بَرَآءَةٌ مِّنَ اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖۤ اِلَى الَّذِيۡنَ عَاهَدتُّمۡ مِّنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ ؕ﴿۱﴾
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুন৯-১ : ইহা সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের পক্ষ হইতে সেই সমস্ত মুশরিকদের সঙ্গে যাহাদের সঙ্গে তোমরা পারস্পরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়াছিলে।
فَسِيۡحُوۡا فِى الۡاَرۡضِ اَرۡبَعَةَ اَشۡهُرٍ وَّاعۡلَمُوۡۤا اَنَّكُمۡ غَيۡرُ مُعۡجِزِى اللّٰهِۙ وَاَنَّ اللّٰهَ مُخۡزِى الۡكٰفِرِيۡنَ﴿۲﴾
৯-২ : অতঃপর তোমরা দেশে চারি মাসকাল পরিভ্রমণ কর ও জানিয়া রাখ, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করিতে পারিবে না এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কাফিরদের লাঞ্ছিত করিয়া থাকেন।
وَاَذَانٌ مِّنَ اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖۤ اِلَى النَّاسِ يَوۡمَ الۡحَجِّ الۡاَكۡبَرِ اَنَّ اللّٰهَ بَرِىۡۤءٌ مِّنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ ۙ وَ رَسُوۡلُهٗ ؕ فَاِنۡ تُبۡتُمۡ فَهُوَ خَيۡرٌ لَّـكُمۡ ۚ وَاِنۡ تَوَلَّيۡتُمۡ فَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّكُمۡ غَيۡرُ مُعۡجِزِى اللّٰهِ ؕ وَبَشِّرِ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا بِعَذَابٍ اَ لِيۡمٍۙ﴿۳﴾
৯-৩ : মহান হজ্জের দিবসে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের পক্ষ হইতে মানুষের প্রতি ইহা এক ঘোষণা যে, নিশ্চয়ই মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ্ দায়মুক্ত এবং তাঁহার রাসূলও। তোমরা যদি তওবা কর তবে তাহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরাও তবে জানিয়া রাখ, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করিতে পারিবে না এবং কাফিরদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও,
اِلَّا الَّذِيۡنَ عَاهَدتُّمۡ مِّنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ ثُمَّ لَمۡ يَنۡقُصُوۡكُمۡ شَيۡـًٔـا وَّلَمۡ يُظَاهِرُوۡا عَلَيۡكُمۡ اَحَدًا فَاَتِمُّوۡۤا اِلَيۡهِمۡ عَهۡدَهُمۡ اِلٰى مُدَّتِهِمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُتَّقِيۡنَ﴿۴﴾
৯-৪ : তবে মুশরিকদের মধ্যে যাহাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ ও পরে যাহারা তোমাদের চুক্তি রক্ষায় কোন ত্রুটি করে নাই এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাহাকেও সাহায্য করে নাই, তাহাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পূর্ণ করিবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দকরেন।
فَاِذَا انْسَلَخَ الۡاَشۡهُرُ الۡحُـرُمُ فَاقۡتُلُوا الۡمُشۡرِكِيۡنَ حَيۡثُ وَجَدْتُّمُوۡهُمۡ وَخُذُوۡهُمۡ وَاحۡصُرُوۡهُمۡ وَاقۡعُدُوۡا لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدٍ ۚ فَاِنۡ تَابُوۡا وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ فَخَلُّوۡا سَبِيۡلَهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۵﴾
৯-৫ : অতঃপর নিষিদ্ধ মাসসমূহ অতিবাহিত হইলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাইবে হত্যা করিবে, তাহাদেরকে বন্দী করিবে, অবরোধ করিবে এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাহাদের জন্য ওঁৎ পাতিয়া থাকিবে। কিন্তু যদি তাহারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তাহাদের পথ ছাড়িয়া দিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَاِنۡ اَحَدٌ مِّنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ اسۡتَجَارَكَ فَاَجِرۡهُ حَتّٰى يَسۡمَعَ كَلَامَ اللّٰهِ ثُمَّ اَبۡلِغۡهُ مَاۡمَنَهٗ ؕ ذٰ لِكَ بِاَنَّهُمۡ قَوۡمٌ لَّا يَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶﴾
৯-৬ : মুশরিকদের মধ্যে কেহ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করিলে তুমি তাহাকে আশ্রয় দিবে যাহাতে সে আল্লাহ্র বাণী শুনিতে পায় ; অতঃপর তাহাকে তাহার নিরাপদ স্থানে পৌঁছাইয়া দিবে; কারণ তাহারা অজ্ঞ লোক।
كَيۡفَ يَكُوۡنُ لِلۡمُشۡرِكِيۡنَ عَهۡدٌ عِنۡدَ اللّٰهِ وَعِنۡدَ رَسُوۡلِهٖۤ اِلَّا الَّذِيۡنَ عَاهَدتُّمۡ عِنۡدَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِ ۚ فَمَا اسۡتَقَامُوۡا لَـكُمۡ فَاسۡتَقِيۡمُوۡا لَهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُتَّقِيۡنَ﴿۷﴾
৯-৭ : আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের নিকট মুশরিকদের চুক্তি কি করিয়া বলবৎ থাকিবে ? তবে যাহাদের সঙ্গে মসজিদুল হারামের সন্নিকটে তোমরা পারস্পরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়াছিলে, যাবৎ তাহারা তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকিবে তোমরাও তাহাদের চুক্তিতে স্থির থাকিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দকরেন।
كَيۡفَ وَاِنۡ يَّظۡهَرُوۡا عَلَيۡكُمۡ لَا يَرۡقُبُوۡا فِيۡكُمۡ اِلًّا وَّلَا ذِمَّةً ؕ يُرۡضُوۡنَـكُمۡ بِاَفۡوَاهِهِمۡ وَتَاۡبٰى قُلُوۡبُهُمۡۚ وَاَكۡثَرُهُمۡ فٰسِقُوۡنَۚ ﴿۸﴾
৯-৮ : কেমন করিয়া থাকিবে ? তাহারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তবে তাহারা তোমাদের আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দিবে না; তাহারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট রাখে; কিন্তু তাহাদের হৃদয় উহা অস্বীকার করে; তাহাদের অধিকাংশ সত্যত্যাগী।
اِشۡتَرَوۡا بِاٰيٰتِ اللّٰهِ ثَمَنًا قَلِيۡلًا فَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِيۡلِهٖ ؕ اِنَّهُمۡ سَآءَ مَا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ﴿۹﴾
৯-৯ : তাহারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহ তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে এবং তাহারা লোকদেরকে তাঁহার পথ হইতে নিবৃত্ত করে; নিশ্চয়ই তাহারা যাহা করিয়া থাকে তাহা অতি নিকৃষ্ট!
لَا يَرۡقُبُوۡنَ فِىۡ مُؤۡمِنٍ اِلًّا وَّلَا ذِمَّةً ؕ وَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الۡمُعۡتَدُوۡنَ﴿۱۰﴾
৯-১০ : তাহারা কোন মু’মিনের সঙ্গে আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করে না, তাহারাই সীমালংঘনকারী।
فَاِنۡ تَابُوۡا وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتَوُا الزَّكٰوةَ فَاِخۡوَانُكُمۡ فِى الدِّيۡنِؕ وَنُفَصِّلُ الۡاٰيٰتِ لِقَوۡمٍ يَّعۡلَمُوۡنَ﴿۱۱﴾
৯-১১ : অতঃপর তাহারা যদি তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তাহারা তোমাদের দীনী ভাই ; জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আমি নিদর্শন স্পষ্টরূপে বিবৃত করি।
وَاِنۡ نَّكَثُوۡۤا اَيۡمَانَهُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ عَهۡدِهِمۡ وَطَعَنُوۡا فِىۡ دِيۡـنِكُمۡ فَقَاتِلُوۡۤا اَٮِٕمَّةَ الۡـكُفۡرِۙ اِنَّهُمۡ لَاۤ اَيۡمَانَ لَهُمۡ لَعَلَّهُمۡ يَنۡتَهُوۡنَ﴿۱۲﴾
৯-১২ : তাহাদের চুক্তির পর তাহারা যদি তাহাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দীন সম্বন্ধে বিদ্রূপ করে তবে কাফিরদের প্রধানদের সঙ্গে যুদ্ধ কর; ইহারা এমন লোক যাহাদের কোন প্রতিশ্রুতি রহিল না; যেন তাহারা নিবৃত্ত হয়।
اَلَا تُقَاتِلُوۡنَ قَوۡمًا نَّكَثُوۡۤا اَيۡمَانَهُمۡ وَهَمُّوۡا بِاِخۡرَاجِ الرَّسُوۡلِ وَهُمۡ بَدَءُوۡكُمۡ اَوَّلَ مَرَّةٍ ؕ اَتَخۡشَوۡنَهُمۡ ۚ فَاللّٰهُ اَحَقُّ اَنۡ تَخۡشَوۡهُ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ﴿۱۳﴾
৯-১৩ : তোমরা কি সেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করিবে না, যাহারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করিয়াছে ও রাসূলকে বহিষ্কারের জন্য সংকল্প করিয়াছে? উহারাই প্রথম তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছে। তোমরা কি তাহাদেরকে ভয় কর ? আল্লাহ্কে ভয় করাই তোমাদের পক্ষে অধিক সমীচীন, যদি তোমরা মু’মিন হও।
قَاتِلُوۡهُمۡ يُعَذِّبۡهُمُ اللّٰهُ بِاَيۡدِيۡكُمۡ وَيُخۡزِهِمۡ وَيَنۡصُرۡكُمۡ عَلَيۡهِمۡ وَيَشۡفِ صُدُوۡرَ قَوۡمٍ مُّؤۡمِنِيۡنَۙ﴿۱۴﴾
৯-১৪ : তোমরা তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিবে। তোমাদের হাতে আল্লাহ্ উহাদেরকে শাস্তি দিবেন, উহাদেরকে লাঞ্ছিত করিবেন, উহাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করিবেন ও মু’মিনদের চিত্ত প্রশান্ত করিবেন,
وَيُذۡهِبۡ غَيۡظَ قُلُوۡبِهِمۡ ؕ وَ يَتُوۡبُ اللّٰهُ عَلٰى مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ﴿۱۵﴾
৯-১৫ : এবং তিনি উহাদের অন্তরের ক্ষোভ দূর করিবেন। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা তাহার প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হন, আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَكُوۡا وَلَـمَّا يَعۡلَمِ اللّٰهُ الَّذِيۡنَ جَاهَدُوۡا مِنۡكُمۡ وَلَمۡ يَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلَا رَسُوۡلِهٖ وَلَا الۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَلِيۡجَةً ؕ وَاللّٰهُ خَبِيۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶﴾
৯-১৬ : তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদেরকে এমনি ছাড়িয়া দেওয়া হইবে যখন পর্যন্ত আল্লাহ্ না প্রকাশ করেন তোমাদের মধ্যে কাহারা মুজাহিদ এবং কাহারা আল্লাহ্, তাঁহার রাসূল ও মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কাহাকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নাই ? তোমরা যাহা কর, সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
