بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুনদয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে,
حٰمٓ﴿۱﴾
৪৬-১ : হা - মীম।
تَنۡزِيۡلُ الۡكِتٰبِ مِنَ اللّٰهِ الۡعَزِيۡزِ الۡحَكِيۡمِ﴿۲﴾
৪৬-২ : এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র নিকট হইতে অবতীর্ণ ;
مَا خَلَقۡنَا السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَاۤ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَاَجَلٍ مُّسَمًّىؕ وَالَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا عَمَّاۤ اُنۡذِرُوۡا مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۳﴾
৪৬-৩ : আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং উহাদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুই আমি যথাযথভাবে নির্দিষ্ট কালের জন্য সৃষ্টি করিয়াছি। কিন্তু কাফিররা, উহাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হইয়াছে তাহা হইতে মুখ ফিরাইয়া নেয়।
قُلۡ اَرَءَيۡتُمۡ مَّا تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اَرُوۡنِىۡ مَاذَا خَلَقُوۡا مِنَ الۡاَرۡضِ اَمۡ لَهُمۡ شِرۡكٌ فِى السَّمٰوٰتِؕ اِیْتُوۡنِىۡ بِكِتٰبٍ مِّنۡ قَبۡلِ هٰذَاۤ اَوۡ اَثٰرَةٍ مِّنۡ عِلۡمٍ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ ﴿۴﴾
৪৬-৪ : বল, ‘তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাহাদেরকে ডাক তাহাদের কথা ভাবিয়া দেখিয়াছ কি? ইহারা পৃথিবীতে কী সৃষ্টি করিয়াছে আমাকে দেখাও অথবা আকাশমণ্ডলীতে উহাদের কোন অংশীদারিত্ব আছে কি? পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরম্পরাগত কোন জ্ঞান থাকিলে তাহা তোমরা আমার নিকট উপস্থিত কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
وَمَنۡ اَضَلُّ مِمَّنۡ يَّدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مَنۡ لَّا يَسۡتَجِيۡبُ لَهٗۤ اِلٰى يَوۡمِ الۡقِيٰمَةِ وَهُمۡ عَنۡ دُعَآٮِٕهِمۡ غٰفِلُوۡنَ ﴿۵﴾
৪৬-৫ : সেই ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে, যে আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যাহা কিয়ামত দিবস পর্যন্তও উহাতে সাড়া দিবে না? এবং এইগুলি উহাদের প্রার্থনা সম্বন্ধে অবহিতও নয়।
وَاِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوۡا لَهُمۡ اَعۡدَآءً وَّ كَانُوۡا بِعِبَادَتِهِمۡ كٰفِرِيۡنَ ﴿۶﴾
৪৬-৬ : যখন কিয়ামতের দিন মানুষকে একত্র করা হইবে তখন ঐগুলি হইবে উহাদের শত্রু এবং ঐগুলি উহাদের ‘ইবাদত অস্বীকার করিবে।
وَاِذَا تُتۡلٰى عَلَيۡهِمۡ اٰيٰتُنَا بَيِّنٰتٍ قَالَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لِلۡحَقِّ لَـمَّا جَآءَهُمۡۙ هٰذَا سِحۡرٌ مُّبِيۡنٌؕ﴿۷﴾
৪৬-৭ : যখন উহাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয় এবং উহাদের নিকট সত্য উপস্থিত হয়, তখন কাফিররা বলে, ‘ইহা তো সুস্পষ্ট জাদু।’
اَمۡ يَقُوۡلُوۡنَ افۡتَـرٰٮهُؕ قُلۡ اِنِ افۡتَـرَيۡتُهٗ فَلَا تَمۡلِكُوۡنَ لِىۡ مِنَ اللّٰهِ شَيـــًٔا ؕ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَا تُفِيۡضُوۡنَ فِيۡهِؕ كَفٰى بِهٖ شَهِيۡدًاۢ بَيۡنِىۡ وَبَيۡنَكُمۡ ؕ وَهُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِيۡمُ ﴿۸﴾
