কাহারও নিকট হইতে বিনিময় গৃহীত হইবে না এবং তাহারা কোন প্রকার সাহায্যপ্রাপ্তও হইবে না।
وَاِذۡ نَجَّيۡنٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ يَسُوۡمُوۡنَكُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ يُذَبِّحُوۡنَ اَبۡنَآءَكُمۡ وَيَسۡتَحۡيُوۡنَ نِسَآءَكُمۡؕ وَفِىۡ ذٰلِكُمۡ بَلَاۤءٌ مِّنۡ رَّبِّكُمۡ عَظِيۡمٌ﴿۴۹﴾
২-৪৯ : স্মরণ কর, যখন আমি ফির‘আওনী সম্প্রদায় হইতে তোমাদেরকে নিষ্কৃতি দিয়াছিলাম, যাহারা তোমাদের পুত্রগণকে যবেহ্ করিয়া ও তোমাদের নারীগণকে জীবিত রাখিয়া তোমাদেরকে মর্মান্তিক যন্ত্রণা দিত; এবং উহাতে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে এক মহাপরীক্ষা ছিল;
وَاِذۡ فَرَقۡنَا بِكُمُ الۡبَحۡرَ فَاَنۡجَيۡنٰکُمۡ وَاَغۡرَقۡنَآ اٰلَ فِرۡعَوۡنَ وَاَنۡتُمۡ تَنۡظُرُوۡنَ﴿۵۰﴾
২-৫০ : যখন তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিধাবিভক্ত করিয়াছিলাম এবং তোমাদেরকে উদ্ধার করিয়াছিলাম ও ফির‘আওনী সম্প্রদায়কে নিমজ্জিত করিয়াছিলাম আর তোমরা উহা প্রত্যক্ষ করিতেছিলে।
وَاِذۡ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰٓى اَرۡبَعِيۡنَ لَيۡلَةً ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ وَاَنۡـتُمۡ ظٰلِمُوۡنَ ﴿۵۱﴾
২-৫১ : যখন মূসার জন্য চল্লিশ রাত্রি নির্ধারিত করিয়াছিলাম, তাহার প্রস্থানের পর তোমরা তখন গোবৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করিয়াছিলে; আর তোমরা তো জালিম।
ثُمَّ عَفَوۡنَا عَنۡكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ﴿۵۲﴾
২-৫২ : ইহার পরও আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করিয়াছি, যাহাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
وَاِذۡ اٰتَيۡنَا مُوۡسَى الۡكِتٰبَ وَالۡفُرۡقَانَ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُوۡنَ﴿۵۳﴾
২-৫৩ : - আর যখন আমি মূসাকে কিতাব ও ‘আল ফুরকান’ দান করিয়াছিলাম যাহাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।
وَاِذۡ قَالَ مُوۡسٰى لِقَوۡمِهٖ يٰقَوۡمِ اِنَّكُمۡ ظَلَمۡتُمۡ اَنۡفُسَکُمۡ بِاتِّخَاذِكُمُ الۡعِجۡلَ فَتُوۡبُوۡآ اِلٰى بَارِٮِٕكُمۡ فَاقۡتُلُوۡٓا اَنۡفُسَكُمۡؕ ذٰ لِكُمۡ خَيۡرٌ لَّـكُمۡ عِنۡدَ بَارِٮِٕكُمۡؕ فَتَابَ عَلَيۡكُمۡؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ ﴿۵۴﴾
২-৫৪ : আর যখন মূসা আপন সম্প্রদায়ের লোককে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! গো - বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করিয়া তোমরা নিজেদের প্রতি ঘোর অত্যাচার করিয়াছ, সুতরাং তোমরা তোমাদের স্রষ্টার পানে ফিরিয়া যাও এবং তোমরা নিজেদেরকে হত্যা কর। তোমাদের স্রষ্টার নিকট ইহাই শ্রেয়। তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাপরবশ হইবেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
وَاِذۡ قُلۡتُمۡ يٰمُوۡسٰى لَنۡ نُّؤۡمِنَ لَـكَ حَتّٰى نَرَى اللّٰهَ جَهۡرَةً فَاَخَذَتۡكُمُ الصّٰعِقَةُ وَاَنۡتُمۡ تَنۡظُرُوۡنَ﴿۵۵﴾
২-৫৫ : - যখন তোমরা বলিয়াছিলে, ‘হে মূসা! আমরা আল্লাহ্কে প্রত্যক্ষভাবে না দেখা পর্যন্ত তোমাকে কখনও বিশ্বাস করিব না’, তখন তোমরা বজ্রাহত হইয়াছিলে আর তোমরা নিজেরাই দেখিতেছিলে।
ثُمَّ بَعَثۡنٰكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَوۡتِكُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ﴿۵۶﴾
২-৫৬ : অতঃপর তোমাদের মৃত্যুর পর আমি তোমাদেরকে পুনর্জীবিত করিলাম যাহাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
وَظَلَّلۡنَا عَلَيۡکُمُ الۡغَمَامَ وَاَنۡزَلۡنَا عَلَيۡكُمُ الۡمَنَّ وَالسَّلۡوٰىؕ كُلُوۡا مِنۡ طَيِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰكُمۡؕ وَمَا ظَلَمُوۡنَا وَلٰـكِنۡ كَانُوۡآ اَنۡفُسَهُمۡ يَظۡلِمُوۡنَ﴿۵۷﴾
২-৫৭ : আমি মেঘ দ্বারা তোমাদের উপর ছায়া বিস্তার করিলাম এবং তোমাদের নিকট মান্না ও সাল্ওয়া প্রেরণ করিলাম। বলিয়াছিলাম, ‘তোমাদেরকে যে উত্তম জীবিকা দান করিয়াছি তাহা হইতে আহার কর।’ তাহারা ‘আমার প্রতি কোন জুলুম করে নাই, বরং তাহারা তাহাদের প্রতিই জুলুম করিয়াছিল।’
وَاِذۡ قُلۡنَا ادۡخُلُوۡا هٰذِهِ الۡقَرۡيَةَ فَکُلُوۡا مِنۡهَا حَيۡثُ شِئۡتُمۡ رَغَدًا وَّادۡخُلُوا الۡبَابَ سُجَّدًا وَّقُوۡلُوۡا حِطَّةٌ نَّغۡفِرۡ لَـكُمۡ خَطٰيٰكُمۡؕ وَسَنَزِيۡدُ الۡمُحۡسِنِيۡنَ ﴿۵۸﴾
২-৫৮ : স্মরণ কর, যখন আমি বলিলাম, ‘এই জনপদে প্রবেশ কর, যেথা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর, নতশিরে প্রবেশ কর দ্বার দিয়া এবং বল : ‘ক্ষমা চাই’। ‘আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করিব এবং সৎকর্মপরায়ণ লোকদের প্রতি আমার দান বৃদ্ধি করিব।’
فَبَدَّلَ الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا قَوۡلاً غَيۡرَ الَّذِىۡ قِيۡلَ لَهُمۡ فَاَنۡزَلۡنَا عَلَى الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا كَانُوۡا يَفۡسُقُوۡنَ﴿۵۹﴾
২-৫৯ : কিন্তু যাহারা অন্যায় করিয়াছিল তাহারা তাহাদেরকে যাহা বলা হইয়াছিল তাহার পরিবর্তে অন্য কথা বলিল। সুতরাং অনাচারীদের প্রতি আমি আকাশ হইতে শাস্তি প্রেরণ করিলাম, কারণ তাহারা সত্য ত্যাগ করিয়াছিল।
وَاِذِ اسۡتَسۡقٰى مُوۡسٰى لِقَوۡمِهٖ فَقُلۡنَا اضۡرِب بِّعَصَاكَ الۡحَجَرَؕ فَانۡفَجَرَتۡ مِنۡهُ اثۡنَتَا عَشۡرَةَ عَيۡنًاؕ قَدۡ عَلِمَ کُلُّ اُنَاسٍ مَّشۡرَبَهُمۡؕ کُلُوۡا وَاشۡرَبُوۡا مِنۡ رِّزۡقِ اللّٰهِ وَلَا تَعۡثَوۡا فِىۡ الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِيۡنَ ﴿۶۰﴾
২-৬০ : স্মরণ কর, যখন মূসা তাহার সম্প্রদায়ের জন্য পানি প্রার্থনা করিল, আমি বলিলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর।’ ফলে উহা হইতে দ্বাদশ প্রস্রবণ প্রবাহিত হইল। প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ পান - স্থান চিনিয়া লইল। বলিলাম, আল্লাহ্ - প্রদত্ত জীবিকা হইতে তোমরা পানাহার কর এবং দুষ্কৃতিকারীরূপে পৃথিবীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করিয়া বেড়াইও না।
وَاِذۡ قُلۡتُمۡ يٰمُوۡسٰى لَنۡ نَّصۡبِرَ عَلٰى طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادۡعُ لَنَا رَبَّكَ يُخۡرِجۡ لَنَا مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ مِنۡۢ بَقۡلِهَا وَقِثَّـآٮِٕهَا وَفُوۡمِهَا وَعَدَسِهَا وَ بَصَلِهَاؕ قَالَ اَتَسۡتَبۡدِلُوۡنَ الَّذِىۡ هُوَ اَدۡنٰى بِالَّذِىۡ هُوَ خَيۡرٌؕ اِهۡبِطُوۡا مِصۡرًا فَاِنَّ لَـکُمۡ مَّا سَاَلۡتُمۡؕ وَضُرِبَتۡ عَلَيۡهِمُ الذِّلَّةُ وَالۡمَسۡکَنَةُ وَبَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰهِؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمۡ كَانُوۡا يَكۡفُرُوۡنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ وَيَقۡتُلُوۡنَ النَّبِيّٖنَ بِغَيۡرِ الۡحَـقِّؕ ذٰلِكَ بِمَا عَصَوا وَّڪَانُوۡا يَعۡتَدُوۡنَ﴿۶۱﴾
২-৬১ : যখন তোমরা বলিয়াছিলে, ‘হে মূসা! আমরা একইরকম খাদ্যে কখনও ধৈর্য ধারণ করিব না; সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট আমাদের জন্য প্রার্থনা কর - তিনি যেন ভূমিজাত দ্রব্য শাক - সব্জি, কাঁকুড়, গম, মসুর ও পেঁয়াজ আমাদের জন্য উৎপাদন করেন।’ মূসা বলিল, ‘তোমরা কি উৎকৃষ্টতর বস্তুকে নিকৃষ্টতর বস্তুর সঙ্গে বদল করিতে চাও? তবে কোন নগরে অবতরণ কর। তোমরা যাহা চাও নিশ্চয়ই তাহা সেখানে আছে।’ তাহারা লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যগ্রস্ত হইল এবং তাহারা আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হইল। ইহা এইজন্য যে, তাহারা আল্লাহ্র আয়াতকে অস্বীকার করিত এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করিত। অবাধ্যতা ও সীমালংঘন করিবার জন্যই তাহাদের এই পরিণতি হইয়াছিল।
اِنَّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَالَّذِيۡنَ هَادُوۡا وَالنَّصٰرٰى وَالصّٰبِـِٕـيۡنَ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَعَمِلَ صَالِحًـا فَلَهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡۚ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَ﴿۶۲﴾
২-৬২ : নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনিয়াছে, যাহারা ইয়াহূদী হইয়াছে এবং খ্রিস্টান ও সাবিঈন - যাহারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাহাদের জন্য পুরস্কার আছে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।
وَاِذۡ اَخَذۡنَا مِيۡثَاقَكُمۡ وَرَفَعۡنَا فَوۡقَكُمُ الطُّوۡرَؕ خُذُوۡا مَآ اٰتَيۡنٰكُمۡ بِقُوَّةٍ وَّ اذۡكُرُوۡا مَا فِيۡهِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَ﴿۶۳﴾
২-৬৩ : স্মরণ কর, যখন তোমাদের অঙ্গীকার নিয়াছিলাম এবং ‘আত্ তূর’কে তোমাদের ঊর্ধ্বে উত্তোলন করিয়াছিলাম; বলিয়াছিলাম, ‘আমি যাহা দিলাম দৃঢ়তার সঙ্গে গ্রহণ কর এবং তাহাতে যাহা আছে তাহা স্মরণ রাখ, যাহাতে তোমরা সাবধান হইয়া চলিতে পার।’
ثُمَّ تَوَلَّيۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَۚ فَلَوۡلَا فَضۡلُ اللّٰهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهٗ لَـكُنۡتُمۡ مِّنَ الۡخٰسِرِيۡنَ﴿۶۴﴾
২-৬৪ : ইহার পরেও তোমরা মুখ ফিরাইলে। আল্লাহ্র অনুগ্রহ এবং অনুকম্পা তোমাদের প্রতি না থাকিলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইতে।
وَلَقَدۡ عَلِمۡتُمُ الَّذِيۡنَ اعۡتَدَوۡا مِنۡكُمۡ فِىۡ السَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَهُمۡ كُوۡنُوۡا قِرَدَةً خَاسِـِٔـيۡنَ ۚ﴿۶۵﴾
২-৬৫ : তোমাদের মধ্যে যাহারা শনিবার সম্পর্কে সীমালংঘন করিয়াছিল তাহাদেরকে তোমরা নিশ্চিতভাবে জান। আমি তাহাদের বলিয়াছিলাম, ‘তোমরা ঘৃণিত বানর হও।’
فَجَعَلۡنٰهَا نَكٰلاً لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهَا وَمَا خَلۡفَهَا وَمَوۡعِظَةً لِّلۡمُتَّقِيۡنَ﴿۶۶﴾
২-৬৬ : আমি ইহা তাহাদের সমসাময়িক ও পরবর্তিগণের শিক্ষা গ্রহণের জন্য দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশস্বরূপ করিয়াছি।
وَاِذۡ قَالَ مُوۡسٰى لِقَوۡمِهٖۤ اِنَّ اللّٰهَ يَاۡمُرُكُمۡ اَنۡ تَذۡبَحُوۡا بَقَرَةً ؕ قَالُوۡآ اَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا ؕ قَالَ اَعُوۡذُ بِاللّٰهِ اَنۡ اَكُوۡنَ مِنَ الۡجٰـهِلِيۡنَ ﴿۶۷﴾
২-৬৭ : স্মরণ কর, যখন মূসা আপন সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদেরকে একটি গরু যবেহ করার আদেশ দিয়াছেন’, তাহারা বলিয়াছিল, ‘তুমি কি আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করিতেছ?’ মূসা বলিল, ‘আল্লাহ্র শরণ লইতেছি যাহাতে আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত না হই।
قَالُوا ادۡعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّنۡ لَّنَا مَا هِىَؕ قَالَ اِنَّهٗ يَقُوۡلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ لَّا فَارِضٌ وَّلَا بِكۡرٌؕ عَوَانٌۢ بَيۡنَ ذٰلِكَؕ فَافۡعَلُوۡا مَا تُؤۡمَرُوۡنَ ﴿۶۸﴾
২-৬৮ : তাহারা বলিল, ‘আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালককে স্পষ্টভাবে জানাইয়া দিতে বল, উহা কিরূপ?’ মূসা বলিল, আল্লাহ্ বলিতেছেন, উহা এমন গরু যাহা বৃদ্ধও নয়, অল্পবয়স্কও নয় - মধ্যবয়সী। সুতরাং তোমরা যাহা আদিষ্ট হইয়াছ তাহা কর।’
قَالُوا ادۡعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّنۡ لَّنَا مَا لَوۡنُهَا ؕ قَالَ اِنَّهٗ يَقُوۡلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ صَفۡرَآءُۙ فَاقِعٌ لَّوۡنُهَا تَسُرُّ النّٰظِرِيۡنَ ﴿۶۹﴾
২-৬৯ : তাহারা বলিল, ‘আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালককে স্পষ্টভাবে জানাইয়া দিতে বল, উহার রং কি?’ মূসা বলিল, ‘আল্লাহ্ বলিতেছেন, উহা হলুদ বর্ণের গরু, উহার রং উজ্জ্বল গাঢ়, যাহা দর্শকদের আনন্দ দেয়।’
قَالُوا ادۡعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّنۡ لَّنَا مَا هِىَۙ اِنَّ الۡبَقَرَ تَشٰبَهَ عَلَيۡنَا ؕ وَاِنَّـآ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ لَمُهۡتَدُوۡنَ ﴿۷۰﴾
২-৭০ : তাহারা বলিল, ‘আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালককে স্পষ্টভাবে জানাইয়া দিতে বল, উহা কোনটি? আমরা গরুটি সম্পর্কে সন্দেহে পতিত হইয়াছি এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে নিশ্চয় আমরা দিশা পাইব।’
قَالَ اِنَّهٗ يَقُوۡلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ لَّا ذَلُوۡلٌ تُثِيۡرُ الۡاَرۡضَ وَلَا تَسۡقِى الۡحَـرۡثَ ۚ مُسَلَّمَةٌ لَّا شِيَةَ فِيۡهَا ؕ قَالُوا الۡــٴٰــنَ جِئۡتَ بِالۡحَـقِّؕ فَذَبَحُوۡهَا وَمَا كَادُوۡا يَفۡعَلُوۡنَ ﴿۷۱﴾
২-৭১ : মূসা বলিল, ‘তিনি বলিতেছেন, উহা এমন এক গরু যাহা জমি চাষে ও ক্ষেতে পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই - সুস্থ নিখুঁত।’ তাহারা বলিল, ‘এখন তুমি সত্য আনিয়াছ।’ যদিও তাহারা যবেহ করিতে উদ্যত ছিল না, তবুও তাহারা উহাকে যবেহ করিল।
وَ اِذۡ قَتَلۡتُمۡ نَفۡسًا فَادّٰرَءۡتُمۡ فِيۡهَا ؕ وَاللّٰهُ مُخۡرِجٌ مَّا كُنۡتُمۡ تَكۡتُمُوۡنَۚ ﴿۷۲﴾
২-৭২ : স্মরণ কর, যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করিয়াছিলে এবং একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করিতেছিলে - তোমরা যাহা গোপন রাখিতেছিলে আল্লাহ্ তাহা ব্যক্ত করিতেছেন।
فَقُلۡنَا اضۡرِبُوۡهُ بِبَعۡضِهَا ؕ كَذٰلِكَ يُحۡىِ اللّٰهُ الۡمَوۡتٰى ۙ وَيُرِيۡکُمۡ اٰيٰتِهٖ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۷۳﴾
২-৭৩ : আমি বলিলাম, ‘ইহার কোন অংশ দ্বারা উহাকে আঘাত কর।’ এইভাবে আল্লাহ্ মৃতকে জীবিত করেন এবং তাঁহার নিদর্শন তোমাদেরকে দেখাইয়া থাকেন, যাহাতে তোমরা অনুধাবন করিতে পার।
ثُمَّ قَسَتۡ قُلُوۡبُكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَ فَهِىَ كَالۡحِجَارَةِ اَوۡ اَشَدُّ قَسۡوَةً ؕ وَاِنَّ مِنَ الۡحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنۡهُ الۡاَنۡهٰرُؕ وَاِنَّ مِنۡهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخۡرُجُ مِنۡهُ الۡمَآءُؕ وَاِنَّ مِنۡهَا لَمَا يَهۡبِطُ مِنۡ خَشۡيَةِ اللّٰهِؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۷۴﴾
২-৭৪ : ইহার পরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হইয়া গেল, উহা পাষাণ কিংবা তদপেক্ষা কঠিন। কিছু পাথরও এমন যে, উহা হইতে নদী - নালা প্রবাহিত হয় এবং কিছু এইরূপ যে, বিদীর্ণ হওয়ার পর উহা হইতে পানি নির্গত হয়, আবার কিছু এমন যাহা আল্লাহ্র ভয়ে ধসিয়া পড়ে। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অনবহিত নন।
اَفَتَطۡمَعُوۡنَ اَنۡ يُّؤۡمِنُوۡا لَـكُمۡ وَقَدۡ كَانَ فَرِيۡقٌ مِّنۡهُمۡ يَسۡمَعُوۡنَ کَلَامَ اللّٰهِ ثُمَّ يُحَرِّفُوۡنَهٗ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا عَقَلُوۡهُ وَهُمۡ يَعۡلَمُوۡنَ﴿۷۵﴾
২-৭৫ : তোমরা কি এই আশা কর যে, তাহারা তোমাদের কথায় ঈমান আনিবে - যখন তাহাদের একদল আল্লাহ্র বাণী শ্রবণ করে ; অতঃপর তাহারা উহা হৃদয়ঙ্গম করার পরও বিকৃত করে, অথচ তাহারা জানে।
وَاِذَا لَـقُوۡا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا قَالُوۡآ اٰمَنَّا ۖۚ وَاِذَا خَلَا بَعۡضُهُمۡ اِلٰى بَعۡضٍ قَالُوۡآ اَ تُحَدِّثُوۡنَهُمۡ بِمَا فَتَحَ اللّٰهُ عَلَيۡكُمۡ لِيُحَآجُّوۡكُمۡ بِهٖ عِنۡدَ رَبِّكُمۡؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۷۶﴾
২-৭৬ : তাহারা যখন মু’মিনদের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান আনিয়াছি’, আবার যখন তাহারা নিভৃতে একে অন্যের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলে, ‘আল্লাহ্ তোমাদের কাছে যাহা ব্যক্ত করিয়াছেন তোমরা কি তাহা তাহাদেরকে বলিয়া দাও ? ইহা দ্বারা তাহারা তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে তোমাদের বিরুদ্ধে যুক্তি পেশ করিবে; তোমরা কি অনুধাবন কর না?’
اَوَلَا يَعۡلَمُوۡنَ اَنَّ اللّٰهَ يَعۡلَمُ مَا يُسِرُّوۡنَ وَمَا يُعۡلِنُوۡنَ﴿۷۷﴾
২-৭৭ : তাহারা কি জানে না যে, যাহা তাহারা গোপন রাখে কিংবা ঘোষণা করে নিশ্চিতভাবে আল্লাহ্ তাহা জানেন?
وَ مِنۡهُمۡ اُمِّيُّوۡنَ لَا يَعۡلَمُوۡنَ الۡكِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِىَّ وَاِنۡ هُمۡ اِلَّا يَظُنُّوۡنَ﴿۷۸﴾
২-৭৮ : তাহাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই, তাহারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।
فَوَيۡلٌ لِّلَّذِيۡنَ يَكۡتُبُوۡنَ الۡكِتٰبَ بِاَيۡدِيۡهِمۡ ثُمَّ يَقُوۡلُوۡنَ هٰذَا مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ لِيَشۡتَرُوۡا بِهٖ ثَمَنًا قَلِيۡلًا ؕ فَوَيۡلٌ لَّهُمۡ مِّمَّا کَتَبَتۡ اَيۡدِيۡهِمۡ وَوَيۡلٌ لَّهُمۡ مِّمَّا يَكۡسِبُوۡنَ ﴿۷۹﴾
২-৭৯ : সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, ‘ইহা আল্লাহ্র নিকট হইতে।’ তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের।
وَقَالُوۡا لَنۡ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَيَّامًا مَّعۡدُوۡدَةً ؕ قُلۡ اَتَّخَذۡتُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ عَهۡدًا فَلَنۡ يُّخۡلِفَ اللّٰهُ عَهۡدَهٗۤ اَمۡ تَقُوۡلُوۡنَ عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۰﴾
২-৮০ : তাহারা বলে, ‘দিনকতক ব্যতীত অগ্নি আমাদেরকে কখনও স্পর্শ করিবে না।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্র নিকট হইতে অঙ্গীকার নিয়াছ; অতএব আল্লাহ্ তাঁহার অঙ্গীকার কখনও ভঙ্গ করিবেন না কিংবা আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলিতেছ যাহা তোমরা জান না ?’