مَا كَانَ لِلۡمُشۡرِكِيۡنَ اَنۡ يَّعۡمُرُوۡا مَسٰجِدَ اللّٰهِ شٰهِدِيۡنَ عَلٰٓى اَنۡفُسِهِمۡ بِالـكُفۡرِؕ اُولٰۤٮِٕكَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُهُمۡ ۖۚ وَ فِى النَّارِ هُمۡ خٰلِدُوۡنَ ﴿۱۷﴾
৯-১৭ : মুশরিকরা যখন নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে তখন তাহারা আল্লাহ্র মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করিবে - এমন হইতে পারে না। উহারা এমন, যাহাদের সমস্ত কর্ম ব্যর্থ হইয়াছে এবং উহারা দোজখেই স্থায়িভাবে অবস্থান করিবে।
اِنَّمَا يَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَاَ قَامَ الصَّلٰوةَ وَاٰتَى الزَّكٰوةَ وَلَمۡ يَخۡشَ اِلَّا اللّٰهَ فَعَسٰٓى اُولٰۤٮِٕكَ اَنۡ يَّكُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُهۡتَدِيۡنَ﴿۱۸﴾
৯-১৮ : তাহারাই তো আল্লাহ্র মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করিবে, যাহারা ঈমান আনে আল্লাহ্ ও আখিরাতে এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাহাকেও ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তাহারা হইবে সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
اَجَعَلۡتُمۡ سِقَايَةَ الۡحَـآجِّ وَعِمَارَةَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَـرَامِ كَمَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَجَاهَدَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ ؕ لَا يَسۡتَوٗنَ عِنۡدَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِيۡنَۘ ﴿۱۹﴾
৯-১৯ : হাজীদের জন্য পানি সরবরাহ এবং মসজিদুল হারামের রক্ষণাবেক্ষণ করাকে তোমরা কি তাহাদের পুণ্যের সমজ্ঞান কর, যাহারা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করে ? আল্লাহ্র নিকট উহারা সমতুল্য নয়। আল্লাহ্ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
اَلَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَ هَاجَرُوۡا وَجَاهَدُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ بِاَمۡوَالِهِمۡ وَاَنۡفُسِهِمۡۙ اَعۡظَمُ دَرَجَةً عِنۡدَ اللّٰهِؕ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡفَآٮِٕزُوۡنَ﴿۲۰﴾
৯-২০ : যাহারা ঈমান আনে, আল হিজরত করে এবং নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করে তাহারা আল্লাহ্র নিকট মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ, আর তাহারাই সফলকাম।
يُبَشِّرُهُمۡ رَبُّهُمۡ بِرَحۡمَةٍ مِّنۡهُ وَرِضۡوَانٍ وَّجَنّٰتٍ لَّهُمۡ فِيۡهَا نَعِيۡمٌ مُّقِيۡمٌ ۙ ﴿۲۱﴾
৯-২১ : উহাদের প্রতিপালক উহাদেরকে সুসংবাদ দিতেছেন স্বীয় দয়া ও সন্তোষের এবং জান্নাতের, যেখানে আছে তাহাদের জন্য স্থায়ী সুখ - শান্তি।
خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۤ اَبَدًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عِنۡدَهٗۤ اَجۡرٌ عَظِيۡمٌ ﴿۲۲﴾
৯-২২ : সেখানে তাহারা চিরস্থায়ী হইবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্র নিকট আছে মহাপুরস্কার।
يٰۤاَ يُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡۤا اٰبَآءَكُمۡ وَاِخۡوَانَـكُمۡ اَوۡلِيَآءَ اِنِ اسۡتَحَبُّوا الۡـكُفۡرَ عَلَى الۡاِيۡمَانِ ؕ وَمَنۡ يَّتَوَلَّهُمۡ مِّنۡكُمۡ فَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ﴿۲۳﴾
৯-২৩ : হে মু’মিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি ঈমানের মুকাবিলায় কুফরীকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে উহাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করিও না। তোমাদের মধ্যে যাহারা উহাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তাহারাই জালিম।
قُلۡ اِنۡ كَانَ اٰبَآؤُكُمۡ وَاَبۡنَآؤُكُمۡ وَاِخۡوَانُكُمۡ وَاَزۡوَاجُكُمۡ وَعَشِيۡرَتُكُمۡ وَ اَمۡوَالُ ۨاقۡتَرَفۡتُمُوۡهَا وَتِجَارَةٌ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَ مَسٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَاۤ اَحَبَّ اِلَيۡكُمۡ مِّنَ اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ وَ جِهَادٍ فِىۡ سَبِيۡلِهٖ فَتَرَ بَّصُوۡا حَتّٰى يَاۡتِىَ اللّٰهُ بِاَمۡرِهٖ ؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الۡفٰسِقِيۡنَ ﴿۲۴﴾
৯-২৪ : বল, ‘তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ্, তাঁহার রাসূল এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা অপেক্ষা অধিক প্রিয় হয় তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের স্বগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা - বাণিজ্য - যাহার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান - যাহা তোমরা ভালবাস, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহ্র নির্দেশ আসা পর্যন্ত।’ আল্লাহ্ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
لَـقَدۡ نَصَرَكُمُ اللّٰهُ فِىۡ مَوَاطِنَ كَثِيۡرَةٍ ۙ وَّيَوۡمَ حُنَيۡنٍ ۙ اِذۡ اَعۡجَبَـتۡكُمۡ كَثۡرَتُكُمۡ فَلَمۡ تُغۡنِ عَنۡكُمۡ شَيۡـًٔـا وَّضَاقَتۡ عَلَيۡكُمُ الۡاَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ ثُمَّ وَلَّـيۡتُمۡ مُّدۡبِرِيۡنَۚ ﴿۲۵﴾
৯-২৫ : আল্লাহ্ তোমাদেরকে তো সাহায্য করিয়াছেন বহু ক্ষেত্রে এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিনে যখন তোমাদেরকে উৎফুল্ল করিয়াছিল তোমাদের সংখ্যাধিক্য; কিন্তু উহা তোমাদের কোন কাজে আসে নাই এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হইয়াছিল, পরে তোমরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিয়া পলায়ন করিয়াছিলে।
ثُمَّ اَنۡزَلَ اللّٰهُ سَكِيۡنَـتَهٗ عَلٰى رَسُوۡلِهٖ وَعَلَى الۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَاَنۡزَلَ جُنُوۡدًا لَّمۡ تَرَوۡهَا ۚ وَعَذَّبَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا ؕ وَذٰ لِكَ جَزَآءُ الۡـكٰفِرِيۡنَ﴿۲۶﴾
৯-২৬ : অতঃপর আল্লাহ্ তাঁহার নিকট হইতে তাঁহার রাসূল ও মু’মিনদের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং এমন এক সৈন্যবাহিনী অবতীর্ণ করেন যাহা তোমরা দেখিতে পাও নাই এবং তিনি কাফিরদেরকে শাস্তি প্রদান করেন; ইহাই কাফিরদের কর্মফল।
ثُمَّ يَتُوۡبُ اللّٰهُ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰ لِكَ عَلٰى مَنۡ يَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ ﴿۲۷﴾
৯-২৭ : ইহার পরও যাহার প্রতি ইচ্ছা আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ হইবেন; আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡمُشۡرِكُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا يَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَـرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هٰذَا ۚ وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ عَيۡلَةً فَسَوۡفَ يُغۡنِيۡكُمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖۤ اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ ﴿۲۸﴾
৯-২৮ : হে মু’মিনগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র; সুতরাং এই বৎসরের পর তাহারা যেন মসজিদুল হারামের নিকট না আসে। যদি তোমরা দারিদ্র্যের আশঙ্কা কর তবে আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে তাঁহার নিজ করুণায় তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
قَاتِلُوا الَّذِيۡنَ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَلَا بِالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَلَا يُحَرِّمُوۡنَ مَا حَرَّمَ اللّٰهُ وَ رَسُوۡلُهٗ وَلَا يَدِيۡنُوۡنَ دِيۡنَ الۡحَـقِّ مِنَ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوا الۡـكِتٰبَ حَتّٰى يُعۡطُوا الۡجِزۡيَةَ عَنۡ يَّدٍ وَّهُمۡ صٰغِرُوۡنَ﴿۲۹﴾
৯-২৯ : যাহাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাদের মধ্যে যাহারা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনে না, শেষদিনেও নয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল যাহা হারাম করিয়াছেন তাহা হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দীন অনুসরণ করে না, তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিবে, যে পর্যন্ত না তাহারা নত হইয়া স্বহস্তে জিযিয়া দেয়।
وَقَالَتِ الۡيَهُوۡدُ عُزَيۡرُ ۨابۡنُ اللّٰهِ وَقَالَتِ النَّصٰرَى الۡمَسِيۡحُ ابۡنُ اللّٰهِؕ ذٰ لِكَ قَوۡلُهُمۡ بِاَ فۡوَاهِهِمۡ ۚ يُضَاهِئُونَ قَوۡلَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ قَاتَلَهُمُ اللّٰهُ ۚ اَنّٰى يُؤۡفَكُوۡنَ﴿۳۰﴾
৯-৩০ : ইয়াহূদীরা বলে, ‘উযায়র আল্লাহ্র পুত্র’ এবং খ্রিস্টানরা বলে, ‘মসীহ্ আল্লাহ্র পুত্র।’ উহা তাহাদের মুখের কথা। পূর্বে যাহারা কুফরী করিয়াছিল উহারা তাহাদের মত কথা বলে। আল্লাহ্ উহাদেরকে ধ্বংস করুন। আর কোন্ দিকে উহাদেরকে ফিরাইয়া দেওয়া হইয়াছে!
اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَانَهُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَالۡمَسِيۡحَ ابۡنَ مَرۡيَمَ ۚ وَمَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِيَـعۡبُدُوۡۤا اِلٰهًا وَّاحِدًا ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ؕ سُبۡحٰنَهٗ عَمَّا يُشۡرِكُوۡنَ﴿۳۱﴾
৯-৩১ : তাহারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাহাদের পণ্ডিতগণকে ও সংসার - বিরাগিগণকে তাহাদের প্রভুরূপে গ্রহণ করিয়াছে এবং মরিয়ম - তনয় মসীহ্কেও। কিন্তু উহারা এক ইলাহের ‘ইবাদত করিবার জন্যই আদিষ্ট হইয়াছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তাহারা যাহাকে শরীক করে তাহা হইতে তিনি কত পবিত্র!
يُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ يُّطۡفِــُٔــوۡا نُوۡرَ اللّٰهِ بِاَ فۡوَاهِهِمۡ وَيَاۡبَى اللّٰهُ اِلَّاۤ اَنۡ يُّتِمَّ نُوۡرَهٗ وَلَوۡ كَرِهَ الۡـكٰفِرُوۡنَ ﴿۳۲﴾
৯-৩২ : তাহারা তাহাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহ্র জ্যোতি নির্বাপিত করিতে চায়। কাফিররা অপ্রীতিকর মনে করিলেও আল্লাহ্ তাঁহার জ্যোতির পূর্ণ উদ্ভাসন ব্যতীত অন্য কিছু চান না।
هُوَ الَّذِىۡۤ اَرۡسَلَ رَسُوۡلَهٗ بِالۡهُدٰى وَدِيۡنِ الۡحَـقِّ لِيُظۡهِرَهٗ عَلَى الدِّيۡنِ كُلِّهٖۙ وَلَوۡ كَرِهَ الۡمُشۡرِكُوۡنَ﴿۳۳﴾
৯-৩৩ : মুশরিকরা অপ্রীতিকর মনে করিলেও অপর সমস্ত দীনের উপর জয়যুক্ত করিবার জন্য তিনিই পথনির্দেশ ও সত্য দীনসহ তাঁহার রাসূল প্রেরণ করিয়াছেন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ كَثِيۡرًا مِّنَ الۡاَحۡبَارِ وَالرُّهۡبَانِ لَيَاۡكُلُوۡنَ اَمۡوَالَ النَّاسِ بِالۡبَاطِلِ وَيَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِؕ وَالَّذِيۡنَ يَكۡنِزُوۡنَ الذَّهَبَ وَالۡفِضَّةَ وَلَا يُنۡفِقُوۡنَهَا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِۙ فَبَشِّرۡهُمۡ بِعَذَابٍ اَلِيۡمٍۙ﴿۳۴﴾
৯-৩৪ : হে মু’মিনগণ! পণ্ডিত এবং সংসার বিরাগীদের মধ্যে অনেকেই লোকের ধন - সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করিয়া থাকে এবং লোককে আল্লাহ্র পথ হইতে নিবৃত্ত করে। আর যাহারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং উহা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না উহাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও।
يَّومَ يُحۡمٰى عَلَيۡهَا فِىۡ نَارِ جَهَـنَّمَ فَتُكۡوٰى بِهَا جِبَاهُهُمۡ وَجُنُوۡبُهُمۡ وَظُهُوۡرُهُمۡؕ هٰذَا مَا كَنَزۡتُمۡ لِاَنۡفُسِكُمۡ فَذُوۡقُوۡا مَا كُنۡتُمۡ تَكۡنِزُوۡنَ﴿۳۵﴾
৯-৩৫ : যেদিন জাহান্নামের অগ্নিতে উহা উত্তপ্ত করা হইবে এবং উহা দ্বারা তাহাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হইবে সেদিন বলা হইবে, ‘ইহাই উহা যাহা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করিতে। সুতরাং তোমরা যাহা পুঞ্জীভূত করিয়াছিলে তাহা আস্বাদন কর।’
اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوۡرِ عِنۡدَ اللّٰهِ اثۡنَا عَشَرَ شَهۡرًا فِىۡ كِتٰبِ اللّٰهِ يَوۡمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ مِنۡهَاۤ اَرۡبَعَةٌ حُرُمٌ ؕ ذٰ لِكَ الدِّيۡنُ الۡقَيِّمُ ۙ فَلَا تَظۡلِمُوۡا فِيۡهِنَّ اَنۡفُسَكُمۡ ؕ وَقَاتِلُوا الۡمُشۡرِكِيۡنَ كَآفَّةً كَمَا يُقَاتِلُوۡنَكُمۡ كَآفَّةً ؕ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الۡمُتَّقِيۡنَ ﴿۳۶﴾
৯-৩৬ : নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হইতেই আল্লাহ্র বিধানে আল্লাহ্র নিকট মাস গণনায় মাস বারটি; তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, ইহাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং ইহার মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করিও না এবং তোমরা মুশরিকদের সঙ্গে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করিবে, যেমন তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করিয়া থাকে। এবং জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তো মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।
اِنَّمَا النَّسِىۡٓءُ زِيَادَةٌ فِى الۡكُفۡرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا يُحِلُّوۡنَهٗ عَامًا وَّيُحَرِّمُوۡنَهٗ عَامًا لِّيُوَاطِــُٔــوۡا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللّٰهُ فَيُحِلُّوۡا مَا حَرَّمَ اللّٰهُ ؕ زُيِّنَ لَهُمۡ سُوۡۤءُ اَعۡمَالِهِمۡ ؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الۡـكٰفِرِيۡنَ ﴿۳۷﴾
৯-৩৭ : এই যে মাসকে পিছাইয়া দেওয়া কেবল কুফরী বৃদ্ধি করা, যাহা দ্বারা কাফিরদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়। তাহারা উহাকে কোন বৎসর বৈধ করে এবং কোন বৎসর অবৈধ করে যাহাতে তাহারা আল্লাহ্ যেইগুলিকে নিষিদ্ধ করিয়াছেন, সেইগুলির গণনা পূর্ণ করিতে পারে ; অনন্তর আল্লাহ্ যাহা হারাম করিয়াছেন তাহা হালাল করিতে পারে। তাহাদের মন্দ কাজগুলি তাহাদের জন্য শোভনীয় করা হইয়াছে। আল্লাহ্ কাফির সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَا لَـكُمۡ اِذَا قِيۡلَ لَـكُمُ انْفِرُوۡا فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ اثَّاقَلۡـتُمۡ اِلَى الۡاَرۡضِ ؕ اَرَضِيۡتُمۡ بِالۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا مِنَ الۡاٰخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا فِى الۡاٰخِرَةِ اِلَّا قَلِيۡلٌ ﴿۳۸﴾
৯-৩৮ : হে মু’মিনগণ! তোমাদের কী হইল যে, তোমাদেরকে যখন আল্লাহ্র পথে অভিযানে বাহির হইতে বলা হয় তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হইয়া ভূতলে ঝুঁকিয়া পড় ? তোমরা কি আখিরাতের পরিবর্তে পার্থিব জীবনে পরিতুষ্ট হইয়াছ ? আখিরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনের ভোগের উপকরণ তো অকিঞ্চিৎকর!
اِلَّا تَـنۡفِرُوۡا يُعَذِّبۡكُمۡ عَذَابًا اَلِيۡمًا ۙ وَّيَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَيۡرَكُمۡ وَلَا تَضُرُّوۡهُ شَيۡـًٔــا ؕ وَاللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ ﴿۳۹﴾
৯-৩৯ : যদি তোমরা অভিযানে বাহির না হও, তবে তিনি তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দিবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন এবং তোমরা তাঁহার কোনই ক্ষতি করিতে পারিবে না। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
اِلَّا تَـنۡصُرُوۡهُ فَقَدۡ نَصَرَهُ اللّٰهُ اِذۡ اَخۡرَجَهُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا ثَانِىَ اثۡنَيۡنِ اِذۡ هُمَا فِى الۡغَارِ اِذۡ يَقُوۡلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَحۡزَنۡ اِنَّ اللّٰهَ مَعَنَا ۚ فَاَنۡزَلَ اللّٰهُ سَكِيۡنَـتَهٗ عَلَيۡهِ وَاَ يَّدَهٗ بِجُنُوۡدٍ لَّمۡ تَرَوۡهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوا السُّفۡلٰى ؕ وَكَلِمَةُ اللّٰهِ هِىَ الۡعُلۡيَا ؕ وَاللّٰهُ عَزِيۡزٌ حَكِيۡمٌ ﴿۴۰﴾
৯-৪০ : যদি তোমরা তাহাকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহ্ তো তাহাকে সাহায্য করিয়াছিলেন যখন কাফিররা তাহাকে বহিষ্কার করিয়াছিল এবং সে ছিল দুইজনের দ্বিতীয় জন, যখন তাহারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিল ; সে তখন তাহার সঙ্গীকে বলিয়াছিল, ‘বিষন্ন হইও না, আল্লাহ্ তো আমাদের সঙ্গে আছেন।’ অতঃপর আল্লাহ্ তাঁহার উপর তাঁহার প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং তাহাকে শক্তিশালী করেন এমন এক সৈন্যবাহিনী দ্বারা যাহা তোমরা দেখ নাই; এবং তিনি কাফিরদের কথা হেয় করেন। আল্লাহ্র কথাই সর্বোপরি এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
اِنْفِرُوۡا خِفَافًا وَّثِقَالًا وَّجَاهِدُوۡا بِاَمۡوَالِكُمۡ وَاَنۡفُسِكُمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ ؕ ذٰ لِكُمۡ خَيۡرٌ لَّـكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾
৯-৪১ : অভিযানে বাহির হইয়া পড়, হালকা অবস্থায় হউক অথবা ভারি অবস্থায়, এবং সংগ্রাম কর আল্লাহ্র পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা। উহাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা জানিতে !
لَوۡ كَانَ عَرَضًا قَرِيۡبًا وَّسَفَرًا قَاصِدًا لَّاتَّبَعُوۡكَ وَلٰـكِنۡۢ بَعُدَتۡ عَلَيۡهِمُ الشُّقَّةُ ؕ وَسَيَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰهِ لَوِ اسۡتَطَعۡنَا لَخَـرَجۡنَا مَعَكُمۡ ۚ يُهۡلِكُوۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ ۚ وَاللّٰهُ يَعۡلَمُ اِنَّهُمۡ لَـكٰذِبُوۡنَ ﴿۴۲﴾
৯-৪২ : আশু সম্পদ লাভের সম্ভাবনা থাকিলে ও সফর সহজ হইলে উহারা নিশ্চয়ই তোমার অনুসরণ করিত; কিন্তু উহাদের নিকট যাত্রাপথ সুদীর্ঘ মনে হইল। উহারা অচিরেই আল্লাহ্র নামে শপথ করিয়া বলিবে, ‘পারিলে আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে বাহির হইতাম।’ উহারা নিজেদেরকেই ধ্বংস করে। আল্লাহ্ জানেন উহারা অবশ্যই মিথ্যাচারী।
عَفَا اللّٰهُ عَنۡكَۚ لِمَ اَذِنۡتَ لَهُمۡ حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَكَ الَّذِيۡنَ صَدَقُوۡا وَتَعۡلَمَ الۡـكٰذِبِيۡنَ﴿۴۳﴾
৯-৪৩ : আল্লাহ্ তোমাকে ক্ষমা করিয়াছেন। কাহারা সত্যবাদী তাহা তোমার নিকট স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এবং কাহারা মিথ্যাবাদী তাহা না জানা পর্যন্ত তুমি কেন উহাদেরকে অব্যাহতি দিলে ?