৪৬-৮ : তবে কি উহারা বলে যে, ‘সে ইহা উদ্ভাবন করিয়াছে।’ বল, ‘যদি আমি ইহা উদ্ভাবন করিয়া থাকি, তবে তোমরা তো আল্লাহ্র শাস্তি হইতে আমাকে কিছুতেই রক্ষা করিতে পারিবে না। তোমরা যে বিষয়ে আলোচনায় লিপ্ত আছ, সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত। আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে তিনিই যথেষ্ট এবং তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
قُلۡ مَا كُنۡتُ بِدۡعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَمَاۤ اَدۡرِىۡ مَا يُفۡعَلُ بِىۡ وَلَا بِكُمۡؕ اِنۡ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا يُوۡحٰٓى اِلَىَّ وَمَاۤ اَنَا اِلَّا نَذِيۡرٌ مُّبِيۡنٌ ﴿۹﴾
৪৬-৯ : বল, ‘আমি কোন নূতন রাসূল নই। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কী করা হইবে ; আমি আমার প্রতি যাহা ওহী করা হয় কেবল তাহারই অনুসরণ করি। আর আমি তো এক স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’
قُلۡ اَرَءَيۡتُمۡ اِنۡ كَانَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ وَكَفَرۡتُمۡ بِهٖ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنۡۢ بَنِىۡۤ اِسۡرَآءِيۡلَ عَلٰى مِثۡلِهٖ فَاٰمَنَ وَاسۡتَكۡبَرۡتُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِيۡنَ ﴿۱۰﴾
৪৬-১০ : বল, ‘তোমরা ভাবিয়া দেখিয়াছ কি যদি এই কুরআন আল্লাহ্র নিকট হইতে অবতীর্ণ হইয়া থাকে আর তোমরা ইহাতে অবিশ্বাস কর, অথচ বনী ইসরাঈলের একজন ইহার অনুরূপ কিতাব সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়াছে এবং ইহাতে বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে ; আর তোমরা ঔদ্ধত্য প্রকাশ কর, তাহা হইলে তোমাদের পরিণাম কি হইবে? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ জালিমদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
وَقَالَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لِلَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَوۡ كَانَ خَيۡرًا مَّا سَبَقُوۡنَاۤ اِلَيۡهِ ؕ وَاِذۡ لَمۡ يَهۡتَدُوۡا بِهٖ فَسَيَقُوۡلُوۡنَ هٰذَاۤ اِفۡكٌ قَدِيۡمٌ ﴿۱۱﴾
৪৬-১১ : মু’মিনদের সম্পর্কে কাফিররা বলে, ‘যদি ইহা ভাল হইত তবে তাহারা ইহার দিকে আমাদেরকে অতিক্রম করিয়া যাইতে পারিত না।’ আর যখন উহারা ইহা দ্বারা সৎপথপ্রাপ্ত হয় নাই তখন তাহারা অবশ্য বলিবে, ‘ইহা তো এক পুরাতন মিথ্যা।’
وَمِنۡ قَبۡلِهٖ كِتٰبُ مُوۡسٰٓى اِمَامًا وَّرَحۡمَةً ؕ وَهٰذَا كِتٰبٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِيًّا لِّيُنۡذِرَ الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا ۖ وَبُشۡرٰى لِلۡمُحۡسِنِيۡنَۚ﴿۱۲﴾
৪৬-১২ : ইহার পূর্বে ছিল মূসার কিতাব আদর্শ ও অনুগ্রহস্বরূপ। আর এই কিতাব ইহার প্রত্যায়নকারী, আরবী ভাষায়, যেন ইহা জালিমদেরকে সতর্ক করে এবং যাহারা সৎকর্ম করে তাহাদেরকে সুসংবাদ দেয়।
اِنَّ الَّذِيۡنَ قَالُوۡا رَبُّنَا اللّٰهُ ثُمَّ اسۡتَقَامُوۡا فَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُوۡنَۚ ﴿۱۳﴾
৪৬-১৩ : যাহারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক তো আল্লাহ্’ অতঃপর অবিচলিত থাকে, তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না।
اُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّةِ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