بَلٰى مَنۡ كَسَبَ سَيِّئَةً وَّاَحَاطَتۡ بِهٖ خَطِيْۤـــَٔتُهٗ فَاُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۸۱﴾
২-৮১ : হাঁ, যাহারা পাপকাজ করে এবং যাহাদের পাপরাশি তাহাদেরকে পরিবেষ্টন করে তাহারাই দোজখবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ الۡجَـنَّةِ ۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۸۲﴾
২-৮২ : আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহারাই জান্নাতবাসী, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে।
وَاِذۡ اَخَذۡنَا مِيۡثَاقَ بَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ لَا تَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا اللّٰهَ وَبِالۡوَالِدَيۡنِ اِحۡسَانًا وَّذِى الۡقُرۡبٰى وَالۡيَتٰمٰى وَالۡمَسٰکِيۡنِ وَقُوۡلُوۡا لِلنَّاسِ حُسۡنًا وَّاَقِيۡمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَ ؕ ثُمَّ تَوَلَّيۡتُمۡ اِلَّا قَلِيۡلًا مِّنۡکُمۡ وَاَنۡـتُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ ﴿۸۳﴾
২-৮৩ : স্মরণ কর, যখন বনী ইস্রাঈলের অঙ্গীকার নিয়াছিলাম, তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাহারও ‘ইবাদত করিবে না, মাতাপিতা, আত্মীয় - স্বজন, পিতৃহীন ও দরিদ্রদের প্রতি সদয় ব্যবহার করিবে এবং মানুষের সঙ্গে সদালাপ করিবে, সালাত কায়েম করিবে ও যাকাত দিবে, কিন্তু স্বল্পসংখ্যক লোক ব্যতীত তোমরা বিরুদ্ধভাবাপন্ন হইয়া মুখ ফিরাইয়া নিয়াছিলে।
وَاِذۡ اَخَذۡنَا مِيۡثَاقَكُمۡ لَا تَسۡفِكُوۡنَ دِمَآءَكُمۡ وَلَا تُخۡرِجُوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ مِّنۡ دِيَارِكُمۡ ثُمَّ اَقۡرَرۡتُمۡ وَاَنۡـتُمۡ تَشۡهَدُوۡنَ ﴿۸۴﴾
২-৮৪ : - যখন তোমাদের অঙ্গীকার নিয়াছিলাম যে, তোমরা পরস্পরের রক্তপাত করিবে না এবং আপনজনকে স্বদেশ হইতে বহিষ্কার করিবে না, অতঃপর তোমরা ইহা স্বীকার করিয়াছিলে, আর এই বিষয়ে তোমরাই সাক্ষী।
ثُمَّ اَنۡـتُمۡ هٰٓؤُلَاۤءِ تَقۡتُلُوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ وَتُخۡرِجُوۡنَ فَرِيۡقًا مِّنۡكُمۡ مِّنۡ دِيَارِهِمۡ تَظٰهَرُوۡنَ عَلَيۡهِمۡ بِالۡاِثۡمِ وَالۡعُدۡوَانِؕ وَاِنۡ يَّاۡتُوۡكُمۡ اُسٰرٰى تُفٰدُوۡهُمۡ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيۡڪُمۡ اِخۡرَاجُهُمۡؕ اَفَتُؤۡمِنُوۡنَ بِبَعۡضِ الۡكِتٰبِ وَتَكۡفُرُوۡنَ بِبَعۡضٍۚ فَمَا جَزَآءُ مَنۡ يَّفۡعَلُ ذٰلِكَ مِنۡکُمۡ اِلَّا خِزۡىٌ فِى الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا ۚ وَيَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ يُرَدُّوۡنَ اِلٰٓى اَشَدِّ الۡعَذَابِؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۵﴾
২-৮৫ : তোমরাই তাহারা যাহারা অতঃপর একে অন্যকে হত্যা করিতেছ এবং তোমাদের এক দলকে স্বদেশ হইতে বহিষ্কার করিতেছ, তোমরা নিজেরা তাহাদের বিরুদ্ধে অন্যায় ও সীমালংঘন দ্বারা পরস্পরের পৃষ্ঠপোষকতা করিতেছ এবং তাহারা যখন বন্দীরূপে তোমাদের নিকট উপস্থিত হয় তখন তোমরা মুক্তিপণ দাও ; অথচ তাহাদের বহিষ্করণই তোমাদের জন্য অবৈধ ছিল। তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশকে প্রত্যাখ্যান কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাহারা এরূপ করে তাহাদের একমাত্র প্রতিফল পার্থিব জীবনে হীনতা এবং কিয়ামতের দিন তাহারা কঠিনতম শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হইবে। তাহারা যাহা করে আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অনবহিত নন।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ اشۡتَرَوُا الۡحَيٰوةَ الدُّنۡيَا بِالۡاٰخِرَةِ فَلَا يُخَفَّفُ عَنۡهُمُ الۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ يُنۡصَرُوۡنَ﴿۸۶﴾
২-৮৬ : তাহারাই আখিরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করে; সুতরাং তাহাদের শাস্তি লাঘব করা হইবে না এবং তাহারা কোন সাহায্যপ্রাপ্ত হইবে না।
وَ لَقَدۡ اٰتَيۡنَا مُوۡسَى الۡكِتٰبَ وَقَفَّيۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِهٖ بِالرُّسُلِ وَاٰتَيۡنَا عِيۡسَى ابۡنَ مَرۡيَمَ الۡبَيِّنٰتِ وَاَيَّدۡنٰهُ بِرُوۡحِ الۡقُدُسِؕ اَفَكُلَّمَا جَآءَكُمۡ رَسُوۡلٌۢ بِمَا لَا تَهۡوٰٓى اَنۡفُسُكُمُ اسۡتَكۡبَرۡتُمۡۚ فَفَرِيۡقًا كَذَّبۡتُمۡ وَفَرِيۡقًا تَقۡتُلُوۡنَ﴿۸۷﴾
২-৮৭ : এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে কিতাব দিয়াছি এবং তাহার পরে পর্যায়ক্রমে রাসূলগণকে প্রেরণ করিয়াছি, মার্ইয়াম - তনয় ‘ঈসাকে স্পষ্ট প্রমাণ দিয়াছি এবং ‘পবিত্র আত্মা’ দ্বারা তাহাকে শক্তিশালী করিয়াছি। তবে কি যখনই কোন রাসূল তোমাদের নিকট এমন কিছু আনিয়াছে যাহা তোমাদের মনঃপূত নয় তখনই তোমরা অহংকার করিয়াছ আর কতককে অস্বীকার করিয়াছ এবং কতককে হত্যা করিয়াছ?
وَقَالُوۡا قُلُوۡبُنَا غُلۡفٌؕ بَل لَّعَنَهُمُ اللّٰهُ بِكُفۡرِهِمۡ فَقَلِيۡلًا مَّا يُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۸۸﴾
২-৮৮ : তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত’, বরং কুফরীর জন্য আল্লাহ্ তাহাদেরকে লা‘নত করিয়াছেন। সুতরাং তাহাদের অল্পসংখ্যকই ঈমান আনে।
وَلَمَّا جَآءَهُمۡ كِتٰبٌ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمۡۙ وَكَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ يَسۡتَفۡتِحُوۡنَ عَلَى الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا ۖۚ فَلَمَّا جَآءَهُمۡ مَّا عَرَفُوۡا کَفَرُوۡا بِهٖ فَلَعۡنَةُ اللّٰهِ عَلَى الۡكٰفِرِيۡنَ ﴿۸۹﴾
২-৮৯ : তাহাদের নিকট যাহা আছে আল্লাহ্র নিকট হইতে যখন তাহার প্রত্যায়নকারী কিতাব আসিল; যদিও পূর্বে সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের বিরুদ্ধে তাহারা ইহার সাহায্যে বিজয় প্রার্থনা করিত, তবুও তাহারা যাহা জ্ঞাত ছিল উহা যখন তাহাদের নিকট আসিল তখন তাহারা উহা প্রত্যাখ্যান করিল। সুতরাং কাফিরদের প্রতি আল্লাহ্র লা’নত।
بِئۡسَمَا اشۡتَرَوۡا بِهٖۤ اَنۡفُسَهُمۡ اَنۡ يَّڪۡفُرُوۡا بِمَآ اَنۡزَلَ اللّٰهُ بَغۡيًا اَنۡ يُّنَزِّلَ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖ عَلٰى مَنۡ يَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖۚ فَبَآءُوۡ بِغَضَبٍ عَلٰى غَضَبٍؕ وَلِلۡكٰفِرِيۡنَ عَذَابٌ مُّهِيۡنٌ﴿۹۰﴾
২-৯০ : উহা কত নিকৃষ্ট যাহার বিনিময়ে তাহারা তাহাদের আত্নাকে বিক্রয় করিয়াছে - উহা এই যে, আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন, জিদের বশবর্তী হইয়া তাহারা তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিত শুধু এই কারণে যে, আল্লাহ্ তাঁহার বান্দাদের মধ্য হইতে যাহাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। সুতরাং তাহারা ক্রোধের উপর ক্রোধের পাত্র হইল। কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রহিয়াছে।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمۡ اٰمِنُوۡا بِمَآ اَنۡزَلَ اللّٰهُ قَالُوۡا نُؤۡمِنُ بِمَآ اُنۡزِلَ عَلَيۡنَا وَيَكۡفُرُوۡنَ بِمَا وَرَآءَهٗ وَهُوَ الۡحَـقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَهُمۡؕ قُلۡ فَلِمَ تَقۡتُلُوۡنَ اَنۡـــۢبِيَآءَ اللّٰهِ مِنۡ قَبۡلُ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ ﴿۹۱﴾
২-৯১ : এবং যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহাতে ঈমান আনয়ন কর’, তাহারা বলে, ‘আমাদের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে আমরা তাহাতে বিশ্বাস করি।’ অথচ তাহা ব্যতীত সব কিছুই তাহারা প্রত্যাখ্যান করে, যদিও উহা সত্য এবং যাহা তাহাদের নিকট আছে তাহার প্রত্যায়নকারী। বল, ‘যদি তোমরা মু’মিন হইতে তবে কেন তোমরা অতীতে আল্লাহ্র নবীগণকে হত্যা করিয়াছিলে?’
وَلَقَدۡ جَآءَکُمۡ مُّوۡسٰى بِالۡبَيِّنٰتِ ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ وَاَنۡـتُمۡ ظٰلِمُوۡنَ ﴿۹۲﴾
২-৯২ : এবং নিশ্চয় মূসা তোমাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণসহ আসিয়াছে, তাহার পরে তোমরা গো - বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করিয়াছিলে। আর তোমরা তো জালিম।
وَاِذۡ اَخَذۡنَا مِيۡثَاقَكُمۡ وَرَفَعۡنَا فَوۡقَکُمُ الطُّوۡرَ ؕ خُذُوۡا مَآ اٰتَيۡنٰکُمۡ بِقُوَّةٍ وَّاسۡمَعُوۡا ؕ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَعَصَيۡنَا وَاُشۡرِبُوۡا فِىۡ قُلُوۡبِهِمُ الۡعِجۡلَ بِکُفۡرِهِمۡ ؕ قُلۡ بِئۡسَمَا يَاۡمُرُکُمۡ بِهٖۤ اِيۡمَانُكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ ﴿۹۳﴾
২-৯৩ : স্মরণ কর, যখন তোমাদের অঙ্গীকার নিয়াছিলাম এবং আত্ তূরকে তোমাদের ঊর্ধ্বে উত্তোলন করিয়াছিলাম, বলিয়াছিলাম, ‘যাহা দিলাম দৃঢ়রূপে গ্রহণ কর এবং শ্রবণ কর।’ তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমরা শ্রবণ করিলাম ও অমান্য করিলাম। কুফরী হেতু তাহাদের হৃদয়ে গো - বৎসপ্রীতি সিঞ্চিত হইয়াছিল। বল, ‘যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে তোমাদের ঈমান যাহার নির্দেশ দেয় উহা কত নিকৃষ্ট।’
قُلۡ اِنۡ كَانَتۡ لَـکُمُ الدَّارُ الۡاٰخِرَةُ عِنۡدَ اللّٰهِ خَالِصَةً مِّنۡ دُوۡنِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ﴿۹۴﴾
২-৯৪ : বল, ‘যদি আল্লাহ্র নিকট আখিরাতের বাসস্থান অন্য লোক ব্যতীত বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যই হয় তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর - যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
وَ لَنۡ يَّتَمَنَّوۡهُ اَبَدًاۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَيۡدِيۡهِمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌۢ بِالظّٰلِمِيۡنَ﴿۹۵﴾
২-৯৫ : কিন্তু তাহাদের কৃতকর্মের জন্য তাহারা কখনও উহা কামনা করিবে না এবং আল্লাহ্ জালিমদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত।
وَلَتَجِدَنَّهُمۡ اَحۡرَصَ النَّاسِ عَلٰى حَيٰوةٍ ۛۚ وَ مِنَ الَّذِيۡنَ اَشۡرَكُوۡا ۛۚ يَوَدُّ اَحَدُهُمۡ لَوۡ يُعَمَّرُ اَ لۡفَ سَنَةٍ ۚ وَمَا هُوَ بِمُزَحۡزِحِهٖ مِنَ الۡعَذَابِ اَنۡ يُّعَمَّرَؕ وَاللّٰهُ بَصِيۡرٌۢ بِمَا يَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۶﴾
২-৯৬ : তুমি নিশ্চয় তাহাদেরকে জীবনের প্রতি সমস্ত মানুষ, এমন কি মুশরিক অপেক্ষাও অধিক লোভী দেখিতে পাইবে। তাহাদের প্রত্যেকে আকাঙ্খা করে যদি সহস্র বৎসর আয়ু দেওয়া হইত; কিন্তু দীর্ঘায়ু তাহাকে শাস্তি হইতে দূরে রাখিতে পারিবে না। তাহারা যাহা করে আল্লাহ্ উহার দ্রষ্টা।
قُلۡ مَنۡ كَانَ عَدُوًّا لِّجِبۡرِيۡلَ فَاِنَّهٗ نَزَّلَهٗ عَلٰى قَلۡبِكَ بِاِذۡنِ اللّٰهِ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ وَهُدًى وَّبُشۡرٰى لِلۡمُؤۡمِنِيۡنَ﴿۹۷﴾
২-৯৭ : বল, ‘যে কেহ জিব্রীলের শত্রু এইজন্য যে, সে আল্লাহ্র নির্দেশে তোমার হৃদয়ে কুরআন পৌঁছাইয়া দিয়াছে, যাহা উহার পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক এবং যাহা মু’মিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও শুভ সংবাদ’ -
مَنۡ كَانَ عَدُوًّا لِّلّٰهِ وَمَلٰٓٮِٕکَتِهٖ وَ رُسُلِهٖ وَجِبۡرِيۡلَ وَمِيۡكٰٮلَ فَاِنَّ اللّٰهَ عَدُوٌّ لِّلۡكٰفِرِيۡنَ﴿۹۸﴾
২-৯৮ : ‘যে কেহ আল্লাহ্র, তাঁহার ফিরিশতাগণের, তাঁহার রাসূলগণের এবং জিব্রীল ও মীকাঈলের শত্রু সে জানিয়া রাখুক, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই কাফিরদের শত্রু।’
وَلَقَدۡ اَنۡزَلۡنَآ اِلَيۡكَ اٰيٰتٍۢ بَيِّنٰتٍۚ وَمَا يَكۡفُرُ بِهَآ اِلَّا الۡفٰسِقُوۡنَ﴿۹۹﴾
২-৯৯ : এবং নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি স্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করিয়াছি। ফাসিকরা ব্যতীত অন্য কেহ তাহা প্রত্যাখ্যান করে না।
اَوَکُلَّمَا عٰهَدُوۡا عَهۡدًا نَّبَذَهٗ فَرِيۡقٌ مِّنۡهُمۡؕ بَلۡ اَكۡثَرُهُمۡ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ﴿۱۰۰﴾
২-১০০ : তবে কি যখনই তাহারা অঙ্গীকারাবদ্ধ হইয়াছে তখনই তাহাদের কোন একদল তাহা ভঙ্গ করিয়াছে? বরং তাহাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।
وَلَمَّا جَآءَهُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمۡ نَبَذَ فَرِيۡقٌ مِّنَ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوا الۡكِتٰبَۙ کِتٰبَ اللّٰهِ وَرَآءَ ظُهُوۡرِهِمۡ كَاَنَّهُمۡ لَا يَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾
২-১০১ : যখন আল্লাহ্র পক্ষ হইতে তাহাদের নিকট রাসূল আসিল, যে তাহাদের নিকট যাহা রহিয়াছে উহার প্রত্যায়নকারী, তখন যাহাদেরকে কিতাব দেওয়া হইয়াছিল তাহাদের একদল আল্লাহ্র কিতাবটিকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করিল, যেন তাহারা জানে না।
وَاتَّبَعُوۡا مَا تَتۡلُوا الشَّيٰطِيۡنُ عَلٰى مُلۡكِ سُلَيۡمٰنَۚ وَمَا کَفَرَ سُلَيۡمٰنُ وَلٰـكِنَّ الشَّيٰـطِيۡنَ كَفَرُوۡا يُعَلِّمُوۡنَ النَّاسَ السِّحۡرَ وَمَآ اُنۡزِلَ عَلَى الۡمَلَـکَيۡنِ بِبَابِلَ هَارُوۡتَ وَمَارُوۡتَؕ وَمَا يُعَلِّمٰنِ مِنۡ اَحَدٍ حَتّٰى يَقُوۡلَاۤ اِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٌ فَلَا تَكۡفُرۡؕ فَيَتَعَلَّمُوۡنَ مِنۡهُمَا مَا يُفَرِّقُوۡنَ بِهٖ بَيۡنَ الۡمَرۡءِ وَ زَوۡجِهٖؕ وَمَا هُمۡ بِضَآرِّيۡنَ بِهٖ مِنۡ اَحَدٍ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰهِؕ وَيَتَعَلَّمُوۡنَ مَا يَضُرُّهُمۡ وَلَا يَنۡفَعُهُمۡؕ وَلَقَدۡ عَلِمُوۡا لَمَنِ اشۡتَرٰٮهُ مَا لَهٗ فِى الۡاٰخِرَةِ مِنۡ خَلَاقٍؕ وَلَبِئۡسَ مَا شَرَوۡا بِهٖۤ اَنۡفُسَهُمۡؕ لَوۡ کَانُوۡا يَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾
২-১০২ : এবং সুলায়মানের রাজত্বে শয়তানরা যাহা আবৃত্তি করিত তাহারা তাহা অনুসরণ করিত। সুলায়মান কুফরী করে নাই, বরং শয়তানরাই কুফরী করিয়াছিল। তাহারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত এবং যাহা বাবিল শহরে হারূত ও মারূত ফিরিশ্তাদ্বয়ের উপর অবতীর্ণ হইয়াছিল। তাহারা কাহাকেও শিক্ষা দিত না এই কথা না বলিয়া যে, ‘আমরা পরীক্ষাস্বরূপ; সুতরাং তুমি কুফরী করিও না।’ তাহারা উভয়ের নিকট হইতে স্বামী - স্ত্রীর মধ্যে যাহা বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে তাহা শিক্ষা করিত, অথচ আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতীত তাহারা কাহারও কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারিত না। তাহারা যাহা শিক্ষা করিত তাহা তাহাদের ক্ষতি সাধন করিত এবং কোন উপকারে আসিত না; আর তাহারা নিশ্চিতভাবে জানিত যে, যে কেহ উহা ক্রয় করে পরকালে তাহার কোন অংশ নাই। উহা কত নিকৃষ্ট, যাহার বিনিময়ে তাহারা স্বীয় আত্মাকে বিক্রয় করিয়াছে, যদি তাহারা জানিত!
وَلَوۡ اَنَّهُمۡ اٰمَنُوۡا وَاتَّقَوۡا لَمَثُوۡبَةٌ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ خَيۡرٌ ؕ لَوۡ كَانُوۡا يَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۰۳﴾
২-১০৩ : যদি তাহারা ঈমান আনয়ন করিত ও মুত্তাকী হইত, তবে নিশ্চিতভাবে তাহাদের প্রতিফল আল্লাহ্র নিকট অধিক কল্যাণকর হইত, যদি তাহারা জানিত!