لَا يَسۡتَـاۡذِنُكَ الَّذِيۡنَ يُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ اَنۡ يُّجَاهِدُوۡا بِاَمۡوَالِهِمۡ وَاَنۡفُسِهِمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌۢ بِالۡمُتَّقِيۡنَ﴿۴۴﴾
৯-৪৪ : যাহারা আল্লাহে ও শেষ দিবসে ঈমান আনে তাহারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে অব্যাহতি পাইবার প্রার্থনা তোমার নিকট করে না। আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
اِنَّمَا يَسۡتَاْذِنُكَ الَّذِيۡنَ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَارۡتَابَتۡ قُلُوۡبُهُمۡ فَهُمۡ فِىۡ رَيۡبِهِمۡ يَتَرَدَّدُوۡنَ﴿۴۵﴾
৯-৪৫ : তোমার নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করে কেবল উহারাই যাহারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসে ঈমান আনে না এবং যাহাদের চিত্ত সংশয়যুক্ত। উহারা তো আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
وَلَوۡ اَرَادُوۡا الۡخُـرُوۡجَ لَاَعَدُّوۡا لَهٗ عُدَّةً وَّلٰـكِنۡ كَرِهَ اللّٰهُ انۢبِعَاثَهُمۡ فَثَبَّطَهُمۡ وَقِيۡلَ اقۡعُدُوۡا مَعَ الۡقٰعِدِيۡنَ﴿۴۶﴾
৯-৪৬ : উহারা বাহির হইতে চাহিলে উহারা নিশ্চয়ই ইহার জন্য প্রস্তুতির ব্যবস্থা করিত, কিন্তু উহাদের অভিযাত্রা আল্লাহ্র মনঃপূত ছিল না। সুতরাং তিনি উহাদেরকে বিরত রাখেন এবং উহাদেরকে বলা হয়, ‘যাহারা বসিয়া আছে তাহাদের সঙ্গে বসিয়া থাক।’
لَوۡ خَرَجُوۡا فِيۡكُمۡ مَّا زَادُوۡكُمۡ اِلَّا خَبَالًا وَّلَاْاَوۡضَعُوۡا خِلٰلَـكُمۡ يَـبۡغُوۡنَـكُمُ الۡفِتۡنَةَ ۚ وَفِيۡكُمۡ سَمّٰعُوۡنَ لَهُمۡ ؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌۢ بِالظّٰلِمِيۡنَ﴿۴۷﴾
৯-৪৭ : উহারা তোমাদের সঙ্গে বাহির হইলে তোমাদের বিভ্রান্তিই বৃদ্ধি করিত এবং তোমাদের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের মধ্যে ছুটাছুটি করিত। তোমাদের মধ্যে উহাদের জন্য কথা শুনিবার লোক আছে। আল্লাহ্ জালিমদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
لَـقَدِ ابۡتَغَوُا الۡفِتۡنَةَ مِنۡ قَبۡلُ وَقَلَّبُوۡا لَكَ الۡاُمُوۡرَ حَتّٰى جَآءَ الۡحَـقُّ وَظَهَرَ اَمۡرُ اللّٰهِ وَهُمۡ كٰرِهُوۡنَ﴿۴۸﴾
৯-৪৮ : পূর্বেও উহারা ফিত্না সৃষ্টি করিতে চাহিয়াছিল এবং উহারা তোমার বহু কর্মে উলট - পালট করিয়াছিল যতক্ষণ না উহাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সত্য আসিল এবং আল্লাহ্র আদেশ বিজয়ী হইল।
وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّقُوۡلُ ائۡذَنۡ لِّىۡ وَلَا تَفۡتِنِّىۡ ؕ اَلَا فِى الۡفِتۡنَةِ سَقَطُوۡا ؕ وَاِنَّ جَهَـنَّمَ لَمُحِيۡطَةٌ ۢ بِالۡـكٰفِرِيۡنَ﴿۴۹﴾
৯-৪৯ : এবং উহাদের মধ্যে এমন লোক আছে যে বলে, ‘আমাকে অব্যাহতি দাও এবং আমাকে ফিত্নায় ফেলিও না।’ সাবধান! উহারাই ফিত্নাতে পড়িয়া আছে। জাহান্নাম তো কাফিরদেরকে বেষ্টন করিয়াই আছে।
اِنۡ تُصِبۡكَ حَسَنَةٌ تَسُؤۡهُمۡ ۚ وَاِنۡ تُصِبۡكَ مُصِيۡبَةٌ يَّقُوۡلُوۡا قَدۡ اَخَذۡنَاۤ اَمۡرَنَا مِنۡ قَبۡلُ وَيَتَوَلَّوْا وَّهُمۡ فَرِحُوۡنَ﴿۵۰﴾
৯-৫০ : তোমার মঙ্গল হইলে তাহা উহাদেরকে পীড়া দেয় এবং তোমার বিপদ ঘটিলে উহারা বলে, ‘আমরা তো পূর্বাহ্ণেই আমাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করিয়াছিলাম’ এবং উহারা উৎফুল্লচিত্তে সরিয়া পড়ে।
قُلْ لَّنۡ يُّصِيۡبَـنَاۤ اِلَّا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَـنَا ۚ هُوَ مَوۡلٰٮنَا ۚ وَعَلَى اللّٰهِ فَلۡيَتَوَكَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ﴿۵۱﴾
৯-৫১ : বল, ‘আমাদের জন্য আল্লাহ্ যাহা নির্দিষ্ট করিয়াছেন তাহা ব্যতীত আমাদের অন্য কিছু হইবে না; তিনি আমাদের কর্মবিধায়ক এবং আল্লাহ্র উপরই মু’মিনদের নির্ভর করা উচিত।’
قُلۡ هَلۡ تَرَبَّصُوۡنَ بِنَاۤ اِلَّاۤ اِحۡدَى الۡحُسۡنَيَيۡنِؕ وَنَحۡنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمۡ اَنۡ يُّصِيۡبَكُمُ اللّٰهُ بِعَذَابٍ مِّنۡ عِنۡدِهٖۤ اَوۡ بِاَيۡدِيۡنَا ۖ فَتَرَبَّصُوۡۤا اِنَّا مَعَكُمۡ مُّتَرَبِّصُوۡنَ﴿۵۲﴾
৯-৫২ : বল, ‘তোমরা আমাদের দুইটি মঙ্গলের একটির প্রতীক্ষা করিতেছ এবং আমরা প্রতীক্ষা করিতেছি, আল্লাহ্ তোমাদেরকে শাস্তি দিবেন সরাসরি নিজ পক্ষ হইতে অথবা আমাদের হস্ত দ্বারা। অতএব তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সঙ্গে প্রতীক্ষা করিতেছি।'
قُلۡ اَنۡفِقُوۡا طَوۡعًا اَوۡ كَرۡهًا لَّنۡ يُّتَقَبَّلَ مِنۡكُمۡؕ اِنَّكُمۡ كُنۡتُمۡ قَوۡمًا فٰسِقِيۡنَ﴿۵۳﴾
৯-৫৩ : বল, ‘তোমরা স্বেচ্ছায় ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছায়, তোমাদের নিকট হইতে তাহা কিছুতেই গৃহীত হইবে না ; তোমরা তো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।’
وَمَا مَنَعَهُمۡ اَنۡ تُقۡبَلَ مِنۡهُمۡ نَفَقٰتُهُمۡ اِلَّاۤ اَنَّهُمۡ كَفَرُوۡا بِاللّٰهِ وَبِرَسُوۡلِهٖ وَلَا يَاۡتُوۡنَ الصَّلٰوةَ اِلَّا وَهُمۡ كُسَالٰى وَلَا يُنۡفِقُوۡنَ اِلَّا وَهُمۡ كٰرِهُوۡنَ﴿۵۴﴾
৯-৫৪ : উহাদের অর্থসাহায্য গ্রহণ করা নিষেধ করা হইয়াছে এইজন্য যে, উহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলকে অস্বীকার করে, সালাতে শৈথিল্যের সঙ্গে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে অর্থ সাহায্য করে।
فَلَا تُعۡجِبۡكَ اَمۡوَالُهُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُهُمۡؕ اِنَّمَا يُرِيۡدُ اللّٰهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ بِهَا فِى الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا وَتَزۡهَقَ اَنۡفُسُهُمۡ وَهُمۡ كٰفِرُوۡنَ﴿۵۵﴾
৯-৫৫ : সুতরাং উহাদের সম্পদ ও সন্তান - সন্ততি তোমাকে যেন বিমুগ্ধ না করে, আল্লাহ্ তো উহার দ্বারাই উহাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান। উহারা কাফির থাকা অবস্থায় উহাদের আত্মা দেহ ত্যাগ করিবে।
وَيَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰهِ اِنَّهُمۡ لَمِنۡكُمۡؕ وَمَا هُمۡ مِّنۡكُمۡ وَلٰـكِنَّهُمۡ قَوۡمٌ يَّفۡرَقُوۡنَ﴿۵۶﴾
৯-৫৬ : উহারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে যে, উহারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু উহারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, বস্তুত উহারা এমন এক সম্প্রদায় যাহারা ভয় করিয়া থাকে।
لَوۡ يَجِدُوۡنَ مَلۡجَاً اَوۡ مَغٰرٰتٍ اَوۡ مُدَّخَلًا لَّوَلَّوۡا اِلَيۡهِ وَهُمۡ يَجۡمَحُوۡنَ﴿۵۷﴾
৯-৫৭ : উহারা কোন আশ্রয়স্থল, কোন গিরিগুহা অথবা কোন প্রবেশস্থল পাইলে উহার দিকে পলায়ন করিবে ক্ষিপ্রগতিতে।
وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّلۡمِزُكَ فِى الصَّدَقٰتِ ۚ فَاِنۡ اُعۡطُوۡا مِنۡهَا رَضُوۡا وَاِنۡ لَّمۡ يُعۡطَوۡا مِنۡهَاۤ اِذَا هُمۡ يَسۡخَطُوۡنَ﴿۵۸﴾
৯-৫৮ : উহাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যে সোয়াদাকা বণ্টন সম্পর্কে তোমাকে দোষারোপ করে ; অতঃপর ইহার কিছু উহাদেরকে দেওয়া হইলে উহারা পরিতুষ্ট হয়, আর ইহার কিছু উহাদেরকে না দেওয়া হইলে তৎক্ষণাৎ উহারা বিক্ষুব্ধ হয়।
وَلَوۡ اَنَّهُمۡ رَضُوۡا مَاۤ اٰتٰٮهُمُ اللّٰهُ وَرَسُوۡلُهٗۙ وَقَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰهُ سَيُؤۡتِيۡنَا اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖ وَ رَسُوۡلُهٗۙ اِنَّاۤ اِلَى اللّٰهِ رٰغِبُوۡنَ﴿۵۹﴾
৯-৫৯ : ভাল হইত যদি উহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল উহাদেরকে যাহা দিয়াছেন তাহাতে পরিতুষ্ট হইত এবং বলিত, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ্ আমাদেরকে দিবেন নিজ করুণায় এবং তাঁহার রাসূলও; আমরা আল্লাহ্রই প্রতি অনুরক্ত।’
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَالۡمَسٰكِيۡنِ وَالۡعٰمِلِيۡنَ عَلَيۡهَا وَالۡمُؤَلَّـفَةِ قُلُوۡبُهُمۡ وَفِى الرِّقَابِ وَالۡغٰرِمِيۡنَ وَفِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَابۡنِ السَّبِيۡلِؕ فَرِيۡضَةً مِّنَ اللّٰهِؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ﴿۶۰﴾
৯-৬০ : সোয়াদাকা তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাহাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাহাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণ ভারাক্রান্তদের, আল্লাহ্র পথে ও মুসাফিরদের জন্য। ইহা আল্লাহ্র বিধান। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمِنۡهُمُ الَّذِيۡنَ يُؤۡذُوۡنَ النَّبِىَّ وَيَقُوۡلُوۡنَ هُوَ اُذُنٌ ؕ قُلۡ اُذُنُ خَيۡرٍ لَّـكُمۡ يُؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَيُؤۡمِنُ لِلۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَرَحۡمَةٌ لِّـلَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مِنۡكُمۡ ؕ وَالَّذِيۡنَ يُؤۡذُوۡنَ رَسُوۡلَ اللّٰهِ لَهُمۡ عَذَابٌ اَ لِيۡمٌ ﴿۶۱﴾
৯-৬১ : এবং উহাদের মধ্যে এমনও লোক আছে যাহারা নবীকে ক্লেশ দেয় এবং বলে, ‘সে তো কর্ণপাতকারী।’ বল, ‘তাহার কান তোমাদের জন্য যাহা মঙ্গল তাহাই শুনে।’ সে আল্লাহে ঈমান আনে এবং মু’মিনদেরকে বিশ্বাস করে ; তোমাদের মধ্যে যাহারা মু’মিন সে তাহাদের জন্য রহমত এবং যাহারা আল্লাহ্র রাসূলকে ক্লেশ দেয় তাহাদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
يَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰهِ لَـكُمۡ لِيُرۡضُوۡكُمۡۚ وَاللّٰهُ وَرَسُوۡلُهٗۤ اَحَقُّ اَنۡ يُّرۡضُوۡهُ اِنۡ كَانُوۡا مُؤۡمِنِيۡنَ﴿۶۲﴾
৯-৬২ : উহারা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য তোমাদের নিকট আল্লাহ্র শপথ করে। আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল ইহারই অধিক হকদার যে, উহারা তাহাদেরকেই সন্তুষ্ট করে, যদি উহারা মু’মিন হয়।
اَلَمۡ يَعۡلَمُوۡۤا اَنَّهٗ مَنۡ يُّحَادِدِ اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ فَاَنَّ لَهٗ نَارَ جَهَـنَّمَ خَالِدًا فِيۡهَا ؕ ذٰ لِكَ الۡخِزۡىُ الۡعَظِيۡمُ ﴿۶۳﴾
৯-৬৩ : উহারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের বিরোধিতা করে তাহার জন্য তো আছে জাহান্নামের অগ্নি, যেখানে সে স্থায়ী হইবে ? উহাই চরম লাঞ্ছনা।
يَحۡذَرُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ اَنۡ تُنَزَّلَ عَلَيۡهِمۡ سُوۡرَةٌ تُنَبِّئُهُمۡ بِمَا فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ ؕ قُلِ اسۡتَهۡزِءُوۡا ۚ اِنَّ اللّٰهَ مُخۡرِجٌ مَّا تَحۡذَرُوۡنَ﴿۶۴﴾
৯-৬৪ : মুনাফিকেরা ভয় করে, তাহাদের সম্পর্কে এমন এক সূরা না অবতীর্ণ হয়, যাহা উহাদের অন্তরের কথা ব্যক্ত করিয়া দিবে ! বল, ‘বিদ্রূপ করিতে থাক ; তোমরা যাহা ভয় কর আল্লাহ্ তাহা প্রকাশ করিয়া দিবেন।’
وَلَٮِٕنۡ سَاَلۡتَهُمۡ لَيَـقُوۡلُنَّ اِنَّمَا كُنَّا نَخُوۡضُ وَنَلۡعَبُؕ قُلۡ اَبِاللّٰهِ وَاٰيٰتِهٖ وَرَسُوۡلِهٖ كُنۡتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُوۡنَ﴿۶۵﴾
৯-৬৫ : এবং তুমি উহাদেরকে প্রশ্ন করিলে উহারা নিশ্চয়ই বলিবে, ‘আমরা তো আল আলাপ - আলোচনা ও ক্রীড়া - কৌতুক করিতেছিলাম।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্, তাঁহার নিদর্শন ও তাঁহার রাসূলকে বিদ্রূপ করিতেছিলে ?’