৪৬-১৪ : তাহারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, তাহারা যাহা করিত তাহার পুরস্কারস্বরূপ।
وَوَصَّيۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَيۡهِ اِحۡسَانًا ؕ حَمَلَـتۡهُ اُمُّهٗ كُرۡهًا وَّوَضَعَتۡهُ كُرۡهًا ؕ وَحَمۡلُهٗ وَفِصٰلُهٗ ثَلٰـثُوۡنَ شَهۡرًا ؕ حَتّٰٓى اِذَا بَلَغَ اَشُدَّهٗ وَبَلَغَ اَرۡبَعِيۡنَ سَنَةً ۙ قَالَ رَبِّ اَوۡزِعۡنِىۡۤ اَنۡ اَشۡكُرَ نِعۡمَتَكَ الَّتِىۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَىَّ وَعَلٰى وَالِدَىَّ وَاَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰٮهُ وَاَصۡلِحۡ لِىۡ فِىۡ ذُرِّيَّتِىۡ ؕۚ اِنِّىۡ تُبۡتُ اِلَيۡكَ وَاِنِّىۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِيۡنَ ﴿۱۵﴾
৪৬-১৫ : আমি মানুষকে তাহার মাতা - পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়াছি। তাহার জননী তাহাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সঙ্গে এবং প্রসব করে কষ্টের সঙ্গে, তাহাকে গর্ভে ধারণ করিতে ও তাহার স্তন্য ছাড়াইতে লাগে ত্রিশ মাস, ক্রমে সে যখন পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বৎসরে উপনীত হয় তখন বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক ! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাহাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা - মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করিয়াছ, তাহার জন্য এবং যাহাতে আমি সৎকর্ম করিতে পারি যাহা তুমি পসন্দ কর ; আমার জন্য আমার সন্তান - সন্ততিদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমারই অভিমুখী হইলাম এবং আমি অবশ্যই আত্মসর্মপণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ نَـتَقَبَّلُ عَنۡهُمۡ اَحۡسَنَ مَا عَمِلُوۡا وَنَـتَجَاوَزُ عَنۡ سَيِّاٰتِهِمۡ فِىۡۤ اَصۡحٰبِ الۡجَنَّةِ ؕ وَعۡدَ الصِّدۡقِ الَّذِىۡ كَانُوۡا يُوۡعَدُوۡنَ﴿۱۶﴾
৪৬-১৬ : ‘আমি ইহাদেরই সুকৃতিগুলি গ্রহণ করিয়া থাকি এবং মন্দ কর্মগুলি ক্ষমা করি, তাহারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। ইহাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হইয়াছে তাহা সত্য।
وَالَّذِىۡ قَالَ لِـوَالِدَيۡهِ اُفٍّ لَّكُمَاۤ اَتَعِدٰنِنِىۡۤ اَنۡ اُخۡرَجَ وَقَدۡ خَلَتِ الۡقُرُوۡنُ مِنۡ قَبۡلِىۡ ۚ وَهُمَا يَسۡتَغِيۡثٰنِ اللّٰهَ وَيۡلَكَ اٰمِنۡ ۖ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقٌّ ۖۚ فَيَقُوۡلُ مَا هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِيۡرُ الۡاَوَّلِيۡنَ ﴿۱۷﴾
৪৬-১৭ : আর এমন লোক আছে, যে তাহার মাতা - পিতাকে বলে, ‘আফসোস তোমাদের জন্য ! তোমরা কি আমাকে এই ভয় দেখাইতে চাও যে, আমি পুনরুত্থিত হইব যদিও আমার পূর্বে বহু পুরুষ গত হইয়াছে?’ তখন তাহার মাতা - পিতা আল্লাহ্র নিকট ফরিয়াদ করিয়া বলে, ‘দুর্ভোগ তোমার জন্য! তুমি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য।’ কিন্তু সে বলে, ‘ইহা তো অতীত কালের উপকথা ব্যতীত কিছুই নয়।’
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ حَقَّ عَلَيۡهِمُ الۡقَوۡلُ فِىۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَالۡاِنۡسِؕ اِنَّهُمۡ كَانُوۡا خٰسِرِيۡنَ ﴿۱۸﴾