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقُوۡلُوۡا رَاعِنَا وَ قُوۡلُوا انۡظُرۡنَا وَاسۡمَعُوۡا ؕ وَلِلۡڪٰفِرِيۡنَ عَذَابٌ اَلِيۡمٌ ﴿۱۰۴﴾
২-১০৪ : হে মু’মিনগণ! ‘রাইনা’ বলিও না, বরং ‘উনজুরনা’ বলিও এবং শুনিয়া রাখ, কাফিরদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রহিয়াছে।
مَا يَوَدُّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ وَلَا الۡمُشۡرِكِيۡنَ اَنۡ يُّنَزَّلَ عَلَيۡڪُمۡ مِّنۡ خَيۡرٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡؕ وَاللّٰهُ يَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهٖ مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِيۡمِ ﴿۱۰۵﴾
২-১০৫ : কিতাবীদের মধ্যে যাহারা কুফরী করিয়াছে তাহারা এবং মুশরিকরা ইহা চাহে না যে, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হউক। অথচ আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা নিজ রহমতের জন্য বিশেষরূপে মনোনীত করেন এবং আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
مَا نَنۡسَخۡ مِنۡ اٰيَةٍ اَوۡ نُنۡسِهَا نَاۡتِ بِخَيۡرٍ مِّنۡهَآ اَوۡ مِثۡلِهَا ؕ اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۱۰۶﴾
২-১০৬ : আমি কোন আয়াত রহিত করিলে কিংবা বিস্মৃত হইতে দিলে তাহা হইতে উত্তম কিংবা তাহার সমতুল্য কোন আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ই সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰهَ لَهٗ مُلۡكُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِؕ وَمَا لَـکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيۡرٍ﴿۱۰۷﴾
২-১০৭ : তুমি কি জান না, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহ্রই? এবং আল্লাহ্ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবকও নাই, সাহায্যকারীও নাই।
اَمۡ تُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ تَسۡـَٔـلُوۡا رَسُوۡلَـكُمۡ كَمَا سُٮِٕلَ مُوۡسٰى مِنۡ قَبۡلُؕ وَمَنۡ يَّتَبَدَّلِ الۡکُفۡرَ بِالۡاِيۡمَانِ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِيۡلِ﴿۱۰۸﴾
২-১০৮ : তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে সেইরূপ প্রশ্ন করিতে চাও, যেইরূপ পূর্বে মূসাকে প্রশ্ন করা হইয়াছিল? এবং যে কেহ ঈমানের পরিবর্তে কুফরী গ্রহণ করে, নিশ্চিতভাবে সে সরল পথ হারায়।
وَدَّ کَثِيۡرٌ مِّنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ لَوۡ يَرُدُّوۡنَكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ اِيۡمَانِكُمۡ كُفَّارًا ۖۚ حَسَدًا مِّنۡ عِنۡدِ اَنۡفُسِهِمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الۡحَـقُّ ۚ فَاعۡفُوۡا وَاصۡفَحُوۡا حَتّٰى يَاۡتِىَ اللّٰهُ بِاَمۡرِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى کُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ﴿۱۰۹﴾
২-১০৯ : তাহাদের নিকট সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও, কিতাবীদের মধ্যে অনেকেই তোমাদের ঈমান আনিবার পর ঈর্ষামূলক মনোভাববশত আবার তোমাদেরকে কাফিররূপে ফিরিয়া পাওয়ার আকাঙ্খা করে। অতএব তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর, যতক্ষণ না আল্লাহ্ কোন নির্দেশ দেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
وَاَقِيۡمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَ ؕ وَمَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِكُمۡ مِّنۡ خَيۡرٍ تَجِدُوۡهُ عِنۡدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِيۡرٌ ﴿۱۱۰﴾
২-১১০ : তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও। তোমরা উত্তম কাজের যাহা কিছু নিজেদের জন্য পূর্বে প্রেরণ করিবে আল্লাহ্র নিকট তাহা পাইবে। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহার দ্রষ্টা।
وَقَالُوۡا لَنۡ يَّدۡخُلَ الۡجَـنَّةَ اِلَّا مَنۡ كَانَ هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰىؕ تِلۡكَ اَمَانِيُّهُمۡؕ قُلۡ هَاتُوۡا بُرۡهَانَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ﴿۱۱۱﴾
২-১১১ : এবং তাহারা বলে, ‘ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছাড়া অন্য কেহ কখনই জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।’ ইহা তাহাদের মিথ্যা আশা। বল, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর।’
بَلٰى مَنۡ اَسۡلَمَ وَجۡهَهٗ لِلّٰهِ وَهُوَ مُحۡسِنٌ فَلَهٗۤ اَجۡرُهٗ عِنۡدَ رَبِّهٖ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَ﴿۱۱۲﴾
২-১১২ : হাঁ, যে কেহ আল্লাহ্র নিকট সম্পূর্ণরূপে আত্মসর্মপণ করে এবং সৎকর্মপরায়ণ হয় তাহার ফল তাহার প্রতিপালকের নিকট রহিয়াছে এবং তাহাদের কোন ভয় নাই ও তাহারা দুঃখিত হইবে না।
وَقَالَتِ الۡيَهُوۡدُ لَـيۡسَتِ النَّصٰرٰى عَلٰى شَىۡءٍ وَّقَالَتِ النَّصٰرٰى لَـيۡسَتِ الۡيَهُوۡدُ عَلٰى شَىۡءٍۙ وَّهُمۡ يَتۡلُوۡنَ الۡكِتٰبَؕ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِيۡنَ لَا يَعۡلَمُوۡنَ مِثۡلَ قَوۡلِهِمۡۚ فَاللّٰهُ يَحۡكُمُ بَيۡنَهُمۡ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ فِيۡمَا كَانُوۡا فِيۡهِ يَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾
২-১১৩ : ইয়াহূদীরা বলে, ‘খ্রিস্টানদের কোন ভিত্তি নাই’ এবং খ্রিস্টানরা বলে, ‘ইয়াহূদীদের কোন ভিত্তি নাই’; অথচ তাহারা কিতাব পাঠ করে। এইভাবে যাহারা কিছুই জানে না তাহারাও অনুরূপ কথা বলে। সুতরাং যে বিষয়ে তাহারা মতভেদ করিত কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ উহার মীমাংসা করিবেন।
وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰهِ اَنۡ يُّذۡكَرَ فِيۡهَا اسۡمُهٗ وَسَعٰـى فِىۡ خَرَابِهَا ؕ اُولٰٓٮِٕكَ مَا كَانَ لَهُمۡ اَنۡ يَّدۡخُلُوۡهَآ اِلَّا خَآٮِٕفِيۡنَ ؕ لَهُمۡ فِى الدُّنۡيَا خِزۡىٌ وَّلَهُمۡ فِى الۡاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيۡمٌ﴿۱۱۴﴾
২-১১৪ : যে কেহ আল্লাহ্র মসজিদসমূহে তাঁহার নাম স্মরণ করিতে বাধা প্রদান করে এবং উহাদের বিনাশ সাধনে প্রয়াসী হয় তাহার অপেক্ষা বড় জালিম কে হইতে পারে? অথচ ভয় - বিহ্বল না হইয়া তাহাদের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা সংগত ছিল না। পৃথিবীতে তাহাদের জন্য লাঞ্ছনা ভোগ ও পরকালে তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে।
وَلِلّٰهِ الۡمَشۡرِقُ وَالۡمَغۡرِبُ فَاَيۡنَمَا تُوَلُّوۡا فَثَمَّ وَجۡهُ اللّٰهِؕ اِنَّ اللّٰهَ وَاسِعٌ عَلِيۡمٌ﴿۱۱۵﴾
২-১১৫ : পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই ; এবং যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন, সেদিকই আল্লাহ্র দিক। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।
وَقَالُوا اتَّخَذَ اللّٰهُ وَلَدًا ۙ سُبۡحٰنَهٗ ؕ بَل لَّهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِؕ كُلٌّ لَّهٗ قَانِتُوۡنَ ﴿۱۱۶﴾
২-১১৬ : এবং তাহারা বলে, ‘আল্লাহ্ সন্তান গ্রহণ করিয়াছেন।’ তিনি অতি পবিত্র। বরং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে সব আল্লাহ্রই। সব কিছু তাঁহারই একান্ত অনুগত।
بَدِيۡعُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِؕ وَ اِذَا قَضٰٓى اَمۡرًا فَاِنَّمَا يَقُوۡلُ لَهٗ كُنۡ فَيَكُوۡنُ﴿۱۱۷﴾
২-১১৭ : আল্লাহ্ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা এবং যখন তিনি কোন কিছু করিতে সিদ্ধান্ত করেন তখন উহার জন্য শুধু বলেন, ‘হও’, আর উহা হইয়া যায়।
وَقَالَ الَّذِيۡنَ لَا يَعۡلَمُوۡنَ لَوۡلَا يُكَلِّمُنَا اللّٰهُ اَوۡ تَاۡتِيۡنَآ اٰيَةٌ ؕ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ مِّثۡلَ قَوۡلِهِمۡؕ تَشَابَهَتۡ قُلُوۡبُهُمۡؕ قَدۡ بَيَّنَّا الۡاٰيٰتِ لِقَوۡمٍ يُّوۡقِنُوۡنَ ﴿۱۱۸﴾
২-১১৮ : এবং যাহারা কিছু জানে না তাহারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না কেন? কিংবা কোন নিদর্শন আমাদের নিকট আসে না কেন?’ এইভাবে তাহাদের পূর্ববর্তীরাও তাহাদের অনুরূপ কথা বলিত। তাহাদের অন্তর একই রকম। আমি দৃঢ় প্রত্যয়শীলদের জন্য নিদর্শনাবলী স্পষ্টভাবে বিবৃত করিয়াছি।
اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ بِالۡحَـقِّ بَشِيۡرًا وَّنَذِيۡرًا ۙ وَّلَا تُسۡـَٔـلُ عَنۡ اَصۡحٰبِ الۡجَحِيۡمِ ﴿۱۱۹﴾
২-১১৯ : আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করিয়াছি। জাহান্নামীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হইবে না।
وَلَنۡ تَرۡضٰى عَنۡكَ الۡيَهُوۡدُ وَلَا النَّصٰرٰى حَتّٰى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡؕ قُلۡ اِنَّ هُدَى اللّٰهِ هُوَ الۡهُدٰىؕ وَلَٮِٕنِ اتَّبَعۡتَ اَهۡوَآءَهُمۡ بَعۡدَ الَّذِىۡ جَآءَكَ مِنَ الۡعِلۡمِۙ مَا لَـكَ مِنَ اللّٰهِ مِنۡ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيۡرٍؔ﴿۱۲۰﴾
২-১২০ : ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা তোমার প্রতি কখনও সন্তুষ্ট হইবে না, যতক্ষণ না তুমি তাহাদের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহর পথনির্দেশই প্রকৃত পথনির্দেশ।’ জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাহাদের খেয়াল - খুশির অনুসরণ কর তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন অভিভাবক থাকিবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকিবে না।
اَلَّذِيۡنَ اٰتَيۡنٰهُمُ الۡكِتٰبَ يَتۡلُوۡنَهٗ حَقَّ تِلَاوَتِهٖؕ اُولٰٓٮِٕكَ يُؤۡمِنُوۡنَ بِهٖ ؕ وَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِهٖ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۱۲۱﴾
২-১২১ : যাহাদেরকে আমি কিতাব দিয়াছি তাহারা যথাযথভাবে ইহা তিলাওয়াত করে তাহারাই ইহাতে বিশ্বাস করে; আর যাহারা ইহা প্রত্যাখ্যান করে তাহারা ক্ষতিগ্রস্ত।
يٰبَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ اذۡكُرُوۡا نِعۡمَتِىَ الَّتِىۡٓ اَنۡعَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ وَاَنِّىۡ فَضَّلۡتُكُمۡ عَلَى الۡعٰلَمِيۡنَ﴿۱۲۲﴾
২-১২২ : হে ইসরাঈল - সন্তানগণ! আমার সেই অনুগ্রহকে স্মরণ কর যদ্দ্বারা আমি তোমাদেরকে অনুগৃহীত করিয়াছি এবং তোমাদেরকে বিশ্বে সকলের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি।
وَاتَّقُوۡا يَوۡمًا لَّا تَجۡزِىۡ نَفۡسٌ عَنۡ نَّفۡسٍ شَيۡـًٔـا وَّلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا عَدۡلٌ وَّلَا تَنۡفَعُهَا شَفَاعَةٌ وَّلَا هُمۡ يُنۡصَرُوۡنَ﴿۱۲۳﴾
২-১২৩ : এবং তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যেদিন কেহ কাহারও কোন উপকারে আসিবে না, কাহারও নিকট হইতে কোন বিনিময় গৃহীত হইবে না এবং কোন সুপারিশ কাহারও পক্ষে লাভজনক হইবে না এবং তাহারা সাহায্য প্রাপ্তও হইবে না।
وَاِذِ ابۡتَلٰٓى اِبۡرٰهٖمَ رَبُّهٗ بِكَلِمٰتٍ فَاَتَمَّهُنَّ ؕ قَالَ اِنِّىۡ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًا ؕ قَالَ وَمِنۡ ذُرِّيَّتِىۡ ؕ قَالَ لَا يَنَالُ عَهۡدِى الظّٰلِمِيۡنَ ﴿۱۲۴﴾
২-১২৪ : এবং স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীমকে তাহার প্রতিপালক কয়েকটি কথা দ্বারা পরীক্ষা করিয়াছিলেন এবং সেইগুলি সে পূর্ণ করিয়াছিল, আল্লাহ্ বলিলেন, ‘আমি তোমাকে মানব জাতির নেতা করিতেছি।’ সে বলিল, ‘আমার বংশধরগণের মধ্য হইতেও?’ আল্লাহ্ বলিলেন, ‘আমার প্রতিশ্রুতি জালিমদের প্রতি প্রযোজ্য নহে।’
وَاِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَيۡتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَاَمۡنًا ؕ وَاتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰهٖمَ مُصَلًّى ؕ وَعَهِدۡنَآ اِلٰٓى اِبۡرٰهٖمَ وَاِسۡمٰعِيۡلَ اَنۡ طَهِّرَا بَيۡتِىَ لِلطَّآٮِٕفِيۡنَ وَالۡعٰكِفِيۡنَ وَالرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ ﴿۱۲۵﴾
২-১২৫ : এবং সেই সময়কে স্মরণ কর, যখন আমি কা‘বাগৃহকে মানব জাতির মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করিয়াছিলাম এবং বলিয়াছিলাম, ‘তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর।’ এবং ইব্রাহীম ও ইস্মাইলকে তাওয়াফকারী, ই‘তিকাফকারী, রুকূ‘ ও সিজ্দাকারীদের জন্য আমার গৃহকে পবিত্র রাখিতে আদেশ দিয়াছিলাম।
وَاِذۡ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّارۡزُقۡ اَهۡلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنۡ اٰمَنَ مِنۡهُمۡ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ قَالَ وَمَنۡ كَفَرَ فَاُمَتِّعُهٗ قَلِيۡلًا ثُمَّ اَضۡطَرُّهٗۤ اِلٰى عَذَابِ النَّارِؕ وَبِئۡسَ الۡمَصِيۡرُ ﴿۱۲۶﴾
২-১২৬ : স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলিয়াছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! ইহাকে নিরাপদ শহর করিও, আর ইহার অধিবাসীদের মধ্যে যাহারা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে তাহাদেরকে ফলমূল হইতে জীবিকা প্রদান করিও।’ তিনি বলিলেন, ‘যে কেহ কুফরী করিবে তাহাকেও কিছু কালের জন্য জীবন উপভোগ করিতে দিব, অতঃপর তাহাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করিতে বাধ্য করিব এবং কত নিকৃষ্ট তাহাদের প্রত্যাবর্তনস্থল! ’
وَاِذۡ يَرۡفَعُ اِبۡرٰهٖمُ الۡقَوَاعِدَ مِنَ الۡبَيۡتِ وَاِسۡمٰعِيۡلُؕ رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّا ؕ اِنَّكَ اَنۡتَ السَّمِيۡعُ الۡعَلِيۡمُ﴿۱۲۷﴾
২-১২৭ : স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা‘বাগৃহের প্রাচীর তুলিতেছিল তখন তাহারা বলিয়াছিল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এই কাজ গ্রহণ কর, নিশ্চয় তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’
رَبَّنَا وَاجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَيۡنِ لَـكَ وَ مِنۡ ذُرِّيَّتِنَآ اُمَّةً مُّسۡلِمَةً لَّكَ وَاَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبۡ عَلَيۡنَا ۚ اِنَّكَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ ﴿۱۲۸﴾
২-১২৮ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উভয়কে তোমার একান্ত অনুগত কর এবং আমাদের বংশধর হইতে তোমার এক অনুগত উম্মত করিও। আমাদেরকে ‘ইবাদতের নিয়ম - পদ্ধতি দেখাইয়া দাও এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হও। তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
رَبَّنَا وَابۡعَثۡ فِيۡهِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ يَتۡلُوۡا عَلَيۡهِمۡ اٰيٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الۡكِتٰبَ وَالۡحِكۡمَةَ وَ يُزَكِّيۡهِمۡؕ اِنَّكَ اَنۡتَ الۡعَزِيۡزُ الۡحَكِيۡمُ ﴿۱۲۹﴾
২-১২৯ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তাহাদের মধ্য হইতে তাহাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ করিও - যে তোমার আয়াতসমূহ তাহাদের নিকট তিলাওয়াত করিবে; তাহাদেরকে কিতাব ও হিক্মত শিক্ষা দিবে এবং তাহাদেরকে পবিত্র করিবে। তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
وَمَنۡ يَّرۡغَبُ عَنۡ مِّلَّةِ اِبۡرٰهٖمَ اِلَّا مَنۡ سَفِهَ نَفۡسَهٗ ؕ وَلَقَدِ اصۡطَفَيۡنٰهُ فِى الدُّنۡيَا ۚ وَاِنَّهٗ فِى الۡاٰخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِيۡنَ ﴿۱۳۰﴾
২-১৩০ : যে নিজেকে নির্বোধ করিয়াছে সে ব্যতীত ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ হইতে আর কে বিমুখ হইবে। পৃথিবীতে তাহাকে আমি মনোনীত করিয়াছি; আর আখিরাতেও সে অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণগণের অন্যতম।
اِذۡ قَالَ لَهٗ رَبُّهٗۤ اَسۡلِمۡۙ قَالَ اَسۡلَمۡتُ لِرَبِّ الۡعٰلَمِيۡنَ﴿۱۳۱﴾
২-১৩১ : তাহার প্রতিপালক যখন তাহাকে বলিয়াছিলেন, ‘আত্মসর্মপণ কর’, সে বলিয়াছিল, ‘জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট আত্মসর্মপণ করিলাম।’
وَوَصّٰى بِهَآ اِبۡرٰهٖمُ بَنِيۡهِ وَ يَعۡقُوۡبُؕ يٰبَنِىَّ اِنَّ اللّٰهَ اصۡطَفٰى لَـكُمُ الدِّيۡنَ فَلَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَاَنۡـتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَؕ ﴿۱۳۲﴾
২-১৩২ : এবং ইব্রাহীম ও ইয়া‘কূব এই সম্বন্ধে তাহাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়া বলিয়াছিল, ‘হে পুত্রগণ! আল্লাহ্ই তোমাদের জন্য এই দীনকে মনোনীত করিয়াছেন। সুতরাং আত্মসর্মপণকারী না হইয়া তোমরা কখনও মৃত্যুবরণ করিও না।
اَمۡ كُنۡتُمۡ شُهَدَآءَ اِذۡ حَضَرَ يَعۡقُوۡبَ الۡمَوۡتُۙ اِذۡ قَالَ لِبَنِيۡهِ مَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِىۡؕ قَالُوۡا نَعۡبُدُ اِلٰهَكَ وَاِلٰهَ اٰبَآٮِٕكَ اِبۡرٰهٖمَ وَاِسۡمٰعِيۡلَ وَاِسۡحٰقَ اِلٰهًا وَّاحِدًا ۖۚ وَّنَحۡنُ لَهٗ مُسۡلِمُوۡنَ﴿۱۳۳﴾
২-১৩৩ : ইয়া‘কূবের নিকট যখন মৃত্যু আসিয়াছিল তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে? সে যখন পুত্রগণকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, ‘আমার পরে তোমরা কিসের ‘ইবাদত করিবে?’ তাহারা তখন বলিয়াছিল, ‘আমরা আপনার ইলাহ্ - এর এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইস্মাইল ও ইসহাকের ইলাহ্ - এরই ‘ইবাদত করিব। তিনি একমাত্র ইলাহ্ এবং আমরা তাঁহার নিকট আত্মসর্মপণকারী।’
تِلۡكَ اُمَّةٌ قَدۡ خَلَتۡۚ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَلَـكُمۡ مَّا كَسَبۡتُمۡۚ وَلَا تُسۡـَٔـلُوۡنَ عَمَّا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۳۴﴾
২-১৩৪ : সেই ছিল এক উম্মত, তাহা অতীত হইয়াছে। তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহাদের। তোমরা যাহা অর্জন কর তাহা তোমাদের। তাহারা যাহা করিত সে সম্বন্ধে তোমাদের কোন প্রশ্ন করা হইবে না।
وَقَالُوۡا کُوۡنُوۡا هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰى تَهۡتَدُوۡا ؕ قُلۡ بَلۡ مِلَّةَ اِبۡرٰهٖمَ حَنِيۡفًا ؕ وَمَا كَانَ مِنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ ﴿۱۳۵﴾
২-১৩৫ : তাহারা বলে, ‘ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হও, ঠিক পথ পাইবে।’ বল, ‘বরং একনিষ্ঠ হইয়া আমরা ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করিব এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।’
قُوۡلُوۡٓا اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَآ اُنۡزِلَ اِلَيۡنَا وَمَآ اُنۡزِلَ اِلٰٓى اِبۡرٰهٖمَ وَاِسۡمٰعِيۡلَ وَاِسۡحٰقَ وَيَعۡقُوۡبَ وَ الۡاَسۡبَاطِ وَمَآ اُوۡتِىَ مُوۡسٰى وَعِيۡسٰى وَمَآ اُوۡتِىَ النَّبِيُّوۡنَ مِنۡ رَّبِّهِمۡۚ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ اَحَدٍ مِّنۡهُمۡ وَنَحۡنُ لَهٗ مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۳۶﴾
২-১৩৬ : তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ‘ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে ; আমরা তাহাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁহারই নিকট আত্মসমর্পণকারী।
فَاِنۡ اٰمَنُوۡا بِمِثۡلِ مَآ اٰمَنۡتُمۡ بِهٖ فَقَدِ اهۡتَدَوْا ۚ وَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا هُمۡ فِىۡ شِقَاقٍ ۚ فَسَيَكۡفِيۡکَهُمُ اللّٰهُ ۚ وَهُوَ السَّمِيۡعُ الۡعَلِيۡمُؕ ﴿۱۳۷﴾
২-১৩৭ : তোমরা যাহাতে ঈমান আনয়ন করিয়াছ তাহারা যদি সেইরূপ ঈমান আনয়ন করে তবে নিশ্চয় তাহারা হিদায়াত পাইবে। আর যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া নেয়, তবে তাহারা নিশ্চয়ই বিরুদ্ধভাবাপন্ন এবং তাহাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
صِبۡغَةَ اللّٰهِ ۚ وَمَنۡ اَحۡسَنُ مِنَ اللّٰهِ صِبۡغَةً وَّنَحۡنُ لَهٗ عٰبِدُوۡنَ ﴿۱۳۸﴾
২-১৩৮ : আমরা গ্রহণ করিলাম আল্লাহ্র রং, রঙে আল্লাহ্ অপেক্ষা কে অধিকতর সুন্দর? এবং আমরা তাঁহারই ‘ইবাদতকারী।
قُلۡ اَ تُحَآجُّوۡنَـنَا فِى اللّٰهِ وَهُوَ رَبُّنَا وَرَبُّکُمۡۚ وَلَنَآ اَعۡمَالُـنَا وَلَـكُمۡ اَعۡمَالُكُمۡۚ وَنَحۡنُ لَهٗ مُخۡلِصُوۡنَۙ ﴿۱۳۹﴾
২-১৩৯ : বল, ‘আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমরা কি আমাদের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হইতে চাও - যখন তিনি আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; এবং আমরা তাঁহার প্রতি একনিষ্ঠ।’