لَا تَعۡتَذِرُوۡا قَدۡ كَفَرۡتُمۡ بَعۡدَ اِيۡمَانِكُمۡ ؕ اِنۡ نَّـعۡفُ عَنۡ طَآٮِٕفَةٍ مِّنۡكُمۡ نُـعَذِّبۡ طَآٮِٕفَةً ۢ بِاَنَّهُمۡ كَانُوۡا مُجۡرِمِيۡنَ ﴿۶۶﴾
৯-৬৬ : ‘তোমরা দোষ স্খালনের চেষ্টা করিও না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরী করিয়াছ। তোমাদের মধ্যে কোন দলকে ক্ষমা করিলেও অন্য দলকে শাস্তি দিব - কারণ তাহারা অপরাধী।’
اَلۡمُنٰفِقُوۡنَ وَالۡمُنٰفِقٰتُ بَعۡضُهُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍۘ يَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمُنۡكَرِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمَعۡرُوۡفِ وَيَقۡبِضُوۡنَ اَيۡدِيَهُمۡؕ نَسُوا اللّٰهَ فَنَسِيَهُمۡؕ اِنَّ الۡمُنٰفِقِيۡنَ هُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ﴿۶۷﴾
৯-৬৭ : মুনাফিক নর ও মুনাফিক নারী একে অপরের অনুরূপ, উহারা অসৎকর্মের নির্দেশ দেয় এবং সৎকর্ম নিষেধ করে, উহারা হাতবদ্ধ করিয়া রাখে, উহারা আল্লাহ্কে বিস্মৃত হইয়াছে, ফলে তিনিও উহাদেরকে বিস্মৃত হইয়াছেন; মুনাফিকেরা তো পাপাচারী।
وَعَدَ اللّٰهُ الۡمُنٰفِقِيۡنَ وَالۡمُنٰفِقٰتِ وَالۡـكُفَّارَ نَارَ جَهَـنَّمَ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا ؕ هِىَ حَسۡبُهُمۡ ۚ وَلَـعَنَهُمُ اللّٰهُ ۚ وَلَهُمۡ عَذَابٌ مُّقِيۡمٌ ۙ﴿۶۸﴾
৯-৬৮ : মুনাফিক নর, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন জাহান্নামের অগ্নির, যেখানে উহারা স্থায়ী হইবে, ইহাই উহাদের জন্য যথেষ্ট এবং আল্লাহ্ উহাদেরকে লা‘নত করিয়াছেন এবং উহাদের জন্য রহিয়াছে স্থায়ী শাস্তি;
كَالَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ كَانُوۡۤا اَشَدَّ مِنۡكُمۡ قُوَّةً وَّاَكۡثَرَ اَمۡوَالًا وَّاَوۡلَادًا ؕ فَاسۡتَمۡتَعُوۡا بِخَلَاقِهِمۡ فَاسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِخَلَاقِكُمۡ كَمَا اسۡتَمۡتَعَ الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ بِخَلَاقِهِمۡ وَخُضۡتُمۡ كَالَّذِىۡ خَاضُوۡا ؕ اُولٰۤٮِٕكَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُهُمۡ فِى الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِ ۚ وَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ﴿۶۹﴾
৯-৬৯ : তোমরাও তোমাদের পূর্ববর্তীদের মত যাহারা শক্তিতে তোমাদের অপেক্ষা প্রবল ছিল এবং যাহাদের ধন - সম্পদ ও সন্তান - সন্ততি ছিল তোমাদের অপেক্ষা অধিক, এবং উহারা উহাদের ভাগ্যে যাহা ছিল তাহা ভোগ করিয়াছে ; তোমাদের ভাগ্যে যাহা ছিল তোমরাও তাহা ভোগ করিলে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা উহাদের ভাগ্যে যাহা ছিল তাহা ভোগ করিয়াছে। উহারা যেইরূপ অনর্থক আল আলাপ - আলোচনায় লিপ্ত ছিল তোমরাও সেইরূপ আল আলাপ - আলোচনায় লিপ্ত রহিয়াছ। উহারাই তাহারা যাহাদের কর্ম দুনিয়া ও আখিরাতে ব্যর্থ এবং উহারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
اَلَمۡ يَاۡتِهِمۡ نَبَاُ الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّعَادٍ وَّثَمُوۡدَ ۙ وَقَوۡمِ اِبۡرٰهِيۡمَ وَاَصۡحٰبِ مَدۡيَنَ وَالۡمُؤۡتَفِكٰتِ ؕ اَتَتۡهُمۡ رُسُلُهُمۡ بِالۡبَيِّنٰتِ ۚ فَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيَظۡلِمَهُمۡ وَلٰـكِنۡ كَانُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ يَظۡلِمُوۡنَ ﴿۷۰﴾
৯-৭০ : উহাদের পূর্ববর্তী সূরা নূহ্, ‘আদ ও সামূদের সম্প্রদায়, ইব্রাহীমের সম্প্রদায় এবং মাদ্ইয়ান ও বিধ্বস্ত নগরের অধিবাসীদের সংবাদ কি উহাদের নিকট আসে নাই ? উহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসহ উহাদের রাসূলগণ আসিয়াছিল। আল্লাহ্ এমন নন যে, তাহাদের উপর জুলুম করেন, কিন্তু উহারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করে।
وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَالۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُهُمۡ اَوۡلِيَآءُ بَعۡضٍۘ يَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡكَرِ وَيُقِيۡمُوۡنَ الصَّلٰوةَ وَيُؤۡتُوۡنَ الزَّكٰوةَ وَيُطِيۡعُوۡنَ اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗؕ اُولٰۤٮِٕكَ سَيَرۡحَمُهُمُ اللّٰهُؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِيۡزٌ حَكِيۡمٌ﴿۷۱﴾
৯-৭১ : মু’মিন নর ও মু’মিন নারী একে অপরের বন্ধু, ইহারা সৎকাজের নির্দেশ দেয় এবং অসৎকাজ নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য করে; ইহাদেরকেই আল্লাহ্ কৃপা করিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَعَدَ اللّٰهُ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَالۡمُؤۡمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا وَمَسٰكِنَ طَيِّبَةً فِىۡ جَنّٰتِ عَدۡنٍ ؕ وَرِضۡوَانٌ مِّنَ اللّٰهِ اَكۡبَرُ ؕ ذٰ لِكَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِيۡمُ﴿۷۲﴾
৯-৭২ : আল্লাহ্ মু’মিন নর ও মু’মিন নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন জান্নাতের - যাহার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে এবং স্থায়ী জান্নাতে উত্তম বাসস্থানের। আল্লাহ্র সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং উহাই মহাসাফল্য।
يٰۤاَيُّهَا النَّبِىُّ جَاهِدِ الۡـكُفَّارَ وَالۡمُنٰفِقِيۡنَ وَاغۡلُظۡ عَلَيۡهِمۡؕ وَ مَاۡوٰٮهُمۡ جَهَـنَّمُؕ وَبِئۡسَ الۡمَصِيۡرُ﴿۷۳﴾
৯-৭৩ : হে নবী ! কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর ও উহাদের প্রতি কঠোর হও; উহাদের আবাসস্থল জাহান্নাম, উহা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!
يَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰهِ مَا قَالُوۡا ؕ وَلَقَدۡ قَالُوۡا كَلِمَةَ الۡـكُفۡرِ وَكَفَرُوۡا بَعۡدَ اِسۡلَامِهِمۡ وَهَمُّوۡا بِمَا لَمۡ يَنَالُوۡا ۚ وَمَا نَقَمُوۡۤا اِلَّاۤ اَنۡ اَغۡنٰٮهُمُ اللّٰهُ وَرَسُوۡلُهٗ مِنۡ فَضۡلِهٖ ۚ فَاِنۡ يَّتُوۡبُوۡا يَكُ خَيۡرًا لَّهُمۡ ۚ وَاِنۡ يَّتَوَلَّوۡا يُعَذِّبۡهُمُ اللّٰهُ عَذَابًا اَلِيۡمًا ۙ فِى الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِ ۚ وَمَا لَهُمۡ فِى الۡاَرۡضِ مِنۡ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيۡرٍ﴿۷۴﴾
৯-৭৪ : উহারা আল্লাহ্র শপথ করে যে, উহারা কিছু বলে নাই ; কিন্তু উহারা তো কুফরীর কথা বলিয়াছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর উহারা কাফির হইয়াছে ; উহারা যাহা সংকল্প করিয়াছিল তাহা পায় নাই। আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল নিজ কৃপায় উহাদেরকে অভাবমুক্ত করিয়াছিলেন বলিয়াই উহারা বিরোধিতা করিয়াছিল। উহারা তওবা করিলে উহাদের জন্য ভাল হইবে, কিন্তু উহারা মুখ ফিরাইয়া লইলে আল্লাহ্ দুনিয়ায় ও আখিরাতে উহাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দিবেন; পৃথিবীতে উহাদের কোন অভিাভাবক নাই এবং কোন সাহায্যকারীও নাই।
وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ عَاهَدَ اللّٰهَ لَٮِٕنۡ اٰتٰٮنَا مِنۡ فَضۡلِهٖ لَـنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُوۡنَنَّ مِنَ الصّٰلِحِيۡنَ﴿۷۵﴾
৯-৭৫ : উহাদের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্র নিকট অঙ্গীকার করিয়াছিল, ‘আল্লাহ্ নিজ কৃপায় আমাদেরকে দান করিলে আমরা নিশ্চয়ই সোয়াদাকা দিব এবং অবশ্যই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’
فَلَمَّاۤ اٰتٰٮهُمۡ مِّنۡ فَضۡلِهٖ بَخِلُوۡا بِهٖ وَتَوَلَّوْا وَّهُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ﴿۷۶﴾
৯-৭৬ : অতঃপর যখন তিনি নিজ কৃপায় উহাদেরকে দান করিলেন, তখন উহারা এই বিষয়ে কার্পণ্য করিল এবং বিরুদ্ধভাবাপন্ন হইয়া মুখ ফিরাইল।
فَاَعۡقَبَهُمۡ نِفَاقًا فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ اِلٰى يَوۡمِ يَلۡقَوۡنَهٗ بِمَاۤ اَخۡلَفُوا اللّٰهَ مَا وَعَدُوۡهُ وَبِمَا كَانُوۡا يَكۡذِبُوۡنَ﴿۷۷﴾
৯-৭৭ : পরিণামে তিনি উহাদের অন্তরে কপটতা স্থিত করিলেন, আল্লাহ্র সঙ্গে উহাদের সাক্ষাৎ - দিবস পর্যন্ত, কারণ উহারা আল্লাহ্র নিকট যে অঙ্গীকার করিয়াছিল উহা ভঙ্গ করিয়াছিল; কারণ উহারা ছিল মিথ্যাচারী।
اَلَمۡ يَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ يَعۡلَمُ سِرَّهُمۡ وَنَجۡوٰٮهُمۡ وَاَنَّ اللّٰهَ عَلَّامُ الۡغُيُوۡبِ ۚ﴿۷۸﴾
৯-৭৮ : উহারা কি জানিত না যে, উহাদের অন্তরের গোপন কথা ও উহাদের গোপন পরামর্শ আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন এবং যাহা অদৃশ্য তাহাও তিনি বিশেষভাবে জানেন ?
اَلَّذِيۡنَ يَلۡمِزُوۡنَ الۡمُطَّوِّعِيۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ فِى الصَّدَقٰتِ وَالَّذِيۡنَ لَا يَجِدُوۡنَ اِلَّا جُهۡدَهُمۡ فَيَسۡخَرُوۡنَ مِنۡهُمۡؕ سَخِرَ اللّٰهُ مِنۡهُمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ اَلِيۡمٌ﴿۷۹﴾
৯-৭৯ : মু’মিনদের মধ্যে যাহারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সোয়াদাকা দেয় এবং যাহারা নিজ শ্রম ব্যতিরেকে কিছুই পায় না, তাহাদেরকে যাহারা দোষারোপ করে ও বিদ্রূপ করে, আল্লাহ্ উহাদেরকে বিদ্রূপ করেন, উহাদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
اِسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ اَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡؕ اِنۡ تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ سَبۡعِيۡنَ مَرَّةً فَلَنۡ يَّغۡفِرَ اللّٰهُ لَهُمۡؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمۡ كَفَرُوۡا بِاللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الۡفٰسِقِيۡنَ﴿۸۰﴾
৯-৮০ : তুমি উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না কর একই কথা; তুমি সত্তর বার উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিলেও আল্লাহ্ উহাদেরকে কখনই ক্ষমা করিবেন না। ইহা এইজন্য যে, উহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে কুফরী করিয়াছে। আল্লাহ্ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
فَرِحَ الۡمُخَلَّفُوۡنَ بِمَقۡعَدِهِمۡ خِلٰفَ رَسُوۡلِ اللّٰهِ وَكَرِهُوۡۤا اَنۡ يُّجَاهِدُوۡا بِاَمۡوَالِهِمۡ وَاَنۡفُسِهِمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَقَالُوۡا لَا تَنۡفِرُوۡا فِى الۡحَـرِّؕ قُلۡ نَارُ جَهَـنَّمَ اَشَدُّ حَرًّاؕ لَوۡ كَانُوۡا يَفۡقَهُوۡنَ﴿۸۱﴾
৯-৮১ : যাহারা পশ্চাতে রহিয়া গেল তাহারা আল্লাহ্র রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করিয়া বসিয়া থাকাতেই আনন্দবোধ করিল এবং তাহাদের ধন - সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা অপছন্দকরিল এবং তাহারা বলিল, ‘গরমের মধ্যে অভিযানে বাহির হইও না।’ বল, ‘উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচণ্ডতম’, যদি তাহারা বুঝিত!
فَلۡيَـضۡحَكُوۡا قَلِيۡلاً وَّلۡيَبۡكُوۡا كَثِيۡرًا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا يَكۡسِبُوۡنَ﴿۸۲﴾
৯-৮২ : অতএব তাহারা কিঞ্চিৎ হাসিয়া লউক, তাহারা প্রচুর কাঁদিবে, তাহাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ।
فَاِنۡ رَّجَعَكَ اللّٰهُ اِلٰى طَآٮِٕفَةٍ مِّنۡهُمۡ فَاسۡتَـاْذَنُوۡكَ لِلۡخُرُوۡجِ فَقُلْ لَّنۡ تَخۡرُجُوۡا مَعِىَ اَبَدًا وَّلَنۡ تُقَاتِلُوۡا مَعِىَ عَدُوًّا ؕ اِنَّكُمۡ رَضِيۡتُمۡ بِالۡقُعُوۡدِ اَوَّلَ مَرَّةٍ فَاقۡعُدُوۡا مَعَ الۡخٰلـِفِيۡنَ ﴿۸۳﴾
৯-৮৩ : আল্লাহ্ যদি তোমাকে উহাদের কোন দলের নিকট ফেরত আনেন এবং উহারা অভিযানে বাহির হইবার জন্য তোমার অনুমতি প্রার্থনা করে, তখন তুমি বলিবে, ‘তোমরা তো আমার সঙ্গে কখনও বাহির হইবে না এবং তোমরা আমার সঙ্গী হইয়া কখনও শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করিবে না। তোমরা তো প্রথমবার বসিয়া থাকাই পছন্দকরিয়াছিলে ; সুতরাং যাহারা পিছনে থাকে তাহাদের সঙ্গে বসিয়াই থাক।’
وَلَا تُصَلِّ عَلٰٓى اَحَدٍ مِّنۡهُمۡ مَّاتَ اَبَدًا وَّلَا تَقُمۡ عَلٰى قَبۡرِهٖ ؕ اِنَّهُمۡ كَفَرُوۡا بِاللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ وَمَاتُوۡا وَهُمۡ فٰسِقُوۡنَ﴿۸۴﴾
৯-৮৪ : উহাদের মধ্যে কাহারও মৃত্যু হইলে তুমি কখনও উহার জন্য জানাযার সালাত পড়িবে না এবং উহার কবর - পার্শ্বে দাঁড়াইবে না ; উহারা তো আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলকে অস্বীকার করিয়াছিল এবং পাপাচারী অবস্থায় উহাদের মৃত্যু হইয়াছে।
وَلَا تُعۡجِبۡكَ اَمۡوَالُهُمۡ وَاَوۡلَادُهُمۡؕ اِنَّمَا يُرِيۡدُ اللّٰهُ اَنۡ يُّعَذِّبَهُمۡ بِهَا فِى الدُّنۡيَا وَتَزۡهَقَ اَنۡفُسُهُمۡ وَهُمۡ كٰفِرُوۡنَ﴿۸۵﴾
৯-৮৫ : সুতরাং উহাদের সম্পদ ও সন্তান - সন্ততি তোমাকে যেন বিমুগ্ধ না করে ; আল্লাহ্ তো উহার দ্বারাই উহাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান ; উহারা কাফির থাকা অবস্থায় উহাদের আত্মা দেহত্যাগ করিবে।
وَاِذَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَةٌ اَنۡ اٰمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَجَاهِدُوۡا مَعَ رَسُوۡلِهِ اسۡتَـاۡذَنَكَ اُولُوا الطَّوۡلِ مِنۡهُمۡ وَقَالُوۡا ذَرۡنَا نَكُنۡ مَّعَ الۡقٰعِدِيۡنَ﴿۸۶﴾
৯-৮৬ : ‘আল্লাহর উপর ঈমান আন এবং রাসূলের সঙ্গী হইয়া জিহাদ কর’ - এই মর্মে যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন উহাদের মধ্যে যাহাদের শক্তি - সামর্থ্য আছে তাহারা তোমার নিকট অব্যাহতি চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে রেহাই দাও, যাহারা বসিয়া থাকে আমরা তাহাদের সঙ্গেই থাকিব।’
رَضُوۡا بِاَنۡ يَّكُوۡنُوۡا مَعَ الۡخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ فَهُمۡ لَا يَفۡقَهُوۡنَ﴿۸۷﴾
৯-৮৭ : উহারা অন্তঃপুরবাসিনীদের সঙ্গে অবস্থান করাই পছন্দকরিয়াছে এবং উহাদের অন্তর মোহর করা হইয়াছে ; ফলে উহারা বুঝিতে পারে না।
لٰـكِنِ الرَّسُوۡلُ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ جَاهَدُوۡا بِاَمۡوَالِهِمۡ وَاَنۡفُسِهِمۡؕ وَاُولٰۤٮِٕكَ لَهُمُ الۡخَيۡـرٰتُ وَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ﴿۸۸﴾
৯-৮৮ : কিন্তু রাসূল এবং যাহারা তাহার সঙ্গে ঈমান আনিয়াছিল তাহারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিয়াছে ; উহাদের জন্যই কল্যাণ আছে এবং উহারাই সফলকাম।
اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا ؕ ذٰ لِكَ الۡـفَوۡزُ الۡعَظِيۡمُ ﴿۸۹﴾
৯-৮৯ : আল্লাহ্ উহাদের জন্য প্রস্তুত করিয়া রাখিয়াছেন জান্নাত, যাহার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে; ইহাই মহাসাফল্য।
وَ جَآءَ الۡمُعَذِّرُوۡنَ مِنَ الۡاَعۡرَابِ لِيُؤۡذَنَ لَهُمۡ وَقَعَدَ الَّذِيۡنَ كَذَبُوا اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ ؕ سَيُصِيۡبُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡهُمۡ عَذَابٌ اَ لِيۡمٌ ﴿۹۰﴾
৯-৯০ : মরুবাসীদের মধ্যে কিছু লোক অজুহাত পেশ করিতে আসিল যেন ইহাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং যাহারা বসিয়া রহিল তাহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে মিথ্যা বলিয়াছিল, উহাদের মধ্যে যাহারা কুফরী করিয়াছে তাহাদের মর্মন্তুদ শাস্তি হইবেই।
لَـيۡسَ عَلَى الضُّعَفَآءِ وَلَا عَلَى الۡمَرۡضٰى وَلَا عَلَى الَّذِيۡنَ لَا يَجِدُوۡنَ مَا يُنۡفِقُوۡنَ حَرَجٌ اِذَا نَصَحُوۡا لِلّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖؕ مَا عَلَى الۡمُحۡسِنِيۡنَ مِنۡ سَبِيۡلٍؕ وَاللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌۙ﴿۹۱﴾
৯-৯১ : যাহারা দুর্বল, যাহারা পীড়িত এবং যাহারা অর্থসাহায্যে অসমর্থ, তাহাদের কোন অপরাধ নাই, যদি আল্লাহ্ ও রাসূলের প্রতি তাহাদের অবিমিশ্র অনুরাগ থাকে। যাহারা সৎকর্মপরায়ণ তাহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন হেতু নাই ; আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَّلَا عَلَى الَّذِيۡنَ اِذَا مَاۤ اَتَوۡكَ لِتَحۡمِلَهُمۡ قُلۡتَ لَاۤ اَجِدُ مَاۤ اَحۡمِلُكُمۡ عَلَيۡهِ تَوَلَّوْا وَّاَعۡيُنُهُمۡ تَفِيۡضُ مِنَ الدَّمۡعِ حَزَنًا اَلَّا يَجِدُوۡا مَا يُنۡفِقُوۡنَؕ﴿۹۲﴾
৯-৯২ : উহাদেরও কোন অপরাধ নাই যাহারা তোমার নিকট বাহনের জন্য আসিলে তুমি বলিয়াছিলে, ‘তোমাদের জন্য কোন বাহন আমি পাইতেছি না’; উহারা অর্থব্যয়ে অসামর্থ্যজনিত দুঃখে অশ্রুবিগলিত নেত্রে ফিরিয়া গেল।
اِنَّمَا السَّبِيۡلُ عَلَى الَّذِيۡنَ يَسۡتَاْذِنُوۡنَكَ وَهُمۡ اَغۡنِيَآءُۚ رَضُوۡا بِاَنۡ يَّكُوۡنُوۡا مَعَ الۡخَـوَالِفِۙ وَطَبَعَ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ فَهُمۡ لَا يَعۡلَمُوۡنَ﴿۹۳﴾
৯-৯৩ : যাহারা অভাবমুক্ত হইয়াও অব্যাহতি প্রার্থনা করিয়াছে, অবশ্যই উহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের হেতু আছে। উহারা অন্তঃপুরবাসিনীদের সঙ্গে থাকাই পছন্দকরিয়াছিল ; আল্লাহ্ উহাদের অন্তর মোহর করিয়া দিয়াছেন, ফলে উহারা বুঝিতে পারে না!
