দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে,
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুন৫৪-১ : কিয়ামত নিকটবর্তী হইয়াছে, আর চন্দ্র বিদীর্ণ হইয়াছে,
৫৪-২ : উহারা কোন নিদর্শন দেখিলে মুখ ফিরাইয়া নেয় এবং বলে, ‘ইহা তো চিরাচরিত জাদু।’
৫৪-৩ : উহারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজ খেয়াল - খুশির অনুসরণ করে, আর প্রত্যেক ব্যাপারই লক্ষ্যে পৌঁছিবে।
৫৪-৪ : উহাদের নিকট আসিয়াছে সুসংবাদ, যাহাতে আছে সাবধান বাণী;
৫৪-৫ : ইহা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে এই সতর্কবাণী উহাদের কোন উপকারে আসে নাই।
৫৪-৬ : অতএব তুমি উহাদের উপেক্ষা কর। যেদিন আহবানকারী আহ্বান করিবে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে,
৫৪-৭ : অপমানে অবনমিত নেত্রে সেদিন উহারা কবর হইতে বাহির হইবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়,
৫৪-৮ : উহারা আহ্বানকারীর দিকে ছুটিয়া আসিবে ভীত - বিহ্বল হইয়া। কাফিররা বলিবে, ‘কঠিন এই দিন।’
৫৪-৯ : ইহাদের পূর্বে সূরা নূহের সম্প্রদায়ও অস্বীকার করিয়াছিল - অস্বীকার করিয়াছিল আমার বান্দাকে আর বলিয়াছিল, ‘এ তো এক পাগল।’ আর তাহাকে ভীতি প্রদর্শন করা হইয়াছিল।
৫৪-১০ : তখন সে তাহার প্রতিপালককে আহ্বান করিয়া বলিয়াছিল, ‘আমি তো অসহায়, অতএব তুমি প্রতিবিধান কর।’
৫৪-১১ : ফলে আমি উন্মুক্ত করিয়া দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারি বর্ষণে,
৫৪-১২ : এবং মৃত্তিকা হইতে উৎসারিত করিলাম প্রস্রবণ; অতঃপর সকল পানি মিলিত হইল এক পরিকল্পনা অনুসারে।
৫৪-১৩ : তখন সূরা নূহকে আরোহণ করাইলাম কাষ্ঠ ও কীলক নির্মিত এক নৌযানে,
৫৪-১৪ : যাহা চলিত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে; ইহা পুরস্কার তাহার জন্য, যে প্রত্যাখ্যাত হইয়াছিল।
৫৪-১৫ : আমি তো ইহাকে রাখিয়া দিয়াছি এক নিদর্শনরূপে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-১৬ : কী কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!
৫৪-১৭ : কুরআন আমি সহজ করিয়া দিয়াছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-১৮ : ‘আদ সম্প্রদায় সত্য অস্বীকার করিয়াছিল, ফলে কিরূপ ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!
৫৪-১৯ : উহাদের উপর আমি প্রেরণ করিয়াছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু নিরবচ্ছিন্ন দুর্ভাগ্যের দিনে,
৫৪-২০ : মানুষকে উহা উৎখাত করিয়াছিল উন্মুলিত খর্জুর - কাণ্ডের ন্যায়।
৫৪-২১ : কী কঠোর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!