اَمۡ تَقُوۡلُوۡنَ اِنَّ اِبۡرٰهٖمَ وَاِسۡمٰعِيۡلَ وَاِسۡحٰقَ وَيَعۡقُوۡبَ وَالۡاَسۡبَاطَ كَانُوۡا هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰىؕ قُلۡ ءَاَنۡـتُمۡ اَعۡلَمُ اَمِ اللّٰهُ ؕ وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ كَتَمَ شَهَادَةً عِنۡدَهٗ مِنَ اللّٰهِؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۰﴾
২-১৪০ : তোমরা কি বল, ‘ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও তাহার বংশধরগণ অবশ্যই ইয়াহূদী কিংবা খ্রিস্টান ছিল?’ বল, ‘তোমরা কি বেশি জান, না আল্লাহ্?’ আল্লাহ্র নিকট হইতে তাহার কাছে যে প্রমাণ আছে তাহা যে গোপন করে তাহার অপেক্ষা অধিকতর জালিম আর কে হইতে পারে? তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অনবহিত নহেন।
تِلۡكَ اُمَّةٌ قَدۡ خَلَتۡۚ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَلَـكُمۡ مَّا كَسَبۡتُمۡۚ وَلَا تُسۡـَٔـلُوۡنَ عَمَّا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۴۱﴾
২-১৪১ : সেই ছিল এক উম্মত, তাহা অতীত হইয়াছে। তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহাদের। তোমরা যাহা অর্জন কর তাহা তোমাদের। তাহারা যাহা করিত সে সম্বন্ধে তোমাদের কোন প্রশ্ন করা হইবে না।
سَيَقُوۡلُ السُّفَهَآءُ مِنَ النَّاسِ مَا وَلّٰٮهُمۡ عَنۡ قِبۡلَتِهِمُ الَّتِىۡ كَانُوۡا عَلَيۡهَا ؕ قُل لِّلّٰهِ الۡمَشۡرِقُ وَالۡمَغۡرِبُ ؕ يَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ ﴿۱۴۲﴾
২-১৪২ : নির্বোধ লোকেরা অচিরেই বলিবে যে, তাহারা এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করিয়া আসিতেছিল উহা হইতে কিসে তাহাদেরকে ফিরাইয়া দিল? বল, ‘পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই। তিনি যাহাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।’
وَكَذٰلِكَ جَعَلۡنٰكُمۡ اُمَّةً وَّسَطًا لِّتَکُوۡنُوۡا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوۡنَ الرَّسُوۡلُ عَلَيۡكُمۡ شَهِيۡدًا ؕ وَمَا جَعَلۡنَا الۡقِبۡلَةَ الَّتِىۡ كُنۡتَ عَلَيۡهَآ اِلَّا لِنَعۡلَمَ مَنۡ يَّتَّبِعُ الرَّسُوۡلَ مِمَّنۡ يَّنۡقَلِبُ عَلٰى عَقِبَيۡهِ ؕ وَاِنۡ كَانَتۡ لَكَبِيۡرَةً اِلَّا عَلَى الَّذِيۡنَ هَدَى اللّٰهُ ؕ وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ اِيۡمَانَكُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوۡفٌ رَّحِيۡمٌ ﴿۱۴۳﴾
২-১৪৩ : এইভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি, যাহাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হইবে। তুমি এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করিতেছিলে উহাকে আমি এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলাম যাহাতে জানিতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরিয়া যায়। আল্লাহ্ যাহাদের সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন তাহারা ব্যতীত অপরের নিকট ইহা নিশ্চয়ই কঠিন। আল্লাহ্ এইরূপ নহেন যে, তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।
قَدۡ نَرٰى تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِى السَّمَآءِۚ فَلَـنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَةً تَرۡضٰٮهَا فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِؕ وَحَيۡثُ مَا كُنۡتُمۡ فَوَلُّوۡا وُجُوۡهَكُمۡ شَطۡرَهٗ ؕ وَاِنَّ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوا الۡكِتٰبَ لَيَـعۡلَمُوۡنَ اَنَّهُ الۡحَـقُّ مِنۡ رَّبِّهِمۡؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۴﴾
২-১৪৪ : আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি অবশ্যই লক্ষ্য করি। সুতরাং তোমাকে অবশ্যই এমন কিব্লার দিকে ফিরাইয়া দিতেছি যাহা তুমি পসন্দ কর। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাও এবং যাহাদেরকে কিতাব দেওয়া হইয়াছে তাহারা নিশ্চিতভাবে জানে যে, উহা তাহাদের প্রতিপালকের প্রেরিত সত্য। তাহারা যাহা করে সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ অনবহিত নহেন।
وَلَٮِٕنۡ اَ تَيۡتَ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوا الۡكِتٰبَ بِكُلِّ اٰيَةٍ مَّا تَبِعُوۡا قِبۡلَتَكَۚ وَمَآ اَنۡتَ بِتَابِعٍ قِبۡلَتَهُمۡۚ وَمَا بَعۡضُهُمۡ بِتَابِعٍ قِبۡلَةَ بَعۡضٍؕ وَلَٮِٕنِ اتَّبَعۡتَ اَهۡوَآءَهُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الۡعِلۡمِۙ اِنَّكَ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِيۡنَۘ ﴿۱۴۵﴾
২-১৪৫ : যাহাদেরকে কিতাব দেওয়া হইয়াছে তুমি যদি তাহাদের নিকট সমস্ত দলীল পেশ কর, তবুও তাহারা তোমার কিব্লার অনুসরণ করিবে না; এবং তুমিও তাহাদের কিব্লার অনুসারী নও, এবং তাহারাও পরস্পরের কিব্লার অনুসারী নয়। তোমার নিকট জ্ঞান আসিবার পর তুমি যদি তাহাদের খেয়াল - খুশির অনুসরণ কর, নিশ্চয়ই তখন তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হইবে।
اَلَّذِيۡنَ اٰتَيۡنٰهُمُ الۡكِتٰبَ يَعۡرِفُوۡنَهٗ كَمَا يَعۡرِفُوۡنَ اَبۡنَآءَهُمۡؕ وَاِنَّ فَرِيۡقًا مِّنۡهُمۡ لَيَكۡتُمُوۡنَ الۡحَـقَّ وَهُمۡ يَعۡلَمُوۡنَؔ﴿۱۴۶﴾
২-১৪৬ : আমি যাহাদেরকে কিতাব দিয়াছি তাহারা তাহাকে সেইরূপ জানে যেইরূপ তাহারা নিজেদের সন্তানগণকে চিনে এবং তাহাদের একদল জানিয়া - শুনিয়া সত্য গোপন করিয়া থাকে।
اَلۡحَـقُّ مِنۡ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُمۡتَرِيۡنَ﴿۱۴۷﴾
২-১৪৭ : সত্য তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে প্রেরিত। সুতরাং তুমি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হইও না।
وَلِكُلٍّ وِّجۡهَةٌ هُوَ مُوَلِّيۡهَا ۚ فَاسۡتَبِقُوا الۡخَيۡرٰتِؕؔ اَيۡنَ مَا تَكُوۡنُوۡا يَاۡتِ بِكُمُ اللّٰهُ جَمِيۡعًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۱۴۸﴾
২-১৪৮ : প্রত্যেকের একটি দিক রহিয়াছে, যেদিকে সে মুখ করে। অতএব তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা কর। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ্ তোমাদের সকলকে একত্র করিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
وَمِنۡ حَيۡثُ خَرَجۡتَ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِؕ وَاِنَّهٗ لَـلۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّكَؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۴۹﴾
২-১৪৯ : যেখান হইতেই তুমি বাহির হও না কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। ইহা নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে প্রেরিত সত্য। তোমরা যাহা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ অনবহিত নহেন।
وَمِنۡ حَيۡثُ خَرَجۡتَ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِؕ وَحَيۡثُ مَا كُنۡتُمۡ فَوَلُّوۡا وُجُوۡهَڪُمۡ شَطۡرَهٗ ۙ لِئَلَّا يَكُوۡنَ لِلنَّاسِ عَلَيۡكُمۡ حُجَّةٌ اِلَّا الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡهُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَاخۡشَوۡنِىۡ وَلِاُتِمَّ نِعۡمَتِىۡ عَلَيۡكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُوۡنَ ۙۛ ﴿۱۵۰﴾
২-১৫০ : তুমি যেখান হইতেই বাহির হও না কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাইবে, যাহাতে তাহাদের মধ্যে জালিমদের ব্যতীত অপর লোকের তোমাদের বিরুদ্ধে বিতর্কের কিছু না থাকে। সুতরাং তাহাদেরকে ভয় করিও না, শুধু আমাকেই ভয় কর। যাহাতে আমি আমার নিয়ামত তোমাদেরকে পূর্ণরূপে দান করিতে পারি এবং যাহাতে তোমরা সৎপথে পরিচালিত হইতে পার।
كَمَآ اَرۡسَلۡنَا فِيۡکُمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡکُمۡ يَتۡلُوۡا عَلَيۡكُمۡ اٰيٰتِنَا وَيُزَكِّيۡکُمۡ وَيُعَلِّمُکُمُ الۡكِتٰبَ وَالۡحِکۡمَةَ وَيُعَلِّمُكُمۡ مَّا لَمۡ تَكُوۡنُوۡا تَعۡلَمُوۡنَ ؕۛ ﴿۱۵۱﴾
২-১৫১ : যেমন আমি তোমাদের মধ্য হইতে তোমাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করিয়াছি, যে আমার আয়াতসমূহ তোমাদের নিকট তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিক্মত শিক্ষা দেয় আর তোমরা যাহা জানিতে না তাহা শিক্ষা দেয়।
فَاذۡكُرُوۡنِىۡٓ اَذۡكُرۡكُمۡ وَاشۡکُرُوۡا لِىۡ وَلَا تَكۡفُرُوۡنِ﴿۱۵۲﴾
২-১৫২ : সুতরাং তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করিব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হইও না।
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِيۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ ﴿۱۵۳﴾
২-১৫৩ : হে মু’মিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
وَلَا تَقُوۡلُوۡا لِمَنۡ يُّقۡتَلُ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ اَمۡوَاتٌ ؕ بَلۡ اَحۡيَآءٌ وَّلٰـكِنۡ لَّا تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾
২-১৫৪ : আল্লাহ্র পথে যাহারা নিহত হয় তাহাদেরকে মৃত বলিও না, বরং তাহারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করিতে পার না।
وَلَـنَبۡلُوَنَّكُمۡ بِشَىۡءٍ مِّنَ الۡخَـوۡفِ وَالۡجُـوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيۡنَۙ﴿۱۵۵﴾
২-১৫৫ : আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন - সম্পদ, জীবন ও ফল - ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করিব। তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলগণকে -
الَّذِيۡنَ اِذَآ اَصَابَتۡهُمۡ مُّصِيۡبَةٌ ۙ قَالُوۡٓا اِنَّا لِلّٰهِ وَاِنَّـآ اِلَيۡهِ رٰجِعُوۡنَؕ ﴿۱۵۶﴾
২-১৫৬ : যাহারা তাহাদের উপর বিপদ আপতিত হইলে বলে, ‘আমরা তো আল্লাহ্রই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁহার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’
اُولٰٓٮِٕكَ عَلَيۡهِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّهِمۡ وَرَحۡمَةٌ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡمُهۡتَدُوۡنَ﴿۱۵۷﴾
২-১৫৭ : ইহারাই তাহারা যাহাদের প্রতি তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হয়, আর ইহারাই সৎপথে পরিচালিত।
اِنَّ الصَّفَا وَالۡمَرۡوَةَ مِنۡ شَعَآٮِٕرِ اللّٰهِۚ فَمَنۡ حَجَّ الۡبَيۡتَ اَوِ اعۡتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِ اَنۡ يَّطَّوَّفَ بِهِمَا ؕ وَمَنۡ تَطَوَّعَ خَيۡرًا ۙ فَاِنَّ اللّٰهَ شَاكِرٌ عَلِيۡمٌ ﴿۱۵۸﴾
২-১৫৮ : নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেহ কা‘বাগৃহের হজ্জ কিংবা ‘উমরা সম্পন্ন করে এই দুইটির মধ্যে সা‘ঈ করিলে তাহার কোন পাপ নাই আর কেহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করিলে আল্লাহ্ তো পুরস্কারদাতা, সর্বজ্ঞ।
اِنَّ الَّذِيۡنَ يَكۡتُمُوۡنَ مَآ اَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡبَيِّنٰتِ وَالۡهُدٰى مِنۡۢ بَعۡدِ مَا بَيَّنّٰهُ لِلنَّاسِ فِى الۡكِتٰبِۙ اُولٰٓٮِٕكَ يَلۡعَنُهُمُ اللّٰهُ وَ يَلۡعَنُهُمُ اللّٰعِنُوۡنَۙ ﴿۱۵۹﴾
২-১৫৯ : নিশ্চয়ই আমি যেসব স্পষ্ট নিদর্শন ও হিদায়াত অবতীর্ণ করিয়াছি মানুষের জন্য কিতাবে উহা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার পরও যাহারা উহা গোপন রাখে আল্লাহ্ তাহাদেরকে লা‘নত দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাহাদেরকে অভিশাপ দেয়।
اِلَّا الَّذِيۡنَ تَابُوۡا وَاَصۡلَحُوۡا وَبَيَّـنُوۡا فَاُولٰٓٮِٕكَ اَ تُوۡبُ عَلَيۡهِمۡۚ وَاَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ ﴿۱۶۰﴾
২-১৬০ : কিন্তু যাহারা তওবা করে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে, ইহারাই তাহারা যাহাদের তওবা আমি কবূল করি, আমি অতিশয় তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَمَاتُوۡا وَهُمۡ كُفَّارٌ اُولٰٓٮِٕكَ عَلَيۡهِمۡ لَعۡنَةُ اللّٰهِ وَالۡمَلٰٓٮِٕكَةِ وَالنَّاسِ اَجۡمَعِيۡنَۙ﴿۱۶۱﴾
২-১৬১ : নিশ্চয়ই যাহারা কুফরী করে এবং কাফিররূপে মারা যায় তাহাদের উপর লা‘নত আল্লাহ্ এবং ফিরিশ্তাগণ ও সকল মানুষের।
خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا ۚ لَا يُخَفَّفُ عَنۡهُمُ الۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ يُنۡظَرُوۡنَ ﴿۱۶۲﴾
২-১৬২ : উহাতে তাহারা স্থায়ী হইবে। তাহাদের শাস্তি লঘু করা হইবে না এবং তাহাদেরকে কোন অবকাশও দেওয়া হইবে না।
وَاِلٰهُكُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ لَآ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِيۡمُ ﴿۱۶۳﴾
২-১৬৩ : আর তোমাদের ইলাহ্ এক ইলাহ্, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু।
اِنَّ فِىۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَاخۡتِلَافِ الَّيۡلِ وَالنَّهَارِ وَالۡفُلۡكِ الَّتِىۡ تَجۡرِىۡ فِى الۡبَحۡرِ بِمَا يَنۡفَعُ النَّاسَ وَمَآ اَنۡزَلَ اللّٰهُ مِنَ السَّمَآءِ مِنۡ مَّآءٍ فَاَحۡيَا بِهِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَا وَبَثَّ فِيۡهَا مِنۡ کُلِّ دَآ بَّةٍ وَّتَصۡرِيۡفِ الرِّيٰحِ وَالسَّحَابِ الۡمُسَخَّرِ بَيۡنَ السَّمَآءِ وَالۡاَرۡضِ لَاٰيٰتٍ لِّقَوۡمٍ يَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶۴﴾
২-১৬৪ : নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, রাত্রি ও দিবসের পরিবর্তনে, যাহা মানুষের হিত সাধন করে তাহাসহ সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহে, আল্লাহ্ আকাশ হইতে যে বারিবর্ষণ দ্বারা ধরিত্রীকে তাহার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাহাতে এবং তাহার মধ্যে যাবতীয় জীবজন্তুর বিস্তারণে, বায়ুর দিক পরিবর্তনে, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে জ্ঞানবান জাতির জন্য নিদর্শন রহিয়াছে।
وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اَنۡدَادًا يُّحِبُّوۡنَهُمۡ كَحُبِّ اللّٰهِؕ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡٓا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰهِ ؕ وَلَوۡ يَرَى الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡٓا اِذۡ يَرَوۡنَ الۡعَذَابَۙ اَنَّ الۡقُوَّةَ لِلّٰهِ جَمِيۡعًا ۙ وَّاَنَّ اللّٰهَ شَدِيۡدُ الۡعَذَابِ﴿۱۶۵﴾
২-১৬৫ : তথাপি মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্ ছাড়া অপরকে আল্লাহ্র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহ্কে ভালবাসার অনুরূপ তাহাদেরকে ভালবাসে ; কিন্তু যাহারা ঈমান আনিয়াছে আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসায় তাহারা সুদৃঢ়। জালিমরা শাস্তি প্রত্যক্ষ করিলে যেমন বুঝিবে, হায় ! এখন যদি তাহারা তেমন বুঝিত, সমস্ত শক্তি আল্লাহ্রই এবং আল্লাহ্ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর।
اِذۡ تَبَرَّاَ الَّذِيۡنَ اتُّبِعُوۡا مِنَ الَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡا وَرَاَوُا الۡعَذَابَ وَ تَقَطَّعَتۡ بِهِمُ الۡاَسۡبَابُ﴿۱۶۶﴾
২-১৬৬ : যখন অনুসৃতগণ অনুসরণকারীদের দায়িত্ব অস্বীকার করিবে এবং তাহারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে ও তাহাদের মধ্যকার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হইয়া যাইবে,
وَقَالَ الَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡا لَوۡ اَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّاَ مِنۡهُمۡ كَمَا تَبَرَّءُوۡا مِنَّا ؕ كَذٰلِكَ يُرِيۡهِمُ اللّٰهُ اَعۡمَالَهُمۡ حَسَرٰتٍ عَلَيۡهِمۡؕ وَمَا هُمۡ بِخٰرِجِيۡنَ مِنَ النَّارِ ﴿۱۶۷﴾
২-১৬৭ : আর যাহারা অনুসরণ করিয়াছিল তাহারা বলিবে, ‘হায় ! যদি একবার আমাদের প্রত্যাবর্তন ঘটিত তবে আমরাও তাহাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করিতাম যেমন তাহারা আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করিল।’ এইভাবে আল্লাহ্ তাহাদের কার্যাবলী তাহাদের পরিতাপরূপে তাহাদেরকে দেখাইবেন আর তাহারা কখনও অগ্নি হইতে বাহির হইতে পারিবে না।
يٰٓاَيُّهَا النَّاسُ كُلُوۡا مِمَّا فِى الۡاَرۡضِ حَلٰلًا طَيِّبًا ۖ وَّلَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّيۡطٰنِؕ اِنَّهٗ لَـكُمۡ عَدُوٌّ مُّبِيۡنٌ ﴿۱۶۸﴾
২-১৬৮ : হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যাহা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রহিয়াছে তাহা হইতে তোমরা আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করিও না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
اِنَّمَا يَاۡمُرُكُمۡ بِالسُّوۡٓءِ وَالۡفَحۡشَآءِ وَاَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ﴿۱۶۹﴾
২-১৬৯ : সে তো কেবল তোমাদেরকে মন্দ ও অশ্লীল কাজের এবং আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমরা যাহা জান না এমন সব বিষয় বলার নির্দেশ দেয়।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمُ اتَّبِعُوۡا مَآ اَنۡزَلَ اللّٰهُ قَالُوۡا بَلۡ نَـتَّبِعُ مَآ اَلۡفَيۡنَا عَلَيۡهِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَلَوۡ كَانَ اٰبَآؤُهُمۡ لَا يَعۡقِلُوۡنَ شَيۡـًٔـا وَّلَا يَهۡتَدُوۡنَ ﴿۱۷۰﴾
২-১৭০ : যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃপুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না - তৎসত্ত্বেও।
وَمَثَلُ الَّذِيۡنَ کَفَرُوۡا كَمَثَلِ الَّذِىۡ يَنۡعِقُ بِمَا لَا يَسۡمَعُ اِلَّا دُعَآءً وَّنِدَآءً ؕ صُمٌّۢ بُكۡمٌ عُمۡـىٌ فَهُمۡ لَا يَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۷۱﴾
২-১৭১ : যাহারা কুফরী করে তাহাদের উপমা : যেমন কোন ব্যক্তি এমন কিছুকে ডাকে যাহা হাঁক - ডাক ছাড়া আর কিছুই শ্রবণ করে না - বধির, মূক, অন্ধ, সুতরাং তাহারা বুঝিবে না।
يٰٓاَ يُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا کُلُوۡا مِنۡ طَيِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰكُمۡ وَاشۡكُرُوۡا لِلّٰهِ اِنۡ کُنۡتُمۡ اِيَّاهُ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۱۷۲﴾
২-১৭২ : হে মু’মিনগণ! তোমাদেরকে আমি যেসব পবিত্র বস্তু দিয়াছি তাহা হইতে আহার কর এবং আল্লাহ্র নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা শুধু তাঁহারই ‘ইবাদত কর।
اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيۡکُمُ الۡمَيۡتَةَ وَالدَّمَ وَلَحۡمَ الۡخِنۡزِيۡرِ وَمَآ اُهِلَّ بِهٖ لِغَيۡرِ اللّٰهِۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَيۡرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَيۡهِؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۱۷۳﴾
২-১৭৩ : নিশ্চয় আল্লাহ্ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর - মাংস এবং যাহার উপর আল্লাহ্র নাম ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারিত হইয়াছে তাহা তোমাদের জন্য হারাম করিয়াছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ নাফরমান কিংবা সীমালংঘনকারী নয় তাহার কোন পাপ হইবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
اِنَّ الَّذِيۡنَ يَكۡتُمُوۡنَ مَآ اَنۡزَلَ اللّٰهُ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ يَشۡتَرُوۡنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِيۡلًا ۙ اُولٰٓٮِٕكَ مَا يَاۡكُلُوۡنَ فِىۡ بُطُوۡنِهِمۡ اِلَّا النَّارَ وَلَا يُکَلِّمُهُمُ اللّٰهُ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ وَلَا يُزَکِّيۡهِمۡ ۖۚ وَلَهُمۡ عَذَابٌ اَ لِيۡمٌ ﴿۱۷۴﴾
২-১৭৪ : আল্লাহ্ যে কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন যাহারা তাহা গোপন রাখে ও বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে তাহারা নিজেদের জঠরে অগ্নি ব্যতীত আর কিছুই পুরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাহাদের সঙ্গে কথা বলিবেন না এবং তাহাদেরকে পবিত্র করিবেন না। তাহাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রহিয়াছে।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ اشۡتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالۡهُدٰى وَالۡعَذَابَ بِالۡمَغۡفِرَةِ ۚ فَمَآ اَصۡبَرَهُمۡ عَلَى النَّارِ ﴿۱۷۵﴾
২-১৭৫ : তাহারাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্ত পথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করিয়াছে; আগুন সহ্য করিতে তাহারা কতই না ধৈর্যশীল!