يَعۡتَذِرُوۡنَ اِلَيۡكُمۡ اِذَا رَجَعۡتُمۡ اِلَيۡهِمۡ ؕ قُلْ لَّا تَعۡتَذِرُوۡا لَنۡ نُّـؤۡمِنَ لَـكُمۡ قَدۡ نَـبَّاَنَا اللّٰهُ مِنۡ اَخۡبَارِكُمۡ ؕ وَ سَيَرَى اللّٰهُ عَمَلَـكُمۡ وَرَسُوۡلُهٗ ثُمَّ تُرَدُّوۡنَ اِلٰى عٰلِمِ الۡغَيۡبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمۡ بِمَا كُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ﴿۹۴﴾
৯-৯৪ : তোমরা উহাদের নিকট ফিরিয়া আসিলে উহারা তোমাদের নিকট অজুহাত পেশ করিবে। বলিও, ‘অজুহাত পেশ করিও না, আমরা তোমাদেরকে কখনও বিশ্বাস করিব না ; আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানাইয়া দিয়াছেন এবং আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করিবেন এবং তাঁহার রাসূলও। অতঃপর যিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা তাঁহার নিকট তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হইবে এবং তিনি তোমরা যাহা করিতে, তাহা তোমাদেরকে জানাইয়া দিবেন।’
سَيَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰهِ لَـكُمۡ اِذَا انْقَلَبۡتُمۡ اِلَيۡهِمۡ لِتُعۡرِضُوۡا عَنۡهُمۡؕ فَاَعۡرِضُوۡا عَنۡهُمۡؕ اِنَّهُمۡ رِجۡسٌ وَّمَاۡوٰٮهُمۡ جَهَـنَّمُۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا يَكۡسِبُوۡنَ﴿۹۵﴾
৯-৯৫ : তোমরা উহাদের নিকট ফিরিয়া আসিলে অচিরেই উহারা আল্লাহ্র শপথ করিবে যাহাতে তোমরা উহাদের উপেক্ষা কর। সুতরাং তোমরা উহাদেরকে উপেক্ষা করিবে; উহারা অপবিত্র এবং উহাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জাহান্নাম উহাদের আবাসস্থল।
يَحۡلِفُوۡنَ لَـكُمۡ لِتَرۡضَوۡا عَنۡهُمۡۚ فَاِنۡ تَرۡضَوۡا عَنۡهُمۡ فَاِنَّ اللّٰهَ لَا يَرۡضٰى عَنِ الۡقَوۡمِ الۡفٰسِقِيۡنَ﴿۹۶﴾
৯-৯৬ : উহারা তোমাদের নিকট শপথ করিবে যাহাতে তোমরা উহাদের প্রতি তুষ্ট হও। তোমরা উহাদের প্রতি তুষ্ট হইলেও আল্লাহ্ তো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়ের প্রতি তুষ্ট হইবেন না।
اَلۡاَعۡرَابُ اَشَدُّ كُفۡرًا وَّ نِفَاقًا وَّاَجۡدَرُ اَلَّا يَعۡلَمُوۡا حُدُوۡدَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ عَلٰى رَسُوۡلِهٖؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ﴿۹۷﴾
৯-৯৭ : কুফরী ও কপটতায় মরুবাসীরা কঠোরতর; এবং আল্লাহ্ তাঁহার রাসূলের প্রতি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন, তাহার সীমারেখা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার যোগ্যতা ইহাদের অধিক। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمِنَ الۡاَعۡرَابِ مَنۡ يَّتَّخِذُ مَا يُنۡفِقُ مَغۡرَمًا وَّيَتَرَبَّصُ بِكُمُ الدَّوَآٮِٕرَؕ عَلَيۡهِمۡ دَآٮِٕرَةُ السَّوۡءِؕ وَاللّٰهُ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ﴿۹۸﴾
৯-৯৮ : মরুবাসীদের কেহ কেহ, যাহা তাহারা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে তাহা অর্থদণ্ড বলিয়া গণ্য করে এবং তোমাদের ভাগ্য বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করে। মন্দ ভাগ্যচক্র উহাদেরই হউক। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَمِنَ الۡاَعۡرَابِ مَنۡ يُّؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنۡفِقُ قُرُبٰتٍ عِنۡدَ اللّٰهِ وَصَلَوٰتِ الرَّسُوۡلِؕ اَلَاۤ اِنَّهَا قُرۡبَةٌ لَّهُمۡؕ سَيُدۡخِلُهُمُ اللّٰهُ فِىۡ رَحۡمَتِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۹۹﴾
৯-৯৯ : মরুবাসীদের কেহ কেহ আল্লাহে ও পরকালে ঈমান রাখে এবং যাহা ব্যয় করে তাহাকে আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও রাসূলের দু‘আ লাভের উপায় মনে করে। বাস্তবিকই উহা তাহাদের জন্য আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের উপায় ; আল্লাহ্ তাহাদেরকে নিজ রহমতে দাখিল করিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَالسّٰبِقُوۡنَ الۡاَوَّلُوۡنَ مِنَ الۡمُهٰجِرِيۡنَ وَالۡاَنۡصَارِ وَالَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡهُمۡ بِاِحۡسَانٍ ۙ رَّضِىَ اللّٰهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُوۡا عَنۡهُ وَاَعَدَّ لَهُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِىۡ تَحۡتَهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۤ اَبَدًا ؕ ذٰ لِكَ الۡـفَوۡزُ الۡعَظِيۡمُ﴿۱۰۰﴾
৯-১০০ : মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যাহারা প্রথম অগ্রগামী এবং যাহারা নিষ্ঠার সঙ্গে তাহাদের অনুসরণ করে আল্লাহ্ তাহাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তাহারাও তাহাতে সন্তুষ্ট এবং তিনি তাহাদের জন্য প্রস্তুত করিয়াছেন জান্নাত, যাহার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেখানে তাহারা চিরস্থায়ী হইবে। ইহা মহাসাফল্য।
وَمِمَّنۡ حَوۡلَــكُمۡ مِّنَ الۡاَعۡرَابِ مُنٰفِقُوۡنَ ۛؕ وَمِنۡ اَهۡلِ الۡمَدِيۡنَةِ ؔۛمَرَدُوۡا عَلَى النِّفَاقِلَا تَعۡلَمُهُمۡ ؕ نَحۡنُ نَـعۡلَمُهُمۡ ؕ سَنُعَذِّبُهُمۡ مَّرَّتَيۡنِ ثُمَّ يُرَدُّوۡنَ اِلٰى عَذَابٍ عَظِيۡمٍ ۚ﴿۱۰۱﴾
৯-১০১ : মরুবাসীদের মধ্যে যাহারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাহাদের কেহ কেহ মুনাফিক এবং মদীআন্ নাবাসীদের মধ্যেও কেহ কেহ, উহারা কপটতায় সিদ্ধ। তুমি উহাদেরকে জান না; আমি উহাদেরকে জানি। আমি উহাদেরকে দুইবার শাস্তি দিব ও পরে উহারা প্রত্যাবর্তিত হইবে মহাশাস্তির দিকে।
وَاٰخَرُوۡنَ اعۡتَرَفُوۡا بِذُنُوۡبِهِمۡ خَلَطُوۡا عَمَلًا صَالِحًـا وَّاٰخَرَ سَيِّئًا ؕ عَسَى اللّٰهُ اَنۡ يَّتُوۡبَ عَلَيۡهِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴿۱۰۲﴾
৯-১০২ : এবং অপর কতক লোকে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করিয়াছে, উহারা এক সৎকর্মের সঙ্গে অপর অসৎকর্ম মিশ্রিত করিয়াছে; আল্লাহ্ হয়ত উহাদেরকে ক্ষমা করিবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
خُذۡ مِنۡ اَمۡوَالِهِمۡ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيۡهِمۡ بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمۡؕ وَاللّٰهُ سَمِيۡعٌ عَلِيۡمٌ﴿۱۰۳﴾
৯-১০৩ : উহাদের সম্পদ হইতে ‘সোয়াদাকা’ গ্রহণ করিবে। ইহার দ্বারা তুমি উহাদেরকে পবিত্র করিবে এবং পরিশোধিত করিবে। তুমি উহাদেরকে দু‘আ করিবে। তোমার দু‘আ তো উহাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
اَلَمۡ يَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ هُوَ يَقۡبَلُ التَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهٖ وَيَاۡخُذُ الصَّدَقٰتِ وَ اَنَّ اللّٰهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ﴿۱۰۴﴾
৯-১০৪ : উহারা কি জানে না যে, আল্লাহ্ তো তাঁহার বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং ‘সোয়াদাকা’ গ্রহণ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ?