৪৬-১৮ : ইহাদের পূর্বে যে আল জিন ও মানব সম্প্রদায় গত হইয়াছে তাহাদের মত ইহাদের প্রতিও আল্লাহ্র উক্তি সত্য হইয়াছে। ইহারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
وَلِكُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوۡا ۚ وَلِيُوَفِّيَهُمۡ اَعۡمَالَهُمۡ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُوۡنَ﴿۱۹﴾
৪৬-১৯ : প্রত্যেকের মর্যাদা তাহার কর্মানুযায়ী, ইহা এইজন্য যে, আল্লাহ্ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং তাহাদের প্রতি অবিচার করা হইবে না।
وَيَوۡمَ يُعۡرَضُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا عَلَى النَّارِ ؕ اَذۡهَبۡتُمۡ طَيِّبٰـتِكُمۡ فِىۡ حَيَاتِكُمُ الدُّنۡيَا وَاسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِهَا ۚ فَالۡيَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ عَذَابَ الۡهُوۡنِ بِمَا كُنۡـتُمۡ تَسۡتَكۡبِرُوۡنَ فِى الۡاَرۡضِ بِغَيۡرِ الۡحَقِّ وَبِمَا كُنۡتُمۡ تَفۡسُقُوۡنَ﴿۲۰﴾
৪৬-২০ : যেদিন কাফিরদেরকে জাহান্নামের সন্নিকটে উপস্থিত করা হইবে সেদিন উহাদেরকে বলা হইবে, ‘তোমরা তোমাদের পার্থিব জীবনেই সুখ - সম্ভার পাইয়াছ এবং সেইগুলি উপভোগও করিয়াছ। সুতরাং আজ তোমাদেরকে দেওয়া হইবে অবমাননাকর শাস্তি। কারণ তোমরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করিয়াছিলে এবং তোমরা ছিলে সত্যদ্রোহী।’
وَاذۡكُرۡ اَخَا عَادٍؕ اِذۡ اَنۡذَرَ قَوۡمَهٗ بِالۡاَحۡقَافِ وَقَدۡ خَلَتِ النُّذُرُ مِنۡۢ بَيۡنِ يَدَيۡهِ وَمِنۡ خَلۡفِهٖۤ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰهَ ؕ اِنِّىۡۤ اَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٍ عَظِيۡمٍ﴿۲۱﴾
৪৬-২১ : স্মরণ কর, ‘আদ্ সম্প্রদায়ের ভ্রাতার কথা, যাহার পূর্বে এবং পরেও সতর্ককারীরা আসিয়াছিল। সে তাহার আহ্কাফ্বাসী সম্প্রদায়কে সতর্ক করিয়াছিল এই বলিয়া, ‘তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত কাহারও ‘ইবাদত করিও না। আমি তো তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করিতেছি।’
قَالُـوۡۤا اَجِئۡتَـنَا لِتَاۡفِكَنَا عَنۡ اٰلِهَـتِنَا ۚ فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ كُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِيۡنَ ﴿۲۲﴾
৪৬-২২ : উহারা বলিয়াছিল, ‘তুমি কি আমাদেরকে আমাদের দেব - দেবীগুলির পূজা হইতে নিবৃত্ত করিতে আসিয়াছ? তুমি সত্যবাদী হইলে আমাদেরকে যাহার ভয় দেখাইতেছ তাহা আনয়ন কর।’
قَالَ اِنَّمَا الۡعِلۡمُ عِنۡدَ اللّٰهِ ۖ وَاُبَلِّغُكُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِهٖ وَلٰـكِنِّىۡۤ اَرٰٮكُمۡ قَوۡمًا تَجۡهَلُوۡنَ ﴿۲۳﴾
৪৬-২৩ : সে বলিল, ‘ইহার জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট আছে। আমি যাহা লইয়া প্রেরিত হইয়াছি কেবল তাহাই তোমাদের নিকট প্রচার করি, কিন্তু আমি দেখিতেছি, তোমরা এক মূঢ় সম্প্রদায়।’
فَلَمَّا رَاَوۡهُ عَارِضًا مُّسۡتَقۡبِلَ اَوۡدِيَتِهِمۡ ۙ قَالُوۡا هٰذَا عَارِضٌ مُّمۡطِرُنَا ؕ بَلۡ هُوَ مَا اسۡتَعۡجَلۡتُمۡ بِهٖ ۚ رِيۡحٌ فِيۡهَا عَذَابٌ اَ لِيۡمٌۙ﴿۲۴﴾
৪৬-২৪ : ‘অতঃপর যখন উহারা উহাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসিতে দেখিল তখন বলিতে লাগিল, ‘উহা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করিবে।’ হূদ বলিল, ‘ইহাই তো তাহা, যাহা তোমরা ত্বরান্বিত করিতে চাহিয়াছ, এক ঝড়, ইহাতে রহিয়াছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