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ نَزَّلَ الۡکِتٰبَ بِالۡحَـقِّؕ وَاِنَّ الَّذِيۡنَ اخۡتَلَفُوۡا فِى الۡكِتٰبِ لَفِىۡ شِقَاقٍۢ بَعِيۡدٍ ﴿۱۷۶﴾
২-১৭৬ : ইহা এইহেতু যে, আল্লাহ্ সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন এবং যাহারা কিতাব সম্বন্ধে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে, নিশ্চয় তাহারা দুস্তর মতভেদে রহিয়াছে।
لَيۡسَ الۡبِرَّ اَنۡ تُوَلُّوۡا وُجُوۡهَكُمۡ قِبَلَ الۡمَشۡرِقِ وَ الۡمَغۡرِبِ وَلٰـكِنَّ الۡبِرَّ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَالۡمَلٰٓٮِٕکَةِ وَالۡكِتٰبِ وَالنَّبِيّٖنَۚ وَاٰتَى الۡمَالَ عَلٰى حُبِّهٖ ذَوِى الۡقُرۡبٰى وَالۡيَتٰمٰى وَالۡمَسٰكِيۡنَ وَابۡنَ السَّبِيۡلِۙ وَالسَّآٮِٕلِيۡنَ وَفِى الرِّقَابِۚ وَاَقَامَ الصَّلٰوةَ وَاٰتَى الزَّکٰوةَ ۚ وَالۡمُوۡفُوۡنَ بِعَهۡدِهِمۡ اِذَا عٰهَدُوۡا ۚ وَالصّٰبِرِيۡنَ فِى الۡبَاۡسَآءِ وَالضَّرَّآءِ وَحِيۡنَ الۡبَاۡسِؕ اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ صَدَقُوۡا ؕ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡمُتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۷﴾
২-১৭৭ : পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্ , পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্প্রেমে আত্মীয় - স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থিগণকে এবং দাস - মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ - সংকটে দুঃখ - ক্লেশে ও সংগ্রাম - সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সত্যপরায়ণ এবং ইহারাই মুত্তাকী।
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا كُتِبَ عَلَيۡكُمُ الۡقِصَاصُ فِى الۡقَتۡلٰى ؕ الۡحُرُّ بِالۡحُـرِّ وَالۡعَبۡدُ بِالۡعَبۡدِ وَالۡاُنۡثَىٰ بِالۡاُنۡثٰىؕ فَمَنۡ عُفِىَ لَهٗ مِنۡ اَخِيۡهِ شَىۡءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَاَدَآءٌ اِلَيۡهِ بِاِحۡسَانٍؕ ذٰلِكَ تَخۡفِيۡفٌ مِّنۡ رَّبِّكُمۡ وَرَحۡمَةٌ ؕ فَمَنِ اعۡتَدٰى بَعۡدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِيۡمٌۚ ﴿۱۷۸﴾
২-১৭৮ : হে মু’মিনগণ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেওয়া হইয়াছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস ও নারীর বদলে নারী, কিন্তু তাহার ভাইয়ের পক্ষ হইতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হইলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সঙ্গে তাহার দেয় আদায় বিধেয়। ইহা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। ইহার পরও যে সীমালংঘন করে তাহার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রহিয়াছে।
وَ لَـكُمۡ فِى الۡقِصَاصِ حَيٰوةٌ يّٰٓـاُولِىۡ الۡاَلۡبَابِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۹﴾
২-১৭৯ : হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রহিয়াছে, যাহাতে তোমরা সাবধান হইতে পার।
كُتِبَ عَلَيۡكُمۡ اِذَا حَضَرَ اَحَدَكُمُ الۡمَوۡتُ اِنۡ تَرَكَ خَيۡرَا ۖۚ اۨلۡوَصِيَّةُ لِلۡوَالِدَيۡنِ وَالۡاَقۡرَبِيۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِۚ حَقًّا عَلَى الۡمُتَّقِيۡنَؕ﴿۱۸۰﴾
২-১৮০ : তোমাদের মধ্যে কাহারও মৃত্যুকাল উপস্থিত হইলে সে যদি ধন - সম্পত্তি রাখিয়া যায় তবে ন্যায়ানুগ প্রথামত তাহার পিতামাতা ও আত্মীয় - স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদেরকে দেওয়া হইল। ইহা মুত্তাকীদের জন্য একটি কর্তব্য।
فَمَنۡۢ بَدَّلَهٗ بَعۡدَمَا سَمِعَهٗ فَاِنَّمَآ اِثۡمُهٗ عَلَى الَّذِيۡنَ يُبَدِّلُوۡنَهٗؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌؕ﴿۱۸۱﴾
২-১৮১ : উহা শ্রবণ করিবার পর যদি কেহ উহার পরিবর্তন সাধন করে, তবে যাহারা পরিবর্তন করিবে অপরাধ তাহাদেরই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
فَمَنۡ خَافَ مِنۡ مُّوۡصٍ جَنَفًا اَوۡ اِثۡمًا فَاَصۡلَحَ بَيۡنَهُمۡ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَيۡهِؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۱۸۲﴾
২-১৮২ : তবে যদি কেহ ওসিয়াতকারীর পক্ষপাতিত্ব কিংবা অন্যায়ের আশংকা করে, অতঃপর সে তাহাদের মধ্যে মীমাংসা করিয়া দেয়, তবে তাহার কোন অপরাধ নাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।
يٰٓـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا كُتِبَ عَلَيۡکُمُ الصِّيَامُ کَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَۙ ﴿۱۸۳﴾
২-১৮৩ : হে মু’মিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হইল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হইয়াছিল, যাহাতে তোমরা মুত্তাকী হইতে পার -
اَيَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِيۡضًا اَوۡ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنۡ اَيَّامٍ اُخَرَؕ وَعَلَى الَّذِيۡنَ يُطِيۡقُوۡنَهٗ فِدۡيَةٌ طَعَامُ مِسۡكِيۡنٍؕ فَمَنۡ تَطَوَّعَ خَيۡرًا فَهُوَ خَيۡرٌ لَّهٗ ؕ وَاَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَيۡرٌ لَّـکُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۴﴾
২-১৮৪ : সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তোমাদের মধ্যে কেহ পীড়িত হইলে বা সফরে থাকিলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করিয়া লইতে হইবে। ইহা যাহাদেরকে সাতিশয় কষ্ট দেয় তাহাদের কর্তব্য ইহার পরিবর্তে ফিদ্য়া - একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে উহা তাহার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ যদি তোমরা জানিতে।
شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِىۡٓ اُنۡزِلَ فِيۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ بَيِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰى وَالۡفُرۡقَانِۚ فَمَنۡ شَهِدَ مِنۡكُمُ الشَّهۡرَ فَلۡيَـصُمۡهُ ؕ وَمَنۡ کَانَ مَرِيۡضًا اَوۡ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنۡ اَيَّامٍ اُخَرَؕ يُرِيۡدُ اللّٰهُ بِکُمُ الۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ وَلِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّةَ وَلِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰى مَا هَدٰٮكُمۡ وَلَعَلَّکُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ﴿۱۸۵﴾
২-১৮৫ : রামাযান মাস, ইহাতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কুরআন অবতীর্ণ হইয়াছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাহারা এই মাস পাইবে তাহারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। এবং কেহ পীড়িত থাকিলে কিংবা সফরে থাকিলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করিবে। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যাহা সহজ তাহা চাহেন এবং যাহা তোমাদের জন্য কষ্টকর তাহা চাহেন না এইজন্য যে, তোমরা সংখ্যা পূর্ণ করিবে এবং তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করিবার কারণে তোমরা আল্লাহ্র মহিমা ঘোষণা করিবে এবং যাহাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পার।
وَاِذَا سَاَلَـكَ عِبَادِىۡ عَنِّىۡ فَاِنِّىۡ قَرِيۡبٌؕ اُجِيۡبُ دَعۡوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ فَلۡيَسۡتَجِيۡبُوۡا لِىۡ وَلۡيُؤۡمِنُوۡا بِىۡ لَعَلَّهُمۡ يَرۡشُدُوۡنَ﴿۱۸۶﴾
২-১৮৬ : আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্বন্ধে তোমাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমার নিকট প্রার্থনা করে আমি তাহার প্রার্থনায় সাড়া দেই। সুতরাং তাহারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাহাতে তাহারা ঠিক পথে চলিতে পারে।
اُحِلَّ لَـکُمۡ لَيۡلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ اِلٰى نِسَآٮِٕكُمۡؕ هُنَّ لِبَاسٌ لَّـكُمۡ وَاَنۡـتُمۡ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّکُمۡ كُنۡتُمۡ تَخۡتَانُوۡنَ اَنۡفُسَکُمۡ فَتَابَ عَلَيۡكُمۡ وَعَفَا عَنۡكُمۡۚ فَالۡـــٰٔنَ بَاشِرُوۡهُنَّ وَابۡتَغُوۡا مَا کَتَبَ اللّٰهُ لَـكُمۡ وَكُلُوۡا وَاشۡرَبُوۡا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَـكُمُ الۡخَـيۡطُ الۡاَبۡيَضُ مِنَ الۡخَـيۡطِ الۡاَسۡوَدِ مِنَ الۡفَجۡرِؕ ثُمَّ اَتِمُّوا الصِّيَامَ اِلَى الَّيۡلِۚ وَلَا تُبَاشِرُوۡهُنَّ وَاَنۡـتُمۡ عٰكِفُوۡنَ فِى الۡمَسٰجِدِؕ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَقۡرَبُوۡهَا ؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ اٰيٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ يَتَّقُوۡنَ﴿۱۸۷﴾
২-১৮৭ : সিয়ামের রাত্রে তোমাদের জন্য স্ত্রী - সম্ভোগ বৈধ করা হইয়াছে। তাহারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাহাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করিতেছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হইয়াছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করিয়াছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাহাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ্ যাহা তোমাদের জন্য নির্ধারণ করিয়াছেন তাহা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হইতে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। তোমরা মসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায় তাহাদের সঙ্গে সংগত হইও না। এইগুলি আল্লাহ্র সীমারেখা। সুতরাং এইগুলির নিকটবর্তী হইও না। এইভাবে আল্লাহ্ তাঁহার বিধানাবলী মানব জাতির জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাহাতে তাহারা মুত্তাকী হইতে পারে।
وَلَا تَاۡكُلُوۡٓا اَمۡوَالَـكُمۡ بَيۡنَكُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَتُدۡلُوۡا بِهَآ اِلَى الۡحُـکَّامِ لِتَاۡکُلُوۡا فَرِيۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَاَنۡـتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۸﴾
২-১৮৮ : তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ - সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করিও না এবং মানুষের ধন - সম্পত্তির কিয়দংশ জানিয়া - শুনিয়া অন্যায়ভাবে গ্রাস করিবার উদ্দেশ্যে উহা বিচারকগণের নিকট পেশ করিও না।
يَسۡـــَٔلُوۡنَكَ عَنِ الۡاَهِلَّةِ ؕ قُلۡ هِىَ مَوَاقِيۡتُ لِلنَّاسِ وَالۡحَجِّ ؕ وَلَيۡسَ الۡبِرُّ بِاَنۡ تَاۡتُوا الۡبُيُوۡتَ مِنۡ ظُهُوۡرِهَا وَلٰـكِنَّ الۡبِرَّ مَنِ اتَّقٰىۚ وَاۡتُوا الۡبُيُوۡتَ مِنۡ اَبۡوَابِهَا وَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ﴿۱۸۹﴾
২-১৮৯ : লোকে তোমাকে নূতন চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে। বল, ‘উহা মানুষ এবং হজ্জের জন্য সময় নিদের্শক।’ পশ্চাৎদিক দিয়া তোমাদের গৃহে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ তাক্ওয়া অবলম্বন করিলে। সুতরাং তোমরা দ্বার দিয়া গৃহে প্রবেশ কর, তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।
وَقَاتِلُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ الَّذِيۡنَ يُقَاتِلُوۡنَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ الۡمُعۡتَدِيۡنَ ﴿۱۹۰﴾
২-১৯০ : যাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহ্র পথে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ; কিন্তু সীমালংঘন করিও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সীমালংঘন - কারিগণকে ভালবাসেন না।
وَاقۡتُلُوۡهُمۡ حَيۡثُ ثَقِفۡتُمُوۡهُمۡ وَاَخۡرِجُوۡهُمۡ مِّنۡ حَيۡثُ اَخۡرَجُوۡكُمۡ وَالۡفِتۡنَةُ اَشَدُّ مِنَ الۡقَتۡلِۚ وَلَا تُقٰتِلُوۡهُمۡ عِنۡدَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِ حَتّٰى يُقٰتِلُوۡكُمۡ فِيۡهِۚ فَاِنۡ قٰتَلُوۡكُمۡ فَاقۡتُلُوۡهُمۡؕ كَذٰلِكَ جَزَآءُ الۡكٰفِرِيۡنَ﴿۱۹۱﴾
২-১৯১ : যেখানে তাহাদেরকে পাইবে হত্যা করিবে এবং যে স্থান হইতে তাহারা তোমাদেরকে বহিষ্কার করিয়াছে তোমরাও সেই স্থান হইতে তাহাদেরকে বহিষ্কার করিবে। ফিতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর। মসজিদুল হারামের নিকট তোমরা তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিবে না, যে পর্যন্ত তাহারা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে। যদি তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে তোমরা তাহাদেরকে হত্যা করিবে, ইহাই কাফিরদের পরিণাম।
فَاِنِ انۡـتَهَوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ ﴿۱۹۲﴾
২-১৯২ : যদি তাহারা বিরত হয় তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَقٰتِلُوۡهُمۡ حَتّٰى لَا تَكُوۡنَ فِتۡنَةٌ وَّيَكُوۡنَ الدِّيۡنُ لِلّٰهِؕ فَاِنِ انتَهَوۡا فَلَا عُدۡوَانَ اِلَّا عَلَى الظّٰلِمِيۡنَ﴿۱۹۳﴾
২-১৯৩ : আর তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে থাকিবে যাবত ফিতনা দূরীভূত না হয় এবং আল্লাহ্র দীন প্রতিষ্ঠিত না হয়। যদি তাহারা বিরত হয় তবে জালিমদেরকে ব্যতীত আর কাহাকেও আক্রমণ করা চলিবে না।
اَلشَّهۡرُ الۡحَـرَامُ بِالشَّهۡرِ الۡحَـرَامِ وَالۡحُرُمٰتُ قِصَاصٌؕ فَمَنِ اعۡتَدٰى عَلَيۡكُمۡ فَاعۡتَدُوۡا عَلَيۡهِ بِمِثۡلِ مَا اعۡتَدٰى عَلَيۡكُمۡ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الۡمُتَّقِيۡنَ ﴿۱۹۴﴾
২-১৯৪ : পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে। যাহার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তাহার অবমাননা সকলের জন্য সমান। সুতরাং যে কেহ তোমাদেরকে আক্রমণ করিবে তোমরাও তাহাকে অনুরূপ আক্রমণ করিবে এবং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, আল্লাহ্ অবশ্যই মুত্তাকীদের সঙ্গে থাকেন।
وَاَنۡفِقُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَلَا تُلۡقُوۡا بِاَيۡدِيۡكُمۡ اِلَى التَّهۡلُكَةِ ۖ ۛۚ وَاَحۡسِنُوۡا ۛۚ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُحۡسِنِيۡنَ﴿۱۹۵﴾
২-১৯৫ : তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় কর এবং নিজেদের হাতে নিজে - দেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করিও না। তোমরা সৎকাজ কর, আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণ লোককে ভালবাসেন।
وَاَتِمُّوا الۡحَجَّ وَالۡعُمۡرَةَ لِلّٰهِؕ فَاِنۡ اُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا اسۡتَيۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡىِۚ وَلَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَكُمۡ حَتّٰى يَبۡلُغَ الۡهَدۡىُ مَحِلَّهٗ ؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِيۡضًا اَوۡ بِهٖۤ اَذًى مِّنۡ رَّاۡسِهٖ فَفِدۡيَةٌ مِّنۡ صِيَامٍ اَوۡ صَدَقَةٍ اَوۡ نُسُكٍۚ فَاِذَآ اَمِنۡتُمۡ فَمَنۡ تَمَتَّعَ بِالۡعُمۡرَةِ اِلَى الۡحَجِّ فَمَا اسۡتَيۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡىِۚ فَمَنۡ لَّمۡ يَجِدۡ فَصِيَامُ ثَلٰثَةِ اَيَّامٍ فِى الۡحَجِّ وَسَبۡعَةٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡؕ تِلۡكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌ ؕ ذٰ لِكَ لِمَنۡ لَّمۡ يَكُنۡ اَهۡلُهٗ حَاضِرِىۡ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ شَدِيۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۱۹۶﴾
২-১৯৬ : তোমরা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরা পূর্ণ কর, কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে সহজলভ্য কুরবানী করিও। যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু উহার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মস্তক মুণ্ডন করিও না। তোমাদের মধ্যে যদি কেহ পীড়িত হয় কিংবা মাথায় ক্লেশ থাকে তবে সিয়াম কিংবা সোয়াদাকা অথবা কুরবানীর দ্বারা উহার ফিদ্য়া দিবে। যখন তোমরা নিরাপদ হইবে তখন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি হজ্জের প্রাক্কালে উমরা দ্বারা লাভবান হইতে চায় সে সহজলভ্য কুরবানী করিবে। কিন্তু যদি কেহ উহা না পায় তবে তাহাকে হজ্জের সময় তিনদিন এবং গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর সাতদিন - এই পূর্ণ দশদিন সিয়াম পালন করিতে হইবে। ইহা তাহাদের জন্য, যাহাদের পরিজনবর্গ মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শাস্তি দানে কঠোর।
اَلۡحَجُّ اَشۡهُرٌ مَّعۡلُوۡمٰتٌ ۚ فَمَنۡ فَرَضَ فِيۡهِنَّ الۡحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوۡقَۙ وَلَا جِدَالَ فِى الۡحَجِّ ؕ وَمَا تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ يَّعۡلَمۡهُ اللّٰهُ ؕؔ وَتَزَوَّدُوۡا فَاِنَّ خَيۡرَ الزَّادِ التَّقۡوٰى وَاتَّقُوۡنِ يٰٓاُولِى الۡاَلۡبَابِ ﴿۱۹۷﴾
২-১৯৭ : হজ্জ হয় সুনির্দিষ্ট মাসসমূহে। অতঃপর যে কেহ এই মাসগুলিতে হজ্জ করা স্থির করে তাহার জন্য হজ্জের সময়ে স্ত্রী - সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ - বিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজের যাহা কিছু কর আল্লাহ্ তাহা জানেন এবং তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা করিও, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! তোমরা আমাকে ভয় কর।
لَيۡسَ عَلَيۡکُمۡ جُنَاحٌ اَنۡ تَبۡتَغُوۡا فَضۡلًا مِّنۡ رَّبِّکُمۡؕ فَاِذَآ اَفَضۡتُمۡ مِّنۡ عَرَفٰتٍ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ عِنۡدَ الۡمَشۡعَرِ الۡحَـرَامِ وَاذۡکُرُوۡهُ کَمَا هَدٰٮکُمۡۚ وَاِنۡ کُنۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلِهٖ لَمِنَ الضَّآ لِّيۡنَ﴿۱۹۸﴾
২-১৯৮ : তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের কোন পাপ নাই। যখন তোমরা ‘আল আরাফাত হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে তখন মাশ‘আরুল হারামের নিকট পৌঁছিয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করিবে এবং তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়াছেন ঠিক সেইভাবে স্মরণ করিবে; যদিও ইতিপূর্বে তোমরা বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।
ثُمَّ اَفِيۡضُوۡا مِنۡ حَيۡثُ اَفَاضَ النَّاسُ وَاسۡتَغۡفِرُوا اللّٰهَؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ ﴿۱۹۹﴾
২-১৯৯ : অতঃপর অন্যান্য লোক যেখান হইতে প্রত্যাবর্তন করে তোমরাও সেই স্থান হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে। আর আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
فَاِذَا قَضَيۡتُمۡ مَّنَاسِكَکُمۡ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ كَذِكۡرِكُمۡ اٰبَآءَکُمۡ اَوۡ اَشَدَّ ذِکۡرًا ؕ فَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يَّقُوۡلُ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِى الدُّنۡيَا وَمَا لَهٗ فِى الۡاٰخِرَةِ مِنۡ خَلَاقٍ ﴿۲۰۰﴾
২-২০০ : অতঃপর যখন তোমরা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করিবে তখন আল্লাহ্কে এমনভাবে স্মরণ করিবে যেমন তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষগণকে স্মরণ করিতে, অথবা তদপেক্ষা অভিনিবেশ সহকারে। মানুষের মধ্যে যাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালেই দাও’, বস্তুত পরকালে তাহাদের জন্য কোন অংশ নাই।
وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّقُوۡلُ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِى الدُّنۡيَا حَسَنَةً وَّفِى الۡاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
২-২০১ : আর তাহাদের মধ্যে যাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখিরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর - ’
اُولٰٓٮِٕكَ لَهُمۡ نَصِيۡبٌ مِّمَّا كَسَبُوۡا ؕ وَاللّٰهُ سَرِيۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۲۰۲﴾
২-২০২ : তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহার প্রাপ্য অংশ তাহাদেরই। বস্তুত আল্লাহ্ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।
وَاذۡكُرُوا اللّٰهَ فِىۡٓ اَيَّامٍ مَّعۡدُوۡدٰتٍؕ فَمَنۡ تَعَجَّلَ فِىۡ يَوۡمَيۡنِ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَيۡهِ ۚ وَمَنۡ تَاَخَّرَ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَيۡهِ ۙ لِمَنِ اتَّقٰى ؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّکُمۡ اِلَيۡهِ تُحۡشَرُوۡنَ﴿۲۰۳﴾
২-২০৩ : তোমরা নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনগুলিতে আল্লাহ্কে স্মরণ করিবে। যদি কেহ তাড়াতাড়ি করিয়া দুই দিনে চলিয়া আসে তবে তাহার কোন পাপ নাই, আর যদি কেহ বিলম্ব করে তবে তাহারও কোন পাপ নাই। ইহা তাহার জন্য, যে তাক্ওয়া অবলম্বন করে। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, তোমাদেরকে অবশ্যই তাঁহার নিকট একত্র করা হইবে।
وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يُّعۡجِبُكَ قَوۡلُهٗ فِى الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا وَيُشۡهِدُ اللّٰهَ عَلٰى مَا فِىۡ قَلۡبِهٖۙ وَهُوَ اَلَدُّ الۡخِصَامِ ﴿۲۰۴﴾
২-২০৪ : আর মানুষের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে, পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যাহার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করে এবং তাহার অন্তরে যাহা আছে সে সম্বন্ধে আল্লাহ্কে সাক্ষী রাখে। প্রকৃতপক্ষে সে ভীষণ কলহপ্রিয়।
وَاِذَا تَوَلّٰى سَعٰى فِى الۡاَرۡضِ لِيُفۡسِدَ فِيۡهَا وَيُهۡلِكَ الۡحَـرۡثَ وَالنَّسۡلَؕ وَاللّٰهُ لَا يُحِبُّ الۡفَسَادَ﴿۲۰۵﴾
২-২০৫ : যখন সে প্রস্থান করে তখন সে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু নিপাতের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ্ অশান্তি পছন্দ করেন না।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُ اتَّقِ اللّٰهَ اَخَذَتۡهُ الۡعِزَّةُ بِالۡاِثۡمِ فَحَسۡبُهٗ جَهَنَّمُؕ وَلَبِئۡسَ الۡمِهَادُ﴿۲۰۶﴾
২-২০৬ : যখন তাহাকে বলা হয়, ‘তুমি আল্লাহ্কে ভয় কর’, তখন তাহার আত্মাভিমান তাহাকে পাপানুষ্ঠানে লিপ্ত করে, সুতরাং জাহান্নামই তাহার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয়ই উহা নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল।
وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يَّشۡرِىۡ نَفۡسَهُ ابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ رَءُوۡفٌ ۢ بِالۡعِبَادِ﴿۲۰۷﴾
২-২০৭ : মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভার্থে আত্ম - বিক্রয় করিয়া থাকে। আল্লাহ্ তাঁহার বান্দাগণের প্রতি অত্যন্ত দয়ার্দ্র।
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِى السِّلۡمِ کَآفَّةً وَلَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّيۡطٰنِؕ اِنَّهٗ لَـکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِيۡنٌ ﴿۲۰۸﴾
২-২০৮ : হে মু’মিনগণ! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করিও না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
فَاِنۡ زَلَـلۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡکُمُ الۡبَيِّنٰتُ فَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ عَزِيۡزٌ حَکِيۡمٌ﴿۲۰۹﴾
২-২০৯ : সুস্পষ্ট নিদর্শন তোমাদের নিকট আসিবার পর যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তবে জানিয়া রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
هَلۡ يَنۡظُرُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ يَّاۡتِيَهُمُ اللّٰهُ فِىۡ ظُلَلٍ مِّنَ الۡغَمَامِ وَالۡمَلٰٓٮِٕکَةُ وَقُضِىَ الۡاَمۡرُؕ وَاِلَى اللّٰهِ تُرۡجَعُ الۡاُمُوۡرُ﴿۲۱۰﴾
২-২১০ : তাহারা শুধু ইহার প্রতীক্ষায় রহিয়াছে যে, আল্লাহ্ ও ফিরিশতাগণ মেঘের ছায়ায় তাহাদের নিকট উপস্থিত হইবেন, তৎপর সব কিছুর মীমাংসা হইয়া যাইবে। সমস্ত বিষয় আল্লাহ্রই নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে।
سَلۡ بَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ كَمۡ اٰتَيۡنٰهُمۡ مِّنۡ اٰيَةٍۢ بَيِّنَةٍ ؕ وَمَنۡ يُّبَدِّلۡ نِعۡمَةَ اللّٰهِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُ فَاِنَّ اللّٰهَ شَدِيۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۲۱۱﴾
২-২১১ : বনী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা কর, আমি তাহাদেরকে কত স্পষ্ট নিদর্শন প্রদান করিয়াছি! আল্লাহ্র অনুগ্রহ আসিবার পর কেহ উহার পরিবর্তন করিলে আল্লাহ্ তো শাস্তিদানে কঠোর।
زُيِّنَ لِلَّذِيۡنَ كَفَرُوا الۡحَيٰوةُ الدُّنۡيَا وَيَسۡخَرُوۡنَ مِنَ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا ۘ وَالَّذِيۡنَ اتَّقَوۡا فَوۡقَهُمۡ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ ؕ وَاللّٰهُ يَرۡزُقُ مَنۡ يَّشَآءُ بِغَيۡرِ حِسَابٍ ﴿۲۱۲﴾
২-২১২ : যাহারা কুফরী করে তাহাদের নিকট পার্থিব জীবন সুশোভিত করা হইয়াছে, তাহারা মু’মিনদেরকে ঠাট্টা - বিদ্রুপ করিয়া থাকে। আর যাহারা তাক্ওয়া অবলম্বন করে কিয়ামতের দিন তাহারা তাহাদের ঊর্ধ্বে থাকিবে। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিযিক দান করেন।
كَانَ النَّاسُ اُمَّةً وَّاحِدَةً فَبَعَثَ اللّٰهُ النَّبِيّٖنَ مُبَشِّرِيۡنَ وَمُنۡذِرِيۡنَ وَاَنۡزَلَ مَعَهُمُ الۡكِتٰبَ بِالۡحَـقِّ لِيَحۡكُمَ بَيۡنَ النَّاسِ فِيۡمَا اخۡتَلَفُوۡا فِيۡهِ ؕ وَمَا اخۡتَلَفَ فِيۡهِ اِلَّا الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡهُ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ الۡبَيِّنٰتُ بَغۡيًا ۢ بَيۡنَهُمۡۚ فَهَدَى اللّٰهُ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَا اخۡتَلَفُوۡا فِيۡهِ مِنَ الۡحَـقِّ بِاِذۡنِهٖ ؕ وَاللّٰهُ يَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ ﴿۲۱۳﴾
২-২১৩ : সমস্ত মানুষ ছিল একই উম্মত। অতঃপর আল্লাহ্ নবীগণকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করিত তাহাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাহাদের সঙ্গে সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেন এবং যাহাদেরকে তাহা দেওয়া হইয়াছিল, স্পষ্ট নিদর্শন তাহাদের নিকট আসিবার পরে, তাহারা শুধু পরস্পর বিদ্বেষবশত সেই বিষয়ে বিরোধিতা করিত। যাহারা বিশ্বাস করে, তাহারা যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করিত, আল্লাহ্ তাহাদেরকে সে বিষয়ে নিজ অনুগ্রহে সত্যপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَـنَّةَ وَ لَمَّا يَاۡتِكُمۡ مَّثَلُ الَّذِيۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِكُمۡؕ مَسَّتۡهُمُ الۡبَاۡسَآءُ وَالضَّرَّآءُ وَزُلۡزِلُوۡا حَتّٰى يَقُوۡلَ الرَّسُوۡلُ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ مَتٰى نَصۡرُ اللّٰهِؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصۡرَ اللّٰهِ قَرِيۡبٌ ﴿۲۱۴﴾
২-২১৪ : তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করিবে - যদিও এখনও তোমাদের নিকট তোমাদের পূর্ববর্তীদের অনুরূপ অবস্থা আসে নাই? অর্থ - সংকট ও দুঃখ - ক্লেশ তাহাদেরকে স্পর্শ করিয়াছিল এবং তাহারা ভীত ও কম্পিত হইয়াছিল। এমনকি রাসূল এবং তাঁহার সঙ্গে ঈমান আনয়নকারিগণ বলিয়া উঠিয়াছিল, ‘আল্লাহ্র সাহায্য কখন আসিবে?’ জানিয়া রাখ, অবশ্যই আল্লাহ্র সাহায্য নিকটে।
يَسۡـــَٔلُوۡنَكَ مَاذَا يُنۡفِقُوۡنَ ؕ قُلۡ مَآ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ خَيۡرٍ فَلِلۡوَالِدَيۡنِ وَالۡاَقۡرَبِيۡنَ وَالۡيَتٰمٰى وَالۡمَسٰكِيۡنِ وَابۡنِ السَّبِيۡلِؕ وَمَا تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِيۡمٌ﴿۲۱۵﴾
২-২১৫ : লোকে কি ব্যয় করিবে সে সম্বন্ধে তোমাকে প্রশ্ন করে। বল, ‘যে ধন - সম্পদ তোমরা ব্যয় করিবে তাহা পিতামাতা, আত্মীয় - স্বজন, ইয়াতীম, মিস্কীন এবং মুসাফিরদের জন্য। উত্তম কাজের যাহা কিছু তোমরা কর না কেন আল্লাহ্ তো সে সম্বন্ধে সম্যক অবহিত।
كُتِبَ عَلَيۡکُمُ الۡقِتَالُ وَهُوَ كُرۡهٌ لَّـكُمۡۚ وَعَسٰۤى اَنۡ تَكۡرَهُوۡا شَيۡـــًٔا وَّهُوَ خَيۡرٌ لَّـکُمۡۚ وَعَسٰۤى اَنۡ تُحِبُّوۡا شَيۡـــًٔا وَّهُوَ شَرٌّ لَّـكُمۡؕ وَاللّٰهُ يَعۡلَمُ وَاَنۡـتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ﴿۲۱۶﴾
২-২১৬ : তোমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেওয়া হইল যদিও তোমাদের নিকট ইহা অপ্রিয়। কিন্তু তোমরা যাহা অপসন্দ কর সম্ভবত তাহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যাহা ভালবাস সম্ভবত তাহা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ্ জানেন আর তোমরা জান না।
يَسۡـــَٔلُوۡنَكَ عَنِ الشَّهۡرِ الۡحَـرَامِ قِتَالٍ فِيۡهِؕ قُلۡ قِتَالٌ فِيۡهِ كَبِيۡرٌ ؕ وَصَدٌّ عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَ کُفۡرٌ ۢ بِهٖ وَالۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِ وَاِخۡرَاجُ اَهۡلِهٖ مِنۡهُ اَكۡبَرُ عِنۡدَ اللّٰهِ ۚ وَالۡفِتۡنَةُ اَکۡبَرُ مِنَ الۡقَتۡلِؕ وَلَا يَزَالُوۡنَ يُقَاتِلُوۡنَكُمۡ حَتّٰى يَرُدُّوۡكُمۡ عَنۡ دِيۡـنِکُمۡ اِنِ اسۡتَطَاعُوۡا ؕ وَمَنۡ يَّرۡتَدِدۡ مِنۡكُمۡ عَنۡ دِيۡـنِهٖ فَيَمُتۡ وَهُوَ کَافِرٌ فَاُولٰٓٮِٕكَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُهُمۡ فِى الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِ ۚ وَاُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۲۱۷﴾
২-২১৭ : পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে লোকে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে; বল, ‘উহাতে যুদ্ধ করা ভীষণ অন্যায়।’ কিন্তু আল্লাহ্র পথে বাধা দান করা, আল্লাহ্কে অস্বীকার করা, মসজিদুল হারামে বাধা দেওয়া এবং উহার বাসিন্দাকে উহা হইতে বহিষ্কার করা আল্লাহ্র নিকট তদপেক্ষা অধিক অন্যায়; ফিতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর অন্যায়।’ তাহারা সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে থাকিবে যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দীন হইতে ফিরাইয়া না দেয়, যদি তাহারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে কেহ স্বীয় দীন হইতে ফিরিয়া যায় এবং কাফিররূপে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাহাদের কর্ম নিষ্ফল হইয়া যায়। ইহারাই দোজখবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
اِنَّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَالَّذِيۡنَ هَاجَرُوۡا وَجَاهَدُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِۙ اُولٰٓٮِٕكَ يَرۡجُوۡنَ رَحۡمَتَ اللّٰهِؕ وَاللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۲۱۸﴾
২-২১৮ : যাহারা ঈমান আনে এবং যাহারা আল হিজরত করে এবং জিহাদ করে আল্লাহ্র পথে, তাহারাই আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে। আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।
يَسۡـــَٔلُوۡنَكَ عَنِ الۡخَمۡرِ وَالۡمَيۡسِرِؕ قُلۡ فِيۡهِمَآ اِثۡمٌ کَبِيۡرٌ وَّمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَاِثۡمُهُمَآ اَکۡبَرُ مِنۡ نَّفۡعِهِمَا ؕ وَيَسۡـــَٔلُوۡنَكَ مَاذَا يُنۡفِقُوۡنَؕ قُلِ الۡعَفۡوَؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَـكُمُ الۡاٰيٰتِ لَعَلَّکُمۡ تَتَفَكَّرُوۡنَۙ﴿۲۱۹﴾
২-২১৯ : লোকে তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘উভয়ের মধ্যে আছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য উপকারও; কিন্তু উহাদের পাপ উপকার অপেক্ষা অধিক।’ লোকে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, কী তাহারা ব্যয় করিবে? বল, ‘যাহা উদ্বৃত্ত।’ এইভাবে আল্লাহ্ তাঁহার বিধান তোমাদের জন্য সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত করেন, যাহাতে তোমরা চিন্তা কর -
فِى الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِؕ وَيَسۡـــَٔلُوۡنَكَ عَنِ الۡيَتٰمٰىؕ قُلۡ اِصۡلَاحٌ لَّهُمۡ خَيۡرٌ ؕ وَاِنۡ تُخَالِطُوۡهُمۡ فَاِخۡوَانُكُمۡؕ وَاللّٰهُ يَعۡلَمُ الۡمُفۡسِدَ مِنَ الۡمُصۡلِحِؕ وَلَوۡ شَآءَ اللّٰهُ لَاَعۡنَتَكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِيۡزٌ حَكِيۡمٌ﴿۲۲۰﴾
২-২২০ : দুনিয়া ও আখিরাত সম্বন্ধে। লোকে তোমাকে ইয়াতীমদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে; বল, ‘তাহাদের জন্য সুব্যবস্থা করা উত্তম।’ তোমরা যদি তাহাদের সঙ্গে একত্র থাক তবে তাহারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ্ জানেন কে হিতকারী এবং কে অনিষ্টকারী। আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে এ বিষয়ে তোমাদেরকে অবশ্যই কষ্টে ফেলিতে পারিতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
وَلَا تَنۡكِحُوا الۡمُشۡرِكٰتِ حَتّٰى يُؤۡمِنَّؕ وَلَاَمَةٌ مُّؤۡمِنَةٌ خَيۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِكَةٍ وَّلَوۡ اَعۡجَبَتۡكُمۡۚ وَلَا تُنۡكِحُوا الۡمُشۡرِكِيۡنَ حَتّٰى يُؤۡمِنُوۡا ؕ وَلَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَيۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِكٍ وَّلَوۡ اَعۡجَبَكُمۡؕ اُولٰٓٮِٕكَ يَدۡعُوۡنَ اِلَى النَّارِ ۖۚ وَاللّٰهُ يَدۡعُوۡٓا اِلَى الۡجَـنَّةِ وَالۡمَغۡفِرَةِ بِاِذۡنِهٖۚ وَيُبَيِّنُ اٰيٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ يَتَذَكَّرُوۡنَ ﴿۲۲۱﴾
২-২২১ : ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক নারীকে তোমরা বিবাহ করিও না - মুশরিক নারী তোমাদেরকে মুগ্ধ করিলেও, নিশ্চয় মু’মিন ক্রীতদাসী তাহা অপেক্ষা উত্তম। ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক পুরুষের সঙ্গে তোমরা বিবাহ দিও না - মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করিলেও, মু’মিন ক্রীতদাস তাহা অপেক্ষা উত্তম। উহারা অগ্নির দিকে আহ্বান করে এবং আল্লাহ্ তোমাদেরকে নিজ অনুগ্রহে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহ্বান করেন। তিনি মানুষের জন্য স্বীয় বিধান সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাহাতে তাহারা উহা হইতে শিক্ষা গ্রহণ করিতে পারে।
وَ يَسۡـــَٔلُوۡنَكَ عَنِ الۡمَحِيۡضِۙ قُلۡ هُوَ اَذًى فَاعۡتَزِلُوۡا النِّسَآءَ فِى الۡمَحِيۡضِۙ وَلَا تَقۡرَبُوۡهُنَّ حَتّٰى يَطۡهُرۡنَۚ فَاِذَا تَطَهَّرۡنَ فَاۡتُوۡهُنَّ مِنۡ حَيۡثُ اَمَرَكُمُ اللّٰهُؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيۡنَ وَيُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِيۡنَ﴿۲۲۲﴾
২-২২২ : লোকে তোমাকে রজঃস্রাব সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘উহা অশুচি।’ সুতরাং তোমরা রজঃস্রাবকালে স্ত্রী - সংগম বর্জন করিবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী - সংগম করিবে না। অতঃপর তাহারা যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হইবে তখন তাহাদের নিকট ঠিক সেইভাবে গমন করিবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে আদেশ দিয়াছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবাকারীকে ভালবাসেন এবং যাহারা পবিত্র থাকে তাহাদেরকেও ভালবাসেন।
نِسَآؤُكُمۡ حَرۡثٌ لَّـكُمۡ فَاۡتُوۡا حَرۡثَكُمۡ اَنّٰى شِئۡتُمۡ وَقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِكُمۡؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّکُمۡ مُّلٰقُوۡهُ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ ﴿۲۲۳﴾
২-২২৩ : তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করিতে পার। তোমরা তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু করিও এবং আল্লাহ্কেও ভয় করিও। আর জানিয়া রাখিও যে, তোমরা আল্লাহ্র সম্মুখীন হইতে যাইতেছ এবং মু’মিনগণকে সুসংবাদ দাও।
وَلَا تَجۡعَلُوا اللّٰهَ عُرۡضَةً لِّاَيۡمَانِکُمۡ اَنۡ تَبَرُّوۡا وَتَتَّقُوۡا وَتُصۡلِحُوۡا بَيۡنَ النَّاسِؕ وَاللّٰهُ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ ﴿۲۲۴﴾
২-২২৪ : তোমরা সৎকাজ, আত্মসংযম ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন হইতে বিরত রহিবে - এই শপথের জন্য আল্লাহ্র নামকে তোমরা অজুহাত করিও না। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞা।
لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِىۡٓ اَيۡمَانِكُمۡ وَلٰـكِنۡ يُّؤَاخِذُكُمۡ بِمَا كَسَبَتۡ قُلُوۡبُكُمۡؕ وَاللّٰهُ غَفُوۡرٌ حَلِيۡمٌ ﴿۲۲۵﴾
২-২২৫ : তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ্ তোমাদেরকে দায়ী করিবেন না। কিন্তু তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করিবেন। আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, ধৈর্যশীল।
لِّـلَّذِيۡنَ يُؤۡلُوۡنَ مِنۡ نِّسَآٮِٕهِمۡ تَرَبُّصُ اَرۡبَعَةِ اَشۡهُرٍۚ فَاِنۡ فَآءُوۡ فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۲۲۶﴾
২-২২৬ : যাহারা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত না হওয়ার শপথ করে তাহারা চার মাস অপেক্ষা করিবে। অতঃপর যদি তাহারা প্রত্যাগত হয় তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَاِنۡ عَزَمُوا الطَّلَاقَ فَاِنَّ اللّٰهَ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ ﴿۲۲۷﴾
২-২২৭ : আর যদি তাহারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে তবে আল্লাহ্ তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَالۡمُطَلَّقٰتُ يَتَرَ بَّصۡنَ بِاَنۡفُسِهِنَّ ثَلٰثَةَ قُرُوۡٓءٍ ؕ وَلَا يَحِلُّ لَهُنَّ اَنۡ يَّكۡتُمۡنَ مَا خَلَقَ اللّٰهُ فِىۡٓ اَرۡحَامِهِنَّ اِنۡ كُنَّ يُؤۡمِنَّ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ وَبُعُوۡلَتُهُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِىۡ ذٰ لِكَ اِنۡ اَرَادُوۡٓا اِصۡلَاحًا ؕ وَلَهُنَّ مِثۡلُ الَّذِىۡ عَلَيۡهِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٌ ؕ وَاللّٰهُ عَزِيۡزٌ حَكِيۡمٌ ﴿۲۲۸﴾
২-২২৮ : তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী তিন রজঃস্রাব কাল প্রতীক্ষায় থাকিবে। তাহারা আল্লাহ্ এবং আখিরাতে বিশ্বাসী হইলে তাহাদের গর্ভাশয়ে আল্লাহ্ যাহা সৃষ্টি করিয়াছেন তাহা গোপন রাখা তাহাদের পক্ষে বৈধ নহে। যদি তাহারা আপোস - নিষ্পত্তি করিতে চায় তবে উহাতে তাহাদের পুনঃ গ্রহণে তাহাদের স্বামিগণ অধিক হকদার। নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাহাদের উপর পুরুষদের ; কিন্তু নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে। আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ فَاِمۡسَاكٌ ۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِيۡحٌ ۢ بِاِحۡسَانٍ ؕوَلَا يَحِلُّ لَـکُمۡ اَنۡ تَاۡخُذُوۡا مِمَّآ اٰتَيۡتُمُوۡهُنَّ شَيۡـــًٔا اِلَّاۤ اَنۡ يَّخَافَآ اَ لَّا يُقِيۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِؕ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَ لَّا يُقِيۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَا فِيۡمَا افۡتَدَتۡ بِهٖؕ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَعۡتَدُوۡهَا ۚ وَمَنۡ يَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ﴿۲۲۹﴾
২-২২৯ : তালাক দুইবার। অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিমত রাখিয়া দিবে অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করিয়া দিবে। তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে যাহা প্রদান করিয়াছ তন্মধ্য হইতে কোন কিছু গ্রহণ করা তোমাদের পক্ষে বৈধ নহে। অবশ্য যদি তাহাদের উভয়ের আশংকা হয় যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না, তবে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে নিষ্কৃতি পাইতে চাহিলে তাহাতে তাহাদের কাহারও কোন অপরাধ নাই। এইসব আল্লাহ্র সীমারেখা। তোমরা উহা লংঘন করিও না। যাহারা এইসব সীমারেখা লংঘন করে তাহারাই জালিম।
فَاِنۡ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنۡۢ بَعۡدُ حَتّٰى تَنۡكِحَ زَوۡجًا غَيۡرَهٗ ؕ فَاِنۡ طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَآ اَنۡ يَّتَرَاجَعَآ اِنۡ ظَنَّآ اَنۡ يُّقِيۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِؕ وَتِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوۡمٍ يَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۰﴾
২-২৩০ : অতঃপর যদি সে তাহাকে তালাক দেয় তবে সে তাহার জন্য বৈধ হইবে না, যে পর্যন্ত সে অন্য স্বামীর সঙ্গে সংগত না হইবে। অতঃপর সে যদি তাহাকে তালাক দেয় আর তাহারা উভয়ে মনে করে যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিতে সমর্থ হইবে, তবে তাহাদের পুনর্মিলনে কাহারও কোন অপরাধ হইবে না। এইগুলি আল্লাহ্র বিধান, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ্ ইহা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন।
وَاِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمۡسِكُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ سَرِّحُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ وَلَا تُمۡسِكُوۡهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعۡتَدُوۡا ۚ وَمَنۡ يَّفۡعَلۡ ذٰ لِكَ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ ؕ وَلَا تَتَّخِذُوۡٓا اٰيٰتِ اللّٰهِ هُزُوًا وَّاذۡكُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰهِ عَلَيۡكُمۡ وَمَآ اَنۡزَلَ عَلَيۡكُمۡ مِّنَ الۡكِتٰبِ وَالۡحِكۡمَةِ يَعِظُكُمۡ بِهٖؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمٌ ﴿۲۳۱﴾
২-২৩১ : যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও এবং তাহারা ইদ্দত পূর্তির নিকটবর্তী হয় তখন তোমরা হয় যথাবিধি তাহাদেরকে রাখিয়া দিবে অথবা বিধিমত মুক্ত করিয়া দিবে। কিন্তু তাহাদের ক্ষতি করিয়া সীমালংঘনের উদ্দেশ্যে তাহাদেরকে তোমরা আটকাইয়া রাখিও না। যে এইরূপ করে, সে নিজের প্রতি জুলুম করে। এবং তোমরা আল্লাহ্র বিধানকে ঠাট্টা - তামাশার বস্তু করিও না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র নিয়ামত ও কিতাব এবং হিক্মত যাহা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন - যদ্দ্বারা তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, তাহা স্মরণ কর। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে জ্ঞানময়।
وَاِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا تَعۡضُلُوۡهُنَّ اَنۡ يَّنۡكِحۡنَ اَزۡوَاجَهُنَّ اِذَا تَرَاضَوۡا بَيۡنَهُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِؕ ذٰ لِكَ يُوۡعَظُ بِهٖ مَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ يُؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ ذٰ لِكُمۡ اَزۡکٰى لَـكُمۡ وَاَطۡهَرُؕ وَاللّٰهُ يَعۡلَمُ وَاَنۡـتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۲﴾
২-২৩২ : তোমরা যখন স্ত্রীদের তালাক দাও এবং তাহারা তাহাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করে, তাহারা যদি বিধিমত পরস্পর সম্মত হয়, তবে স্ত্রীগণ নিজেদের স্বামীদেরকে বিবাহ করিতে চাহিলে তোমরা তাহাদেরকে বাধা দিও না। ইহা দ্বারা তোমাদের মধ্যে যে কেহ আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান রাখে, তাহাকে উপদেশ দেওয়া হয়। ইহা তোমাদের জন্য শুদ্ধতম ও পবিত্রতম। আল্লাহ্ জানেন, তোমরা জান না।
وَالۡوَالِدٰتُ يُرۡضِعۡنَ اَوۡلَادَهُنَّ حَوۡلَيۡنِ كَامِلَيۡنِ لِمَنۡ اَرَادَ اَنۡ يُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ ؕ وَعَلَى الۡمَوۡلُوۡدِ لَهٗ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِؕ لَا تُكَلَّفُ نَفۡسٌ اِلَّا وُسۡعَهَا ۚ لَا تُضَآرَّ وَالِدَةٌ ۢ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوۡلُوۡدٌ لَّهٗ بِوَلَدِهٖ وَعَلَى الۡوَارِثِ مِثۡلُ ذٰ لِكَ ۚ فَاِنۡ اَرَادَا فِصَالًا عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡهُمَا وَتَشَاوُرٍ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَا ؕ وَاِنۡ اَرَدْتُّمۡ اَنۡ تَسۡتَرۡضِعُوۡٓا اَوۡلَادَكُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ اِذَا سَلَّمۡتُمۡ مَّآ اٰتَيۡتُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِيۡرٌ﴿۲۳۳﴾