৫৪-২২ : কুরআন আমি সহজ করিয়া দিয়াছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-২৩ : সামূদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদেরকে অস্বীকার করিয়াছিল,
৫৪-২৪ : তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমরা কি আমাদেরই এক ব্যক্তির অনুসরণ করিব? তবে তো আমরা পথভ্রষ্টতায় এবং উন্মত্ততায় পতিত হইব।
৫৪-২৫ : ‘আমাদের মধ্যে কি উহারই প্রতি প্রত্যাদেশ হইয়াছে? না, সে তো একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।’
৫৪-২৬ : আগামীকল্য উহারা জানিবে, কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।
৫৪-২৭ : আমি উহাদের পরীক্ষার জন্য পাঠাইয়াছি এক উষ্ট্রী, অতএব তুমি উহাদের আচরণ লক্ষ্য কর এবং ধৈর্যশীল হও।
৫৪-২৮ : এবং উহাদেরকে জানাইয়া দাও যে, উহাদের মধ্যে পানি বণ্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্য প্রত্যেকে উপস্থিত হইবে পালাক্রমে।
৫৪-২৯ : অতঃপর উহারা উহাদের এক সঙ্গীকে আহ্বান করিল, সে উহাকে ধরিয়া হত্যা করিল।
৫৪-৩০ : কিরূপ কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।
৫৪-৩১ : আমি উহাদেরকে আঘাত হানিয়াছিলাম এক মহানাদ দ্বারা; ফলে উহারা হইয়া গেল খোঁয়াড় প্রস্তুতকারীর বিখণ্ডিত শুষ্ক শাখা - প্রশাখার ন্যায়।
৫৪-৩২ : আমি কুরআন সহজ করিয়া দিয়াছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-৩৩ : লূত সম্প্রদায় অস্বীকার করিয়াছিল সতর্ককারীদেরকে,
৫৪-৩৪ : আমি উহাদের উপর প্রেরণ করিয়াছিলাম প্রস্তর বহনকারী প্রচণ্ড ঝটিকা, কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয় ; তাহাদেরকে আমি উদ্ধার করিয়াছিলাম রাত্রির শেষাংশে
৫৪-৩৫ : আমার বিশেষ অনুগ্রহস্বরূপ; যাহারা কৃতজ্ঞ, আমি এইভাবেই তাহাদেরকে পুরস্কৃত করিয়া থাকি।
৫৪-৩৬ : লূত উহাদেরকে সতর্ক করিয়াছিল আমার কঠোর শাস্তি সম্পর্কে; কিন্তু উহারা সতর্কবাণী সম্বন্ধে বিতণ্ডা শুরু করিল।
৫৪-৩৭ : উহারা লূতের নিকট হইতে তাহার মেহমানদেরকে অসদুদ্দেশ্যে দাবি করিল, তখন আমি উহাদের দৃষ্টিশক্তি লোপ করিয়া দিলাম এবং আমি বলিলাম, ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্ক - বাণীর পরিণাম।
৫৪-৩৮ : প্রত্যূষে বিরামহীন শাস্তি তাহাদেরকে আঘাত করিল।
৫৪-৩৯ : এবং আমি বলিলাম, ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম।’
৫৪-৪০ : আমি কুরআন সহজ করিয়া দিয়াছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-৪১ : ফির‘আওন সম্প্রদায়ের নিকটও আসিয়াছিল সতর্ককারী;
৫৪-৪২ : কিন্তু উহারা আমার সকল নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করিল, অতঃপর পরাক্রম - শালী ও সর্বশক্তিমানরূপে আমি উহাদেরকে সুকঠিন শাস্তি দিলাম।
৫৪-৪৩ : তোমাদের মধ্যকার কাফিররা কি উহাদের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ? না কি তোমাদের অব্যাহতির কোন সনদ রহিয়াছে পূর্ববর্তী কিতাবে?
৫৪-৪৪ : ইহারা কি বলে, ‘আমরা এক সঙ্ঘবদ্ধ অপরাজেয় দল?’
৫৪-৪৫ : এই দল তো শীঘ্রই পরাজিত হইবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে,
৫৪-৪৬ : অধিকন্তু কিয়ামত উহাদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামত হইবে কঠিনতর ও তিক্ততর;
৫৪-৪৭ : নিশ্চয়ই অপরাধীরা বিভ্রান্ত ও বিকারগ্রস্ত।
৫৪-৪৮ : যেদিন উহাদের উপুড় করিয়া টানিয়া লইয়া যাওয়া হইবে জাহান্নামের দিকে; সেই দিন বলা হইবে, ‘জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন কর।’
৫৪-৪৯ : আমি সকল কিছু সৃষ্টি করিয়াছি নির্ধারিত পরিমাপে,
৫৪-৫০ : আমার আদেশ তো একটি কথায় নিষ্পন্ন, চক্ষুর পলকের মত।
৫৪-৫১ : আমি ধ্বংস করিয়াছি তোমাদের মত দলগুলিকে; অতএব উহা হইতে উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
৫৪-৫২ : উহাদের সমস্ত কার্যকলাপ আছে আমলনামায়,
৫৪-৫৩ : আছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সমস্ত কিছুই লিপিবদ্ধ।
৫৪-৫৪ : মুত্তাকীরা থাকিবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে,
৫৪-৫৫ : যোগ্য আসনে, সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী আল্লাহ্র সান্নিধ্যে।