تُدَمِّرُ كُلَّ شَىۡءٍ ۭ بِاَمۡرِ رَبِّهَا فَاَصۡبَحُوۡا لَا يُرٰٓى اِلَّا مَسٰكِنُهُمۡؕ كَذٰلِكَ نَجۡزِى الۡقَوۡمَ الۡمُجۡرِمِيۡنَ﴿۲۵﴾
৪৬-২৫ : ‘আল্লাহ্র নির্দেশে ইহা সমস্তকিছুকে ধ্বংস করিয়া দিবে।’ অতঃপর উহাদের পরিণাম এই হইল যে, উহাদের বসতিগুলি ছাড়া আর কিছুই রহিল না। এইভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়া থাকি।
وَلَقَدۡ مَكَّنّٰهُمۡ فِيۡمَاۤ اِنۡ مَّكَّنّٰكُمۡ فِيۡهِ وَجَعَلۡنَا لَهُمۡ سَمۡعًا وَّاَبۡصَارًا وَّاَفۡـِٕدَةً ۖ فَمَاۤ اَغۡنٰى عَنۡهُمۡ سَمۡعُهُمۡ وَلَاۤ اَبۡصَارُهُمۡ وَلَاۤ اَفۡـِٕدَتُهُمۡ مِّنۡ شَىۡءٍ اِذۡ كَانُوۡا يَجۡحَدُوۡنَۙ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ وَحَاقَ بِهِمۡ مَّا كَانُوۡا بِهٖ يَسۡتَهۡزِءُوۡنَ﴿۲۶﴾
৪৬-২৬ : আমি উহাদেরকে যে প্রতিষ্ঠা দিয়াছিলাম তোমাদেরকে তাহা দেই নাই ; আমি উহাদেরকে দিয়াছিলাম কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ; কিন্তু উহাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় উহাদের কোন কাজে আসে নাই; কেননা উহারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করিয়াছিল। যাহা লইয়া উহারা ঠাট্টা - বিদ্রূপ করিত, উহাই উহাদেরকে পরিবেষ্টন করিল।
وَلَقَدۡ اَهۡلَكۡنَا مَا حَوۡلَـكُمۡ مِّنَ الۡقُرٰى وَصَرَّفۡنَا الۡاٰيٰتِ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُوۡنَ﴿۲۷﴾
৪৬-২৭ : আমি তো ধ্বংস করিয়াছিলাম তোমাদের চতুষ্পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ; আমি উহাদেরকে বিভিন্নভাবে আমার নিদর্শনাবলী বিবৃত করিয়াছিলাম, যাহাতে উহারা ফিরিয়া আসে।
فَلَوۡلَا نَصَرَهُمُ الَّذِيۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ قُرۡبَانًا اٰلِهَةً ؕ بَلۡ ضَلُّوۡا عَنۡهُمۡۚ وَذٰلِكَ اِفۡكُهُمۡ وَمَا كَانُوۡا يَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۸﴾
৪৬-২৮ : উহারা আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের জন্য আল্লাহ্র পরিবর্তে যাহাদেরকে ইলাহ্রূপে গ্রহণ করিয়াছিল তাহারা উহাদেরকে সাহায্য করিল না কেন? বস্তুত উহাদের ইলাহ্গুলি উহাদের নিকট হইতে অন্তর্হিত হইয়া গেল। উহাদের মিথ্যা ও অলীক উদ্ভাবনের পরিণাম এইরূপই।
وَاِذۡ صَرَفۡنَاۤ اِلَيۡكَ نَفَرًا مِّنَ الۡجِنِّ يَسۡتَمِعُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَۚ فَلَمَّا حَضَرُوۡهُ قَالُوۡۤا اَنۡصِتُوۡاۚ فَلَمَّا قُضِىَ وَلَّوۡا اِلٰى قَوۡمِهِمۡ مُّنۡذِرِيۡنَ ﴿۲۹﴾
৪৬-২৯ : স্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করিয়াছিলাম একদল আল জিনকে, যাহারা কুরআন পাঠ শুনিতেছিল। যখন উহারা তাহার নিকট উপস্থিত হইল, উহারা বলিল, ‘চুপ করিয়া শ্রবণ কর।’ যখন কুরআন পাঠ সমাপ্ত হইল উহারা উহাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরিয়া গেল সতর্ককারীরূপে।
قَالُوۡا يٰقَوۡمَنَاۤ اِنَّا سَمِعۡنَا كِتٰبًا اُنۡزِلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مُوۡسٰى مُصَدِّقًا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ يَهۡدِىۡۤ اِلَى الۡحَقِّ وَاِلٰى طَرِيۡقٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ ﴿۳۰﴾