২-২৩৩ : যে স্তন্যপানকাল পূর্ণ করিতে চাহে তাহার জন্য জননীগণ তাহাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বৎসর স্তন্যপান করাইবে। জনকের কর্তব্য যথাবিধি তাহাদের ভরণ - পোষণ করা। কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত কার্যভার দেওয়া হয় না। কোন জননীকে তাহার সন্তানের জন্য এবং কোন জনককে তাহার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হইবে না। এবং উত্তরাধিকারীরও অনুরূপ কর্তব্য। কিন্তু যদি তাহারা পরস্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্যপান বন্ধ রাখিতে চায় তবে তাহাদের কাহারও কোন অপরাধ নাই। তোমরা যাহা বিধিমত দিতে চাহিয়াছিলে, তাহা যদি অর্পণ কর তবে ধাত্রী দ্বারা তোমাদের সন্তানকে স্তন্যপান করাইতে চাহিলে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ উহার সম্যক দ্রষ্টা।
وَالَّذِيۡنَ يُتَوَفَّوۡنَ مِنۡكُمۡ وَيَذَرُوۡنَ اَزۡوَاجًا يَّتَرَبَّصۡنَ بِاَنۡفُسِهِنَّ اَرۡبَعَةَ اَشۡهُرٍ وَّعَشۡرًا ۚ فَاِذَا بَلَغۡنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِيۡمَا فَعَلۡنَ فِىۡٓ اَنۡفُسِهِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِؕ وَاللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِيۡرٌ ﴿۲۳۴﴾
২-২৩৪ : তোমাদের মধ্যে যাহারা স্ত্রী রাখিয়া মৃত্যুমুখে পতিত হয় তাহাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকিবে। যখন তাহারা তাহাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করিবে তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যাহা করিবে তাহাতে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
وَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِيۡمَا عَرَّضۡتُمۡ بِهٖ مِنۡ خِطۡبَةِ النِّسَآءِ اَوۡ اَکۡنَنۡتُمۡ فِىۡٓ اَنۡفُسِكُمۡؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّكُمۡ سَتَذۡكُرُوۡنَهُنَّ وَلٰـكِنۡ لَّا تُوَاعِدُوۡهُنَّ سِرًّا اِلَّاۤ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا ؕ وَلَا تَعۡزِمُوۡا عُقۡدَةَ النِّکَاحِ حَتّٰى يَبۡلُغَ الۡكِتٰبُ اَجَلَهٗ ؕ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ يَعۡلَمُ مَا فِىۡٓ اَنۡفُسِكُمۡ فَاحۡذَرُوۡهُ ؕ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ حَلِيۡمٌ ﴿۲۳۵﴾
২-২৩৫ : স্ত্রীলোকদের নিকট তোমরা ইংগিতে বিবাহ প্রস্তাব করিলে অথবা তোমাদের অন্তরে গোপন রাখিলে তোমাদের কোন পাপ নাই। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা তাহাদের সম্বন্ধে অবশ্যই আলোচনা করিবে; কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ব্যতীত গোপনে তাহাদের নিকট কোন অঙ্গীকার করিও না; নির্দিষ্ট কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহকার্য সম্পন্ন করার সংকল্প করিও না। এবং জানিয়া রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের মনোভাব জানেন। সুতরাং তাঁহাকে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম সহনশীল।
لَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ اِنۡ طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ مَا لَمۡ تَمَسُّوۡهُنَّ اَوۡ تَفۡرِضُوۡا لَهُنَّ فَرِيۡضَةً ۖۚ وَّمَتِّعُوۡهُنَّ ۚ عَلَى الۡمُوۡسِعِ قَدَرُهٗ وَ عَلَى الۡمُقۡتِرِ قَدَرُهٗ ۚ مَتَاعًا ۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِۚ حَقًّا عَلَى الۡمُحۡسِنِيۡنَ ﴿۲۳۶﴾
২-২৩৬ : যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করিয়াছ এবং তাহাদের জন্য মাহ্র ধার্য করিয়াছ তাহাদেরকে তালাক দিলে তোমাদের কোন পাপ নাই। তোমরা তাহাদের সংস্থানের ব্যবস্থা করিও - সচ্ছল তাহার সাধ্যমত এবং অসচ্ছল তাহার সামর্থ্যানুযায়ী বিধিমত খরচপত্রের ব্যবস্থা করিবে, ইহা নেককার লোকদের কর্তব্য।
وَاِنۡ طَلَّقۡتُمُوۡهُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡهُنَّ وَقَدۡ فَرَضۡتُمۡ لَهُنَّ فَرِيۡضَةً فَنِصۡفُ مَا فَرَضۡتُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ يَّعۡفُوۡنَ اَوۡ يَعۡفُوَا الَّذِىۡ بِيَدِهٖ عُقۡدَةُ النِّكَاحِ ؕ وَاَنۡ تَعۡفُوۡٓا اَقۡرَبُ لِلتَّقۡوٰىؕ وَ لَا تَنۡسَوُا الۡفَضۡلَ بَيۡنَكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِيۡرٌ ﴿۲۳۷﴾
২-২৩৭ : তোমরা যদি তাহাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দাও, অথচ মাহ্র ধার্য করিয়া থাক তবে যাহা তোমরা ধার্য করিয়াছ তাহার অর্ধেক, যদি না স্ত্রী অথবা যাহার হাতে বিবাহ - বন্ধন রহিয়াছে সে মাফ করিয়া দেয়; এবং মাফ করিয়া দেওয়াই তাক্ওয়ার নিকটতর। তোমরা নিজেদের মধ্যে সদাশয়তার কথা বিস্মৃত হইও না। তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাহার সম্যক দ্রষ্টা।
حَافِظُوۡا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلٰوةِ الۡوُسۡطٰى وَقُوۡمُوۡا لِلّٰهِ قٰنِتِيۡنَ﴿۲۳۸﴾
২-২৩৮ : তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হইবে, বিশেষত মধ্যবর্তী সালাতের এবং আল্লাহ্র উদ্দেশে তোমরা বিনীতভাবে দাঁড়াইবে;
فَاِنۡ خِفۡتُمۡ فَرِجَالًا اَوۡ رُكۡبَانًا ۚ فَاِذَآ اَمِنۡتُمۡ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ کَمَا عَلَّمَکُمۡ مَّا لَمۡ تَكُوۡنُوۡا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۹﴾
২-২৩৯ : যদি তোমরা আশংকা কর তবে পদচারী অথবা আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করিবে। আর যখন তোমরা নিরাপদ বোধ কর তখন আল্লাহ্কে স্মরণ করিবে, যেভাবে তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়াছেন, যাহা তোমরা জানিতে না।
وَالَّذِيۡنَ يُتَوَفَّوۡنَ مِنۡکُمۡ وَيَذَرُوۡنَ اَزۡوَاجًا ۖۚ وَّصِيَّةً لِّاَزۡوَاجِهِمۡ مَّتَاعًا اِلَى الۡحَـوۡلِ غَيۡرَ اِخۡرَاجٍ ۚ فَاِنۡ خَرَجۡنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡکُمۡ فِىۡ مَا فَعَلۡنَ فِىۡٓ اَنۡفُسِهِنَّ مِنۡ مَّعۡرُوۡفٍؕ وَاللّٰهُ عَزِيۡزٌ حَکِيۡمٌ ﴿۲۴۰﴾
২-২৪০ : তোমাদের মধ্যে যাহাদের মৃত্যু আসন্ন এবং স্ত্রী রাখিয়া যায় তাহারা যেন তাহাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ হইতে বহিষ্কার না করিয়া তাহাদের এক বৎসরের ভরণ - পোষণের ওসিয়াত করে। কিন্তু যদি তাহারা বাহির হইয়া যায় তবে বিধিমত নিজেদের জন্য তাহারা যাহা করিবে তাহাতে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَلِلۡمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌ ۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ حَقًّا عَلَى الۡمُتَّقِيۡنَ﴿۲۴۱﴾
২-২৪১ : তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে যথারীতি ভরণ - পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য।
كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَـکُمۡ اٰيٰتِهٖ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ﴿۲۴۲﴾
২-২৪২ : এইভাবে আল্লাহ্ তাঁহার বিধান স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাহাতে তোমরা বুঝিতে পার।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ خَرَجُوۡا مِنۡ دِيَارِهِمۡ وَهُمۡ اُلُوۡفٌ حَذَرَ الۡمَوۡتِ فَقَالَ لَهُمُ اللّٰهُ مُوۡتُوۡا ثُمَّ اَحۡيَاھُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَى النَّاسِ وَلٰـكِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا يَشۡکُرُوۡنَ﴿۲۴۳﴾
২-২৪৩ : তুমি কি তাহাদেরকে দেখ নাই যাহারা মৃত্যুভয়ে হাজারে হাজারে স্বীয় আবাসভূমি পরিত্যাগ করিয়াছিল ? অতঃপর আল্লাহ্ তাহাদেরকে বলিয়াছিলেন, ‘তোমাদের মৃত্যু হউক।’ তারপর আল্লাহ্ তাহাদের জীবিত করিয়াছিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
وَقَاتِلُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَاعۡلَمُوۡٓا اَنَّ اللّٰهَ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ﴿۲۴۴﴾
২-২৪৪ : তোমরা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
مَنۡ ذَا الَّذِىۡ يُقۡرِضُ اللّٰهَ قَرۡضًا حَسَنًا فَيُضٰعِفَهٗ لَهٗۤ اَضۡعَافًا کَثِيۡرَةً ؕ وَاللّٰهُ يَقۡبِضُ وَيَبۡصُۜطُ وَ اِلَيۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۲۴۵﴾
২-২৪৫ : কে সে, যে আল্লাহ্কে করযে হাসানা প্রদান করিবে ? তিনি তাহার জন্য ইহা বহুগুণে বৃদ্ধি করিবেন। আর আল্লাহ্ সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন এবং তাঁহার পানেই তোমরা প্রত্যানীত হইবে।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الۡمَلَاِ مِنۡۢ بَنِىۡٓ اِسۡرَآءِيۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مُوۡسٰىۘ اِذۡ قَالُوۡا لِنَبِىٍّ لَّهُمُ ابۡعَثۡ لَنَا مَلِکًا نُّقَاتِلۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِؕ قَالَ هَلۡ عَسَيۡتُمۡ اِنۡ کُتِبَ عَلَيۡکُمُ الۡقِتَالُ اَلَّا تُقَاتِلُوۡا ؕ قَالُوۡا وَمَا لَنَآ اَلَّا نُقَاتِلَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَقَدۡ اُخۡرِجۡنَا مِنۡ دِيَارِنَا وَاَبۡنَآٮِٕنَا ؕ فَلَمَّا کُتِبَ عَلَيۡهِمُ الۡقِتَالُ تَوَلَّوۡا اِلَّا قَلِيۡلًا مِّنۡهُمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌۢ بِالظّٰلِمِيۡنَ ﴿۲۴۶﴾
২-২৪৬ : তুমি কি মূসার পরবর্তী বনী ইসরাঈল প্রধানদেরকে দেখ নাই ? তাহারা যখন তাহাদের নবীকে বলিয়াছিল, আমাদের জন্য এক রাজা নিযুক্ত কর যাহাতে আমরা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করিতে পারি।’ সে বলিল, ‘ইহা তো হইবে না যে, তোমাদের প্রতি যুদ্ধের বিধান দেওয়া হইল তখন আর তোমরা যুদ্ধ করিবে না ?’ তাহারা বলিল, ‘আমরা যখন স্ব স্ব আবাসভূমি ও স্বীয় সন্তান - সন্ততি হইতে বহিষ্কৃত হইয়াছি, তখন আল্লাহ্র পথে কেন যুদ্ধ করিব না ?’ অতঃপর যখন তাহাদের প্রতি যুদ্ধের বিধান দেওয়া হইল তখন তাহাদের স্বল্প সংখ্যক ব্যতীত সকলেই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিল। এবং আল্লাহ্ জালিমদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
وَقَالَ لَهُمۡ نَبِيُّهُمۡ اِنَّ اللّٰهَ قَدۡ بَعَثَ لَـکُمۡ طَالُوۡتَ مَلِكًا ؕ قَالُوۡٓا اَنّٰى يَكُوۡنُ لَهُ الۡمُلۡكُ عَلَيۡنَا وَنَحۡنُ اَحَقُّ بِالۡمُلۡكِ مِنۡهُ وَلَمۡ يُؤۡتَ سَعَةً مِّنَ الۡمَالِؕ قَالَ اِنَّ اللّٰهَ اصۡطَفٰٮهُ عَلَيۡکُمۡ وَزَادَهٗ بَسۡطَةً فِى الۡعِلۡمِ وَ الۡجِسۡمِؕ وَاللّٰهُ يُؤۡتِىۡ مُلۡکَهٗ مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِيۡمٌ ﴿۲۴۷﴾
২-২৪৭ : আর তাহাদের নবী তাহাদের বলিয়াছিল, আল্লাহ্ অবশ্যই তালূতকে তোমাদের রাজা করিয়াছেন। তাহারা বলিল, ‘আমাদের উপর তাহার রাজত্ব কিরূপে হইবে, যখন আমরা তাহা অপেক্ষা রাজত্বের অধিক হক্দার এবং তাহাকে প্রচুর ঐশ্বর্য দেওয়া হয় নাই!’ নবী বলিল, ‘আল্লাহ্ অবশ্যই তাহাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করিয়াছেন এবং তিনি তাহাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করিয়াছেন।’ আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।
وَقَالَ لَهُمۡ نَبِيُّهُمۡ اِنَّ اٰيَةَ مُلۡکِهٖۤ اَنۡ يَّاۡتِيَکُمُ التَّابُوۡتُ فِيۡهِ سَکِيۡنَةٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَبَقِيَّةٌ مِّمَّا تَرَكَ اٰلُ مُوۡسٰى وَاٰلُ هٰرُوۡنَ تَحۡمِلُهُ الۡمَلٰٓٮِٕكَةُ ؕ اِنَّ فِىۡ ذٰلِكَ لَاٰيَةً لَّـکُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ﴿۲۴۸﴾
২-২৪৮ : আর তাহাদের নবী তাহাদের বলিয়াছিল, ‘তাহার রাজত্বের নিদর্শন এই যে, তোমাদের নিকট সেই তাবূত আসিবে যাহাতে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে চিত্ত - প্রশান্তি এবং মূসা ও হারূন - বংশীয়গণ যাহা পরিত্যাগ করিয়াছে তাহার অবশিষ্টাংশ থাকিবে; ফিরিশতাগণ ইহা বহন করিয়া আনিবে। তোমরা যদি মু’মিন হও তবে অবশ্যই তোমাদের জন্য ইহাতে নিদর্শন আছে।’
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوۡتُ بِالۡجُـنُوۡدِۙ قَالَ اِنَّ اللّٰهَ مُبۡتَلِيۡکُمۡ بِنَهَرٍۚ فَمَنۡ شَرِبَ مِنۡهُ فَلَيۡسَ مِنِّىۡۚ وَمَنۡ لَّمۡ يَطۡعَمۡهُ فَاِنَّهٗ مِنِّىۡٓ اِلَّا مَنِ اغۡتَرَفَ غُرۡفَةً ۢ بِيَدِهٖۚ فَشَرِبُوۡا مِنۡهُ اِلَّا قَلِيۡلًا مِّنۡهُمۡؕ فَلَمَّا جَاوَزَهٗ هُوَ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ ۙ قَالُوۡا لَا طَاقَةَ لَنَا الۡيَوۡمَ بِجَالُوۡتَ وَجُنُوۡدِهٖؕ قَالَ الَّذِيۡنَ يَظُنُّوۡنَ اَنَّهُمۡ مُّلٰقُوا اللّٰهِۙ کَمۡ مِّنۡ فِئَةٍ قَلِيۡلَةٍ غَلَبَتۡ فِئَةً کَثِيۡرَةً ۢ بِاِذۡنِ اللّٰهِؕ وَاللّٰهُ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ﴿۲۴۹﴾
২-২৪৯ : অতঃপর তালূত যখন সৈন্যবাহিনীসহ বাহির হইল সে তখন বলিল, ‘আল্লাহ্ এক নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করিবেন। যে কেহ উহা হইতে পান করিবে সে আমার দলভুক্ত নহে; আর যে কেহ উহার স্বাদ গ্রহণ করিবে না সে আমার দলভুক্ত; ইহা ছাড়া যে কেহ তাহার হস্তে এক কোষ পানি গ্রহণ করিবে সেও। অতঃপর অল্প সংখ্যক ব্যতীত তাহারা উহা হইতে পান করিল। সে এবং তাহার সঙ্গী ঈমানদারগণ যখন উহা অতিক্রম করিল তখন তাহারা বলিল, ‘জালূত ও তাহার সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মত শক্তি আজ আমাদের নাই।’ কিন্তু যাহাদের প্রত্যয় ছিল আল্লাহ্র সঙ্গে তাহাদের সাক্ষাৎ ঘটিবে তাহারা বলিল, ‘আল্লাহ্র হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করিয়াছে।’ আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।
وَلَمَّا بَرَزُوۡا لِجَـالُوۡتَ وَجُنُوۡدِهٖ قَالُوۡا رَبَّنَآ اَفۡرِغۡ عَلَيۡنَا صَبۡرًا وَّثَبِّتۡ اَقۡدَامَنَا وَانۡصُرۡنَا عَلَى الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِيۡنَؕ ﴿۲۵۰﴾
২-২৫০ : তাহারা যখন যুদ্ধার্থে জালূত ও তাহার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হইল তখন তাহারা বলিল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য দান কর, আমাদের পা অবিচলিত রাখ এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য দান কর।’
فَهَزَمُوۡهُمۡ بِاِذۡنِ اللّٰهِ ۙ وَقَتَلَ دَاوٗدُ جَالُوۡتَ وَاٰتٰٮهُ اللّٰهُ الۡمُلۡكَ وَالۡحِکۡمَةَ وَعَلَّمَهٗ مِمَّا يَشَآءُ ؕ وَلَوۡلَا دَفۡعُ اللّٰهِ النَّاسَ بَعۡضَهُمۡ بِبَعۡضٍ لَّفَسَدَتِ الۡاَرۡضُ وَلٰـکِنَّ اللّٰهَ ذُوۡ فَضۡلٍ عَلَى الۡعٰلَمِيۡنَ ﴿۲۵۱﴾
২-২৫১ : সুতরাং তাহারা আল্লাহ্র হুকুমে উহাদের পরাভূত করিল ; দাউদ জালূতকে সংহার করিল, আল্লাহ্ তাহাকে রাজত্ব ও হিক্মত দান করিলেন এবং যাহা তিনি ইচ্ছা করিলেন তাহা তাহাকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করিতেন তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হইয়া যাইত। কিন্তু আল্লাহ্ জগতসমূহের প্রতি অনুগ্রহশীল।
تِلۡكَ اٰيٰتُ اللّٰهِ نَـتۡلُوۡهَا عَلَيۡكَ بِالۡحَـقِّؕ وَاِنَّكَ لَمِنَ الۡمُرۡسَلِيۡنَ﴿۲۵۲﴾
২-২৫২ : এই সকল আল্লাহ্র আয়াত, আমি তোমার নিকট উহা যথাযথভাবে তিলাওয়াত করিতেছি, আর নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্তর্ভুক্ত।
تِلۡكَ الرُّسُلُ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلٰى بَعۡضٍۘ مِنۡهُمۡ مَّنۡ كَلَّمَ اللّٰهُ وَرَفَعَ بَعۡضَهُمۡ دَرَجٰتٍؕ وَاٰتَيۡنَا عِيۡسَى ابۡنَ مَرۡيَمَ الۡبَيِّنٰتِ وَاَيَّدۡنٰهُ بِرُوۡحِ الۡقُدُسِؕ وَلَوۡ شَآءَ اللّٰهُ مَا اقۡتَتَلَ الَّذِيۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِهِمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ الۡبَيِّنٰتُ وَلٰـكِنِ اخۡتَلَفُوۡا فَمِنۡهُمۡ مَّنۡ اٰمَنَ وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ كَفَرَؕ وَلَوۡ شَآءَ اللّٰهُ مَا اقۡتَتَلُوۡا وَلٰـكِنَّ اللّٰهَ يَفۡعَلُ مَا يُرِيۡدُ﴿۲۵۳﴾
২-২৫৩ : এই রাসূলগণ, তাহাদের মধ্যে কাহাকেও কাহারও উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি। তাহাদের মধ্যে এমন কেহ রহিয়াছে যাহার সঙ্গে আল্লাহ্ কথা বলিয়াছেন, আবার কাহাকেও উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করিয়াছেন। মার্ইয়াম - তনয় ‘ঈসাকে স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান করিয়াছি ও পবিত্র আত্মা দ্বারা তাহাকে শক্তিশালী করিয়াছি। আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে তাহাদের পরবর্তীরা তাহাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ সমাগত হওয়ার পরও পারস্পরিক যুদ্ধ - বিগ্রহে লিপ্ত হইত না; কিন্তু তাহাদের মধ্যে মতভেদ ঘটিল। ফলে তাহাদের কিছুসংখ্যক ঈমান আনিল এবং কিছুসংখ্যক কুফরী করিল। আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে তাহারা পারস্পরিক যুদ্ধ - বিগ্রহে লিপ্ত হইত না; কিন্তু আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহা করেন।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡفِقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰكُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ يَّاۡتِىَ يَوۡمٌ لَّا بَيۡعٌ فِيۡهِ وَلَا خُلَّةٌ وَّلَا شَفَاعَةٌ ؕ وَالۡكٰفِرُوۡنَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۵۴﴾
২-২৫৪ : হে মু’মিনগণ! আমি যাহা তোমাদেরকে দিয়াছি তাহা হইতে তোমরা ব্যয় কর সেই দিন আসিবার পূর্বে, যেই দিন ক্রয় - বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ থাকিবে না এবং কাফিররাই জালিম।
اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡحَـىُّ الۡقَيُّوۡمُۚ لَا تَاۡخُذُهٗ سِنَةٌ وَّلَا نَوۡمٌؕ لَهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الۡاَرۡضِؕ مَنۡ ذَا الَّذِىۡ يَشۡفَعُ عِنۡدَهٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِهٖؕ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ اَيۡدِيۡهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۚ وَلَا يُحِيۡطُوۡنَ بِشَىۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَۚ وَلَا يَـــُٔوۡدُهٗ حِفۡظُهُمَا ۚ وَ هُوَ الۡعَلِىُّ الۡعَظِيۡمُ ﴿۲۵۵﴾
২-২৫৫ : আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁহাকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে সমস্ত তাঁহারই। কে সে, যে তাঁহার অনুমতি ব্যতীত তাঁহার নিকট সুপারিশ করিবে? তাহাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যাহা কিছু আছে তাহা তিনি অবগত। যাহা তিনি ইচ্ছা করেন তদ্ব্যতীত তাঁহার জ্ঞানের কিছুই তাহারা আয়ত্ত করিতে পারে না। তাঁহার ‘কুরসী’ আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত; ইহাদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁহাকে ক্লান্ত করে না; আর তিনি মহান, শ্রেষ্ঠ।
لَاۤ اِكۡرَاهَ فِى الدِّيۡنِۙ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشۡدُ مِنَ الۡغَىِّۚ فَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِالطَّاغُوۡتِ وَيُؤۡمِنۡۢ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسۡتَمۡسَكَ بِالۡعُرۡوَةِ الۡوُثۡقٰى لَا انْفِصَامَ لَهَا ؕ وَاللّٰهُ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ ﴿۲۵۶﴾
২-২৫৬ : দীন গ্রহণে জোর - জবরদস্তি নাই; সত্য পথ ভ্রান্ত পথ হইতে সুস্পষ্ট হইয়াছে। যে তাগূতকে অস্বীকার করিবে ও আল্লাহ্র উপর ঈমান আনিবে সে এমন এক মযবূত হাতল ধরিবে যাহা কখনও ভাঙ্গিবে না। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়।
اَللّٰهُ وَلِىُّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا يُخۡرِجُهُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَى النُّوۡرِؕ وَالَّذِيۡنَ كَفَرُوۡۤا اَوۡلِيٰٓـــُٔهُمُ الطَّاغُوۡتُۙ يُخۡرِجُوۡنَهُمۡ مِّنَ النُّوۡرِ اِلَى الظُّلُمٰتِؕ اُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۵۷﴾
২-২৫৭ : যাহারা ঈমান আনে আল্লাহ্ তাহাদের অভিভাবক, তিনি তাহাদেরকে অন্ধকার হইতে বাহির করিয়া আলোকে লইয়া যান। আর যাহারা কুফরী করে তাগূত তাহাদের অভিভাবক; ইহারা তাহাদেরকে আলো হইতে অন্ধকারে লইয়া যায়। উহারাই অগ্নি - অধিবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِىۡ حَآجَّ اِبۡرٰهٖمَ فِىۡ رَبِّهٖۤ اَنۡ اٰتٰٮهُ اللّٰهُ الۡمُلۡكَۘ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ رَبِّىَ الَّذِىۡ يُحۡىٖ وَيُمِيۡتُۙ قَالَ اَنَا اُحۡىٖ وَاُمِيۡتُؕ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ فَاِنَّ اللّٰهَ يَاۡتِىۡ بِالشَّمۡسِ مِنَ الۡمَشۡرِقِ فَاۡتِ بِهَا مِنَ الۡمَغۡرِبِ فَبُهِتَ الَّذِىۡ كَفَرَؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِيۡنَۚ ﴿۲۵۸﴾
২-২৫৮ : তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সঙ্গে তাহার প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হইয়াছিল, যেহেতু আল্লাহ্ তাহাকে কর্তৃত্ব দিয়াছিলেন। যখন ইব্রাহীম বলিল, ‘তিনি আমার প্রতিপালক যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান’, সে বলিল, ‘আমিও তো জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই।’ ইব্রাহীম বলিল, ‘আল্লাহ্ সূর্যকে পূর্ব দিক হইতে উদিত করান, তুমি উহাকে পশ্চিম দিক হইতে উদিত করাও তো।’ অতঃপর যে কুফরী করিয়াছিল সে হতবুদ্ধি হইয়া গেল। আল্লাহ্ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
اَوۡ كَالَّذِىۡ مَرَّ عَلٰى قَرۡيَةٍ وَّ هِىَ خَاوِيَةٌ عَلٰى عُرُوۡشِهَا ۚ قَالَ اَنّٰى يُحۡىٖ هٰذِهِ اللّٰهُ بَعۡدَ مَوۡتِهَا ۚ فَاَمَاتَهُ اللّٰهُ مِائَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهٗ ؕ قَالَ كَمۡ لَبِثۡتَؕ قَالَ لَبِثۡتُ يَوۡمًا اَوۡ بَعۡضَ يَوۡمٍؕ قَالَ بَلۡ لَّبِثۡتَ مِائَةَ عَامٍ فَانۡظُرۡ اِلٰى طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمۡ يَتَسَنَّهۡۚ وَانْظُرۡ اِلٰى حِمَارِكَ وَلِنَجۡعَلَكَ اٰيَةً لِّلنَّاسِ وَانْظُرۡ اِلَى الۡعِظَامِ كَيۡفَ نُـنۡشِزُهَا ثُمَّ نَكۡسُوۡهَا لَحۡمًا ؕ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهٗ ۙ قَالَ اَعۡلَمُ اَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۲۵۹﴾
২-২৫৯ : অথবা তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে এমন এক নগরে উপনীত হইয়াছিল যাহা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হইয়াছিল। সে বলিল, ‘মৃত্যুর পর কিরূপে আল্লাহ্ ইহাকে জীবিত করিবেন?’ তৎপর আল্লাহ্ তাহাকে একশত বৎসর মৃত রাখিলেন। পরে তাহাকে পুনর্জীবিত করিলেন। আল্লাহ্ বলিলেন, ‘তুমি কত কাল অবস্থান করিলে?’ সে বলিল, ‘এক দিন অথবা এক দিনেরও কিছু কম অবস্থান করিয়াছি।’ তিনি বলিলেন, ‘না, বরং তুমি একশত বৎসর অবস্থান করিয়াছ। তোমার খাদ্যসামগ্রী ও পানীয় বস্তুর প্রতি লক্ষ্য কর, উহা অবিকৃত রহিয়াছে এবং তোমার গর্দভটির প্রতি লক্ষ্য কর, কারণ তোমাকে মানবজাতির জন্য নিদর্শনস্বরূপ করিব। আর অস্থিগুলির প্রতি লক্ষ্য কর; কিভাবে সেইগুলিকে সংযোজিত করি এবং গোশ্ত্ দ্বারা ঢাকিয়া দেই।’ যখন ইহা তাহার নিকট স্পষ্ট হইল তখন সে বলিয়া উঠিল, ‘আমি জানি যে, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’