৪৬-৩০ : উহারা বলিয়াছিল, ‘হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এমন এক কিতাবের পাঠ শ্রবণ করিয়াছি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে মূসার পরে, ইহা উহার পূর্ববর্তী কিতাবকে প্রত্যয়ন করে এবং সত্য ও সরল পথের দিকে পরিচালিত করে।
يٰقَوۡمَنَاۤ اَجِيۡبُوۡا دَاعِىَ اللّٰهِ وَاٰمِنُوۡا بِهٖ يَغۡفِرۡ لَـكُمۡ مِّنۡ ذُنُوۡبِكُمۡ وَيُجِرۡكُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ اَ لِيۡمٍ ﴿۳۱﴾
৪৬-৩১ : ‘হে আমাদের সম্প্রদায় ! আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তাহার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ্ তোমাদের পাপ ক্ষমা করিবেন এবং মর্মন্তুদ শাস্তি হইতে তোমাদেরকে রক্ষা করিবেন।’
وَمَنۡ لَّا يُجِبۡ دَاعِىَ اللّٰهِ فَلَيۡسَ بِمُعۡجِزٍ فِى الۡاَرۡضِ وَلَيۡسَ لَهٗ مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اَوۡلِيَآءُ ؕ اُولٰٓٮِٕكَ فِىۡ ضَلٰلٍ مُّبِيۡنٍ ﴿۳۲﴾
৪৬-৩২ : কেহ যদি আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া না দেয় তবে সে পৃথিবীতে আল্লাহ্র অভিপ্রায় ব্যর্থ করিতে পারিবে না এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তাহাদের কোন সাহায্যকারী থাকিবে না। উহারাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রহিয়াছে।
اَوَلَمۡ يَرَوۡا اَنَّ اللّٰهَ الَّذِىۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ وَلَمۡ يَعۡىَ بِخَلۡقِهِنَّ بِقٰدِرٍ عَلٰۤی اَنۡ يُّحۡیِۦَ الۡمَوۡتٰى ؕ بَلٰٓى اِنَّهٗ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۳۳﴾
৪৬-৩৩ : উহারা কি অনুধাবন করে না যে, আল্লাহ্, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন এবং এই সকলের সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তি বোধ করেন নাই, তিনি মৃতের জীবন দান করিতেও সক্ষম? বস্তুত তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
وَيَوۡمَ يُعۡرَضُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا عَلَى النَّارِ ؕ اَلَيۡسَ هٰذَا بِالۡحَقِّ ؕ قَالُوۡا بَلٰى وَرَبِّنَا ؕ قَالَ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا كُنۡـتُمۡ تَكۡفُرُوۡنَ ﴿۳۴﴾
৪৬-৩৪ : যেই দিন কাফিরদেরকে উপস্থিত করা হইবে জাহান্নামের নিকট, সেই দিন উহাদেরকে বলা হইবে, ‘ইহা কি সত্য নয়?’ উহারা বলিবে, ‘আমাদের প্রতিপালকের শপথ ! ইহা সত্য।’ তখন তাহাদেরকে বলা হইবে, ‘শাস্তি আস্বাদন কর, কারণ তোমরা ছিলে সত্য প্রত্যাখ্যানকারী।’
فَاصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ اُولُوا الۡعَزۡمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسۡتَعۡجِلْ لَّهُمۡؕ كَاَنَّهُمۡ يَوۡمَ يَرَوۡنَ مَا يُوۡعَدُوۡنَۙ لَمۡ يَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَةً مِّنۡ نَّهَارٍ ؕ بَلٰغٌ ۚ فَهَلۡ يُهۡلَكُ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۳۵﴾
৪৬-৩৫ : অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর যেমন ধৈর্য ধারণ করিয়াছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ। তুমি উহাদের জন্য ত্বরা করিও না। উহাদেরকে যেই বিষয়ে সতর্ক করা হইয়াছে তাহা যেই দিন উহারা প্রত্যক্ষ করিবে, সেই দিন উহাদের মনে হইবে, উহারা যেন দিবসের এক দণ্ডের বেশি পৃথিবীতে অবস্থান করে নাই। ইহা এক ঘোষণা, পাপাচারী সম্প্রদায়কেই ধ্বংস করা হইবে।