وَاِذۡ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ رَبِّ اَرِنِىۡ كَيۡفَ تُحۡىِ الۡمَوۡتٰى ؕ قَالَ اَوَلَمۡ تُؤۡمِنۡؕ قَالَ بَلٰى وَلٰـكِنۡ لِّيَطۡمَٮِٕنَّ قَلۡبِىۡؕ قَالَ فَخُذۡ اَرۡبَعَةً مِّنَ الطَّيۡرِ فَصُرۡهُنَّ اِلَيۡكَ ثُمَّ اجۡعَلۡ عَلٰى كُلِّ جَبَلٍ مِّنۡهُنَّ جُزۡءًا ثُمَّ ادۡعُهُنَّ يَاۡتِيۡنَكَ سَعۡيًا ؕ وَاعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰهَ عَزِيۡزٌ حَكِيۡمٌ ﴿۲۶۰﴾
২-২৬০ : যখন ইব্রাহীম বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর আমাকে দেখাও।’ তিনি বলিলেন, ‘তবে কি তুমি বিশ্বাস কর না?’ সে বলিল, ‘কেন করিব না, তবে ইহা কেবল আমার চিত্ত প্রশান্তির জন্য।’ তিনি বলিলেন, ‘তবে চারটি পাখি লও এবং উহাদেরকে তোমার বশীভূত করিয়া লও। তৎপর তাহাদের এক এক অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন কর। অতঃপর উহাদেরকে ডাক দাও, উহারা দ্রুতগতিতে তোমার নিকট আসিবে। জানিয়া রাখ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
مَثَلُ الَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنۡۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِىۡ كُلِّ سُنۡۢبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍؕ وَاللّٰهُ يُضٰعِفُ لِمَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِيۡمٌ﴿۲۶۱﴾
২-২৬১ : যাহারা নিজেদের ধনৈশ্বর্য আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে তাহাদের উপমা একটি শস্যবীজ, যাহা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রত্যেক শীষে একশত শস্যদানা। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা বহু গুণে বৃদ্ধি করিয়া দেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
اَلَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ ثُمَّ لَا يُتۡبِعُوۡنَ مَاۤ اَنۡفَقُوۡا مَنًّا وَّلَاۤ اَذًىۙ لَّهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡۚ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَ ﴿۲۶۲﴾
২-২৬২ : যাহারা আল্লাহ্র পথে ধনৈশ্বর্য ব্যয় করে অতঃপর যাহা ব্যয় করে তাহার কথা বলিয়া বেড়ায় না এবং ক্লেশও দেয় না, তাহাদের পুরস্কার তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।
قَوۡلٌ مَّعۡرُوۡفٌ وَّمَغۡفِرَةٌ خَيۡرٌ مِّنۡ صَدَقَةٍ يَّتۡبَعُهَاۤ اَذًىؕ وَاللّٰهُ غَنِىٌّ حَلِيۡمٌ﴿۲۶۳﴾
২-২৬৩ : যে দানের পর কষ্ট দেওয়া হয় তাহা অপেক্ষা ভাল কথা ও ক্ষমা শ্রেয়। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত, পরম সহনশীল।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُبۡطِلُوۡا صَدَقٰتِكُمۡ بِالۡمَنِّ وَالۡاَذٰىۙ كَالَّذِىۡ يُنۡفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَلَا يُؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ فَمَثَلُهٗ كَمَثَلِ صَفۡوَانٍ عَلَيۡهِ تُرَابٌ فَاَصَابَهٗ وَابِلٌ فَتَرَكَهٗ صَلۡدًا ؕ لَا يَقۡدِرُوۡنَ عَلٰى شَىۡءٍ مِّمَّا كَسَبُوۡا ؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الۡـكٰفِرِيۡنَ ﴿۲۶۴﴾
২-২৬৪ : হে মু’মিনগণ! দানের কথা বলিয়া বেড়াইয়া এবং কষ্ট দিয়া তোমরা তোমাদের দানকে ঐ ব্যক্তির ন্যায় নিষ্ফল করিও না, যে নিজের ধনসম্পদ লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করিয়া থাকে এবং আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান রাখে না। তাহার উপমা একটি মসৃণ পাথর - যাহার উপর কিছু মাটি থাকে; অতঃপর উহার উপর প্রবল বৃষ্টিপাত উহাকে পরিষ্কার করিয়া রাখিয়া দেয়। যাহা তাহারা উপার্জন করিয়াছে তাহার কিছুই তাহারা তাহাদের কাজে লাগাইতে সক্ষম হইবে না। আল্লাহ্ কাফির সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
وَمَثَلُ الَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمُ ابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ اللّٰهِ وَ تَثۡبِيۡتًا مِّنۡ اَنۡفُسِهِمۡ كَمَثَلِ جَنَّةٍۢ بِرَبۡوَةٍ اَصَابَهَا وَابِلٌ فَاٰتَتۡ اُكُلَهَا ضِعۡفَيۡنِۚ فَاِنۡ لَّمۡ يُصِبۡهَا وَابِلٌ فَطَلٌّؕ وَاللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِيۡرٌ﴿۲۶۵﴾
২-২৬৫ : আর যাহারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভার্থে ও নিজেদের আত্মা বলিষ্ঠ করণার্থে ধনৈশ্বর্য ব্যয় করে তাহাদের উপমা কোন উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যান, যাহাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, ফলে তাহার ফলমূল দ্বিগুণ জন্মে। যদি মুষলধারে বৃষ্টি নাও হয় তবে লঘু বৃষ্টিই যথেষ্ট। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহার সম্যক দ্রষ্টা।
اَيَوَدُّ اَحَدُكُمۡ اَنۡ تَكُوۡنَ لَهٗ جَنَّةٌ مِّنۡ نَّخِيۡلٍ وَّاَعۡنَابٍ تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُۙ لَهٗ فِيۡهَا مِنۡ كُلِّ الثَّمَرٰتِۙ وَاَصَابَهُ الۡكِبَرُ وَلَهٗ ذُرِّيَّةٌ ضُعَفَآءُ ۖۚ فَاَصَابَهَاۤ اِعۡصَارٌ فِيۡهِ نَارٌ فَاحۡتَرَقَتۡؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَـكُمُ الۡاٰيٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَتَفَكَّرُوۡنَ﴿۲۶۶﴾
২-২৬৬ : তোমাদের কেহ কি চায় যে, তাহার খেজুর ও আঙুরের একটি বাগান থাকে যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং যাহাতে সর্বপ্রকার ফলমূল আছে, যখন সে ব্যক্তি বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং তাহার সন্তান - সন্ততি দুর্বল, অতঃপর উহার উপর এক অগ্নিক্ষরা ঘূর্ণিঝড় আপতিত হয় ও উহা জ্বলিয়া যায়? এইভাবে আল্লাহ্ তাঁহার নিদর্শন তোমাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন যাহাতে তোমরা অনুধাবন করিতে পার।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡفِقُوۡا مِنۡ طَيِّبٰتِ مَا كَسَبۡتُمۡ وَمِمَّاۤ اَخۡرَجۡنَا لَـكُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الۡخَبِيۡثَ مِنۡهُ تُنۡفِقُوۡنَ وَلَسۡتُمۡ بِاٰخِذِيۡهِ اِلَّاۤ اَنۡ تُغۡمِضُوۡا فِيۡهِؕ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ غَنِىٌّ حَمِيۡدٌ ﴿۲۶۷﴾
২-২৬৭ : হে মু’মিনগণ ! তোমরা যাহা উপার্জন কর এবং আমি যাহা ভূমি হইতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করিয়া দেই তন্মধ্যে যাহা উৎকৃষ্ট তাহা ব্যয় কর ; এবং উহার নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করার সংকল্প করিও না : অথচ তোমরা উহা গ্রহণ করিবার নও, যদি না তোমরা চক্ষু বন্ধ করিয়া থাক। এবং জানিয়া রাখ যে,নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
اَلشَّيۡطٰنُ يَعِدُكُمُ الۡـفَقۡرَ وَيَاۡمُرُكُمۡ بِالۡفَحۡشَآءِ ۚ وَاللّٰهُ يَعِدُكُمۡ مَّغۡفِرَةً مِّنۡهُ وَفَضۡلًا ؕ وَاللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِيۡمٌۚ ۙۖ﴿۲۶۸﴾
২-২৬৮ : শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার নির্দেশ দেয়। আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে তাঁহার ক্ষমা এবং অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
يُؤۡتِى الۡحِكۡمَةَ مَنۡ يَّشَآءُ ۚ وَمَنۡ يُّؤۡتَ الۡحِكۡمَةَ فَقَدۡ اُوۡتِىَ خَيۡرًا كَثِيۡرًا ؕ وَمَا يَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿۲۶۹﴾
২-২৬৯ : তিনি যাহাকে ইচ্ছা হিক্মত প্রদান করেন এবং যাহাকে হিক্মত প্রদান করা হয় তাহাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়; এবং বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই শুধু শিক্ষা গ্রহণ করে।
وَمَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ نَّفَقَةٍ اَوۡ نَذَرۡتُمۡ مِّنۡ نَّذۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ يَعۡلَمُهٗ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِيۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ ﴿۲۷۰﴾
২-২৭০ : যাহা কিছু তোমরা ব্যয় কর অথবা যাহা কিছু তোমরা মানত কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাহা জানেন। আর জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই।
اِنۡ تُبۡدُوا الصَّدَقٰتِ فَنِعِمَّا هِىَۚ وَاِنۡ تُخۡفُوۡهَا وَ تُؤۡتُوۡهَا الۡفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيۡرٌ لَّكُمۡؕ وَيُكَفِّرُ عَنۡكُمۡ مِّنۡ سَيِّاٰتِكُمۡؕ وَاللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِيۡرٌ ﴿۲۷۱﴾
২-২৭১ : তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর তবে উহা ভাল ; আর যদি তাহা গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তকে দান কর তাহা তোমাদের জন্য আরও ভাল ; এবং তিনি তোমাদের কিছু কিছু পাপ মোচন করিবেন; তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহা সম্যক অবহিত।
لَيۡسَ عَلَيۡكَ هُدٰٮهُمۡ وَلٰـكِنَّ اللّٰهَ يَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ فَلِاَنۡفُسِكُمۡؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡنَ اِلَّا ابۡتِغَآءَ وَجۡهِ اللّٰهِؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ يُّوَفَّ اِلَيۡكُمۡ وَاَنۡـتُمۡ لَا تُظۡلَمُوۡنَ ﴿۲۷۲﴾
২-২৭২ : তাহাদের সৎপথ গ্রহণের দায়িত্ব তোমার নহে ; বরং আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। যে ধন - সম্পদ তোমরা ব্যয় কর তাহা তোমাদের নিজেদের জন্য এবং তোমরা তো শুধু আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভার্থেই ব্যয় করিয়া থাক। যে ধন - সম্পদ তোমরা ব্যয় কর তাহার পুরস্কার তোমাদেরকে পুরাপুরিভাবে প্রদান করা হইবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হইবে না।
لِلۡفُقَرَآءِ الَّذِيۡنَ اُحۡصِرُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ لَا يَسۡتَطِيۡعُوۡنَ ضَرۡبًا فِى الۡاَرۡضِ يَحۡسَبُهُمُ الۡجَاهِلُ اَغۡنِيَآءَ مِنَ التَّعَفُّفِۚ تَعۡرِفُهُمۡ بِسِيۡمٰهُمۡۚ لَا يَسۡـــَٔلُوۡنَ النَّاسَ اِلۡحَــافًا ؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِيۡمٌ﴿۲۷۳﴾
২-২৭৩ : ইহা প্রাপ্য অভাবগ্রস্ত লোকদের; যাহারা আল্লাহ্র পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে, দেশময় ঘোরাফেরা করিতে পারে না ; যাচ্ঞা না করার কারণে অজ্ঞ লোকেরা তাহাদেরকে অভাবমুক্ত বলিয়া মনে করে; তুমি তাহাদের লক্ষণ দেখিয়া চিনিতে পারিবে। তাহারা মানুষের নিকট নাছোড় হইয়া যাচ্ঞা করে না। যে ধন - সম্পদ তোমরা ব্যয় কর আল্লাহ্ তো তাহা সবিশেষ অবহিত।
اَلَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ بِالَّيۡلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً فَلَهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡۚ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَؔ ﴿۲۷۴﴾
২-২৭৪ : যাহারা নিজেদের ধনৈশ্বর্য রাত্রে ও দিবসে, গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তাহাদের পুণ্য ফল তাহাদের প্রতিপালকের নিকট রহিয়াছে, তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।
اَلَّذِيۡنَ يَاۡكُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا يَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا كَمَا يَقُوۡمُ الَّذِىۡ يَتَخَبَّطُهُ الشَّيۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّؕ ذٰ لِكَ بِاَنَّهُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَيۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَاَحَلَّ اللّٰهُ الۡبَيۡعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنۡ جَآءَهٗ مَوۡعِظَةٌ مِّنۡ رَّبِّهٖ فَانۡتَهٰى فَلَهٗ مَا سَلَفَؕ وَاَمۡرُهٗۤ اِلَى اللّٰهِؕ وَمَنۡ عَادَ فَاُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۲۷۵﴾
২-২৭৫ : যাহারা সুদ খায় তাহারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াইবে যাহাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। ইহা এইজন্য যে, তাহারা বলে, ‘ক্রয় - বিক্রয় তো সুদের মতই।’ অথচ আল্লাহ্ ক্রয় - বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করিয়াছেন। যাহার নিকট তাহার প্রতিপালকের উপদেশ আসিয়াছে এবং সে বিরত হইয়াছে, তবে অতীতে যাহা হইয়াছে তাহা তাহারই; এবং তাহার ব্যাপার আল্লাহ্র ইখ্তিয়ারে। আর যাহারা পুনরায় আরম্ভ করিবে তাহারাই দোজখবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
يَمۡحَقُ اللّٰهُ الرِّبٰوا وَيُرۡبِى الصَّدَقٰتِؕ وَاللّٰهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِيۡمٍ ﴿۲۷۶﴾
২-২৭৬ : আল্লাহ্ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ্ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না।
اِنَّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتَوُا الزَّكٰوةَ لَهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡۚ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَ ﴿۲۷۷﴾
২-২৭৭ : নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তাহাদের পুরস্কার তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَذَرُوۡا مَا بَقِىَ مِنَ الرِّبٰٓوا اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ ﴿۲۷۸﴾
২-২৭৮ : হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সুদের বকেয়া যাহা আছে তাহা ছাড়িয়া দাও যদি তোমরা মু’মিন হও।
فَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلُوۡا فَاۡذَنُوۡا بِحَرۡبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖۚ وَاِنۡ تُبۡتُمۡ فَلَـكُمۡ رُءُوۡسُ اَمۡوَالِكُمۡۚ لَا تَظۡلِمُوۡنَ وَلَا تُظۡلَمُوۡنَ﴿۲۷۹﴾
২-২৭৯ : যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। ইহাতে তোমরা অত্যাচার করিবে না এবং অত্যাচারিতও হইবে না।
وَاِنۡ كَانَ ذُوۡ عُسۡرَةٍ فَنَظِرَةٌ اِلٰى مَيۡسَرَةٍ ؕ وَاَنۡ تَصَدَّقُوۡا خَيۡرٌ لَّـكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۸۰﴾
২-২৮০ : যদি খাতক অভাবগ্রস্ত হয় তবে সচ্ছলতা পর্যন্ত তাহাকে অবকাশ দেওয়া বিধেয়। আর যদি তোমরা ছাড়িয়া দাও তবে উহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানিতে।
وَاتَّقُوۡا يَوۡمًا تُرۡجَعُوۡنَ فِيۡهِ اِلَى اللّٰهِ ثُمَّ تُوَفّٰى كُلُّ نَفۡسٍ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُوۡنَ﴿۲۸۱﴾
২-২৮১ : তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যে দিন তোমরা আল্লাহ্র দিকে প্রত্যানীত হইবে। অতঃপর প্রত্যেককে তাহার কর্মের ফল পুরাপুরি প্রদান করা হইবে, আর তাহাদের প্রতি কোনরূপ অন্যায় করা হইবে না।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا تَدَايَنۡتُمۡ بِدَيۡنٍ اِلٰٓى اَجَلٍ مُّسَمًّى فَاكۡتُبُوۡهُ ؕ وَلۡيَكۡتُب بَّيۡنَكُمۡ كَاتِبٌۢ بِالۡعَدۡلِ وَلَا يَاۡبَ كَاتِبٌ اَنۡ يَّكۡتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ اللّٰهُ فَلۡيَكۡتُبۡ ۚوَلۡيُمۡلِلِ الَّذِىۡ عَلَيۡهِ الۡحَـقُّ وَلۡيَتَّقِ اللّٰهَ رَبَّهٗ وَلَا يَبۡخَسۡ مِنۡهُ شَيۡـــًٔا ؕ فَاِنۡ كَانَ الَّذِىۡ عَلَيۡهِ الۡحَـقُّ سَفِيۡهًا اَوۡ ضَعِيۡفًا اَوۡ لَا يَسۡتَطِيۡعُ اَنۡ يُّمِلَّ هُوَ فَلۡيُمۡلِلۡ وَلِيُّهٗ بِالۡعَدۡلِؕ وَاسۡتَشۡهِدُوۡا شَهِيۡدَيۡنِ مِنۡ رِّجَالِكُمۡۚ فَاِنۡ لَّمۡ يَكُوۡنَا رَجُلَيۡنِ فَرَجُلٌ وَّامۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّهَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰٮهُمَا فَتُذَكِّرَ اِحۡدٰٮهُمَا الۡاُخۡرٰىؕ وَ لَا يَاۡبَ الشُّهَدَآءُ اِذَا مَا دُعُوۡا ؕ وَلَا تَسۡـــَٔمُوۡۤا اَنۡ تَكۡتُبُوۡهُ صَغِيۡرًا اَوۡ كَبِيۡرًا اِلٰٓى اَجَلِهٖؕ ذٰ لِكُمۡ اَقۡسَطُ عِنۡدَ اللّٰهِ وَاَقۡوَمُ لِلشَّهَادَةِ وَاَدۡنٰۤى اَلَّا تَرۡتَابُوۡٓا اِلَّاۤ اَنۡ تَكُوۡنَ تِجَارَةً حَاضِرَةً تُدِيۡرُوۡنَهَا بَيۡنَكُمۡ فَلَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٌ اَلَّا تَكۡتُبُوۡهَا ؕ وَاَشۡهِدُوۡۤا اِذَا تَبَايَعۡتُمۡ وَلَا يُضَآرَّ كَاتِبٌ وَّلَا شَهِيۡدٌ ؕ وَاِنۡ تَفۡعَلُوۡا فَاِنَّهٗ فُسُوۡقٌ ۢ بِكُمۡ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ وَيُعَلِّمُكُمُ اللّٰهُ ؕ وَاللّٰهُ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمٌ﴿۲۸۲﴾
২-২৮২ : হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের কারবার কর তখন উহা লিখিয়া রাখিও; তোমাদের মধ্যে কোন লেখক যেন ন্যায্যভাবে লিখিয়া দেয়; লেখক লিখিতে অস্বীকার করিবে না। যেমন আল্লাহ্ তাহাকে শিক্ষা দিয়াছেন, সুতরাং সে যেন লিখে এবং ঋণগ্রহীতা যেন লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দেয় এবং তাহার প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় করে, আর উহার কিছু যেন না কমায়; কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয় অথবা লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দিতে না পারে তবে যেন তাহার অভিভাবক ন্যায্যভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দেয়। সাক্ষীদের মধ্যে যাহাদের উপর তোমরা রাযী তাহাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ সাক্ষী রাখিবে, যদি দুইজন পুরুষ না থাকে তবে একজন পুরুষ ও দুইজন স্ত্রীলোক ; স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুল করিলে তাহাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করাইয়া দিবে। সাক্ষীগণকে যখন ডাকা হইবে তখন তাহারা যেন অস্বীকার না করে। ইহা ছোট হউক অথবা বড় হউক, মেয়াদসহ লিখিতে তোমরা কোনরূপ বিরক্ত হইও না। আল্লাহ্র নিকট ইহা ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য দৃঢ়তর এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার নিকটতর; কিন্তু তোমরা পরস্পর যে ব্যবসায় নগদ আদান - প্রদান কর তাহা তোমরা না লিখিলে কোন দোষ নাই। তোমরা যখন পরস্পরের মধ্যে বেচাকেনা কর তখন সাক্ষী রাখিও, লেখক এবং সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত কর তবে ইহা তোমাদের জন্য পাপ। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে অবহিত।
وَاِنۡ كُنۡتُمۡ عَلٰى سَفَرٍ وَّلَمۡ تَجِدُوۡا كَاتِبًا فَرِهٰنٌ مَّقۡبُوۡضَةٌ ؕ فَاِنۡ اَمِنَ بَعۡضُكُمۡ بَعۡضًا فَلۡيُؤَدِّ الَّذِى اؤۡتُمِنَ اَمَانَـتَهٗ وَلۡيَتَّقِ اللّٰهَ رَبَّهٗؕ وَلَا تَكۡتُمُوا الشَّهَادَةَ ؕ وَمَنۡ يَّكۡتُمۡهَا فَاِنَّهٗۤ اٰثِمٌ قَلۡبُهٗؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ عَلِيۡمٌ﴿۲۸۳﴾
২-২৮৩ : যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে হস্তান্তরকৃত বন্ধক রাখিবে। তোমাদের একে অপরকে বিশ্বাস করিলে, যাহাকে বিশ্বাস করা হয় সে যেন আমানত প্রত্যর্পণ করে এবং তাহার প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় করে। তোমরা সাক্ষ্য গোপন করিও না, যে কেহ উহা গোপন করে অবশ্যই তাহার অন্তর পাপী। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহা সবিশেষ অবহিত।
لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الۡاَرۡضِؕ وَاِنۡ تُبۡدُوۡا مَا فِىۡۤ اَنۡفُسِكُمۡ اَوۡ تُخۡفُوۡهُ يُحَاسِبۡكُمۡ بِهِ اللّٰهُؕ فَيَـغۡفِرُ لِمَنۡ يَّشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ﴿۲۸۴﴾
২-২৮৪ : আসমান ও যমীনে যাহা কিছু আছে সমস্ত আল্লাহ্রই। তোমাদের মনে যাহা আছে, তাহা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ্ উহার হিসাব তোমাদের নিকট হইতে গ্রহণ করিবেন। অতঃপর যাহাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করিবেন এবং যাহাকে খুশি শাস্তি দিবেন। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
اٰمَنَ الرَّسُوۡلُ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَيۡهِ مِنۡ رَّبِّهٖ وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَمَلٰٓٮِٕكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ اَحَدٍ مِّنۡ رُّسُلِهٖ وَقَالُوۡا سَمِعۡنَا وَاَطَعۡنَا غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَاِلَيۡكَ الۡمَصِيۡرُ﴿۲۸۵﴾
২-২৮৫ : রাসূল, তাহার প্রতি তাহার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে ঈমান আনিয়াছে এবং মু’মিনগণও। তাহাদের সকলে আল্লাহে, তাঁহার ফিরিশতাগণে, তাঁহার কিতাবসমূহে এবং তাঁহার রাসূলগণে ঈমান আনিয়াছে। তাহারা বলে, ‘আমরা তাঁহার রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না’, আর তাহারা বলে, ‘আমরা শুনিয়াছি এবং পালন করিয়াছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার ক্ষমা চাই আর প্রত্যাবর্তন তোমারই নিকট।’
لَا يُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَهَا ؕ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَعَلَيۡهَا مَا اكۡتَسَبَتۡؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَاۤ اِنۡ نَّسِيۡنَاۤ اَوۡ اَخۡطَاۡنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحۡمِلۡ عَلَيۡنَاۤ اِصۡرًا كَمَا حَمَلۡتَهٗ عَلَى الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِنَا ۚرَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ ۚ وَاعۡفُ عَنَّا وَاغۡفِرۡ لَنَا وَارۡحَمۡنَا اَنۡتَ مَوۡلٰٮنَا فَانۡصُرۡنَا عَلَى الۡقَوۡمِ الۡكٰفِرِيۡنَ ﴿۲۸۶﴾
২-২৮৬ : আল্লাহ্ কাহারও উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যাহা তাহার সাধ্যাতীত। সে ভাল যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই এবং সে মন্দ যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই। ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করিও না। হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করিয়াছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করিও না। হে আমাদের প্রতিপালক ! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করিও না যাহা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর।’