وَقُلِ اعۡمَلُوۡا فَسَيَرَى اللّٰهُ عَمَلَكُمۡ وَرَسُوۡلُهٗ وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَؕ وَسَتُرَدُّوۡنَ اِلٰى عٰلِمِ الۡغَيۡبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمۡ بِمَا كُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَۚ﴿۱۰۵﴾
৯-১০৫ : এবং বল, ‘তোমরা কর্ম করিতে থাক; আল্লাহ্ তো তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করিবেন এবং তাঁহার রাসূল ও মু’মিনগণও করিবে এবং অচিরেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকট, অতঃপর তিনি তোমরা যাহা করিতে তাহা তোমাদেরকে জানাইয়া দিবেন।’
وَاٰخَرُوۡنَ مُرۡجَوۡنَ لِاَمۡرِ اللّٰهِ اِمَّا يُعَذِّبُهُمۡ وَاِمَّا يَتُوۡبُ عَلَيۡهِمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ﴿۱۰۶﴾
৯-১০৬ : এবং আল্লাহ্র আদেশের প্রতীক্ষায় অপর কতকের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রহিল তিনি উহাদেরকে শাস্তি দিবেন, না ক্ষমা করিবেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَالَّذِيۡنَ اتَّخَذُوۡا مَسۡجِدًا ضِرَارًا وَّكُفۡرًا وَّتَفۡرِيۡقًۢا بَيۡنَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَاِرۡصَادًا لِّمَنۡ حَارَبَ اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ مِنۡ قَبۡلُؕ وَلَيَحۡلِفُنَّ اِنۡ اَرَدۡنَاۤ اِلَّا الۡحُسۡنٰىؕ وَاللّٰهُ يَشۡهَدُ اِنَّهُمۡ لَـكٰذِبُوۡنَ﴿۱۰۷﴾
৯-১০৭ : এবং যাহারা মসজিদ নির্মাণ করিয়াছে ক্ষতিসাধন, কুফরী ও মু’মিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং ইতিপূর্বে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি সংগ্রাম করিয়াছে তাহার গোপন ঘাঁটিস্বরূপ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, তাহারা অবশ্যই শপথ করিবে, ‘আমরা সদুদ্দেশ্যেই উহা করিয়াছি’; আল্লাহ্ সাক্ষী, তাহারা তো মিথ্যাবাদী।
لَا تَقُمۡ فِيۡهِ اَبَدًا ؕ لَمَسۡجِدٌ اُسِّسَ عَلَى التَّقۡوٰى مِنۡ اَوَّلِ يَوۡمٍ اَحَقُّ اَنۡ تَقُوۡمَ فِيۡهِؕ فِيۡهِ رِجَالٌ يُّحِبُّوۡنَ اَنۡ يَّتَطَهَّرُوۡا ؕ وَاللّٰهُ يُحِبُّ الۡمُطَّهِّرِيۡنَ﴿۱۰۸﴾
৯-১০৮ : তুমি ইহাতে কখনও দাঁড়াইও না। যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হইতেই স্থাপিত হইয়াছে তাক্ওয়ার উপর, উহাই তোমার সালাতের জন্য অধিক যোগ্য। সেখানে এমন লোক আছে যাহারা পবিত্রতা অর্জন ভালবাসে এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ্ পছন্দকরেন।
اَفَمَنۡ اَسَّسَ بُنۡيَانَهٗ عَلٰى تَقۡوٰى مِنَ اللّٰهِ وَرِضۡوَانٍ خَيۡرٌ اَمۡ مَّنۡ اَسَّسَ بُنۡيَانَهٗ عَلٰى شَفَا جُرُفٍ هَارٍ فَانۡهَارَ بِهٖ فِىۡ نَارِ جَهَـنَّمَؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِى الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِيۡنَ ﴿۱۰۹﴾
৯-১০৯ : যে ব্যক্তি তাহার গৃহের ভিত্তি আল্লাহ্ভীতি ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করে সে উত্তম, না ঐ ব্যক্তি উত্তম যে তাহার গৃহের ভিত্তি স্থাপন করে এক খাদের ধসোন্মূখ কিনারায়, ফলে যাহা উহাকেসহ জাহান্নামের অগ্নিতে পতিত হয় ? আল্লাহ্ জালিম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
لَا يَزَالُ بُنۡيَانُهُمُ الَّذِىۡ بَنَوۡا رِيۡبَةً فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ اِلَّاۤ اَنۡ تَقَطَّعَ قُلُوۡبُهُمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ﴿۱۱۰﴾
৯-১১০ : উহাদের গৃহ যাহা উহারা নির্মাণ করিয়াছে তাহা উহাদের অন্তরে সন্দেহের কারণ হইয়া থাকিবে। যে পর্যন্ত না উহাদের অন্তর ছিন্ন - বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰى مِنَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَاَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَــنَّةَ ؕ يُقَاتِلُوۡنَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ فَيَقۡتُلُوۡنَ وَ يُقۡتَلُوۡنَوَعۡدًا عَلَيۡهِ حَقًّا فِى التَّوۡرٰٮةِ وَالۡاِنۡجِيۡلِ وَالۡقُرۡاٰنِ ؕ وَمَنۡ اَوۡفٰى بِعَهۡدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسۡتَـبۡشِرُوۡا بِبَيۡعِكُمُ الَّذِىۡ بَايَعۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَذٰ لِكَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِيۡمُ ﴿۱۱۱﴾
৯-১১১ : নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মু’মিনদের নিকট হইতে তাহাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করিয়া লইয়াছেন, তাহাদের জন্য জান্নাত আছে ইহার বিনিময়ে। তাহারা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করে, নিধন করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এই সম্পর্কে তাহাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রহিয়াছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ্ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে ? তোমরা যে সওদা করিয়াছ সেই সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং উহাই তো মহাসাফল্য।
اَلتَّاۤٮِٕبُوۡنَ الۡعٰبِدُوۡنَ الۡحٰمِدُوۡنَ السّاۤٮِٕحُوۡنَ الرّٰكِعُوۡنَ السّٰجِدُوۡنَ الۡاٰمِرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَالنَّاهُوۡنَ عَنِ الۡمُنۡكَرِ وَالۡحٰــفِظُوۡنَ لِحُدُوۡدِ اللّٰه ِؕ وَبَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ ﴿۱۱۲﴾
৯-১১২ : উহারা তওবাকারী, ‘ইবাদতকারী, আল্লাহ্র প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকূ‘কারী, সিজ্দাকারী, সৎকাজের নির্দেশদাতা, অসৎকাজে নিষেধকারী এবং আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী; এই মু’মিনদেরকে তুমি শুভ সংবাদ দাও।
مَا كَانَ لِلنَّبِىِّ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡاۤ اَنۡ يَّسۡتَغۡفِرُوۡا لِلۡمُشۡرِكِيۡنَ وَ لَوۡ كَانُوۡۤا اُولِىۡ قُرۡبٰى مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمۡ اَنَّهُمۡ اَصۡحٰبُ الۡجَحِيۡمِ﴿۱۱۳﴾
৯-১১৩ : আত্মীয় - স্বজন হইলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মু’মিনদের জন্য সংগত নয় যখন ইহা সুস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে যে, নিশ্চিতই উহারা জাহান্নামী।
وَمَا كَانَ اسۡتِغۡفَارُ اِبۡرٰهِيۡمَ لِاَبِيۡهِ اِلَّا عَنۡ مَّوۡعِدَةٍ وَّعَدَهَاۤ اِيَّاهُ ۚ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهٗۤ اَنَّهٗ عَدُوٌّ لِّلّٰهِ تَبَرَّاَ مِنۡهُ ؕ اِنَّ اِبۡرٰهِيۡمَ لَاَوَّاهٌ حَلِيۡمٌ﴿۱۱۴﴾
৯-১১৪ : ইব্রাহীম তাহার পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিয়াছিল, তাহাকে ইহার প্রতিশ্রুতি দিয়াছিল বলিয়া ; অতঃপর যখন ইহা তাহার নিকট সুস্পষ্ট হইল যে, সে আল্লাহ্র শত্রূ তখন ইব্রাহীম উহার সম্পর্ক ছিন্ন করিল। ইব্রাহীম তো কোমল হৃদয় ও সহনশীল।
وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُـضِلَّ قَوۡمًۢا بَعۡدَ اِذۡ هَدٰٮهُمۡ حَتّٰى يُبَيِّنَ لَهُمۡ مَّا يَتَّقُوۡنَؕ اِنَّ اللّٰهَ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمٌ﴿۱۱۵﴾
৯-১১৫ : আল্লাহ্ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করিবার পর উহাদেরকে বিভ্রান্ত করিবেন - উহাদেরকে কী বিষয়ে তাক্ওয়া অবলম্বন করিতে হইবে, ইহা সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত না করা পর্যন্ত; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
اِنَّ اللّٰهَ لَهٗ مُلۡكُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِؕ يُحۡىٖ وَيُمِيۡتُؕ وَمَا لَـكُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيۡرٍ﴿۱۱۶﴾
৯-১১৬ : আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহরই; তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান। আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নাই, সাহায্যকারীও নাই।
لَـقَدْ تَّابَ اللّٰهُ عَلَى النَّبِىِّ وَالۡمُهٰجِرِيۡنَ وَالۡاَنۡصَارِ الَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡهُ فِىۡ سَاعَةِ الۡعُسۡرَةِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا كَادَ يَزِيۡغُ قُلُوۡبُ فَرِيۡقٍ مِّنۡهُمۡ ثُمَّ تَابَ عَلَيۡهِمۡؕ اِنَّهٗ بِهِمۡ رَءُوۡفٌ رَّحِيۡمٌۙ ﴿۱۱۷﴾
৯-১১৭ : আল্লাহ্ অবশ্যই অনুগ্রহপরায়ণ হইলেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি যাহারা তাহার অনুসরণ করিয়াছিল সংকটকালে - এমনকি যখন তাহাদের একদলের চিত্ত - বৈকল্যের উপক্রম হইয়াছিল। পরে আল্লাহ্ উহাদেরকে ক্ষমা করিলেন; তিনি তো উহাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।
وَّعَلَى الثَّلٰثَةِ الَّذِيۡنَ خُلِّفُوۡا ؕ حَتّٰۤى اِذَا ضَاقَتۡ عَلَيۡهِمُ الۡاَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ وَضَاقَتۡ عَلَيۡهِمۡ اَنۡفُسُهُمۡ وَظَنُّوۡۤا اَنۡ لَّا مَلۡجَاَ مِنَ اللّٰهِ اِلَّاۤ اِلَيۡهِ ؕ ثُمَّ تَابَ عَلَيۡهِمۡ لِيَتُوۡبُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ﴿۱۱۸﴾
৯-১১৮ : এবং তিনি ক্ষমা করিলেন অপর তিনজনকেও, যাহাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হইয়াছিল, যে পর্যন্ত না পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাহাদের জন্য উহা সংকুচিত হইয়াছিল এবং তাহাদের জীবন তাহাদের জন্য দুর্বিষহ হইয়াছিল এবং তাহারা উপলব্ধি করিয়াছিল যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন আশ্রয়স্থল নাই, তাঁহার দিকে প্রত্যাবর্তন ব্যতীত, পরে তিনি উহাদের তওবা কবুল করিলেন যাহাতে উহারা তওবায় স্থির থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَكُوۡنُوۡا مَعَ الصّٰدِقِيۡنَ﴿۱۱۹﴾
৯-১১৯ : হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
مَا كَانَ لِاَهۡلِ الۡمَدِيۡنَةِ وَمَنۡ حَوۡلَهُمۡ مِّنَ الۡاَعۡرَابِ اَنۡ يَّتَخَلَّفُوۡا عَنۡ رَّسُوۡلِ اللّٰهِ وَ لَا يَرۡغَبُوۡا بِاَنۡفُسِهِمۡ عَنۡ نَّـفۡسِهٖ ؕ ذٰ لِكَ بِاَنَّهُمۡ لَا يُصِيۡبُهُمۡ ظَمَاٌ وَّلَا نَصَبٌ وَّلَا مَخۡمَصَةٌ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَلَا يَطَـُٔــوۡنَ مَوۡطِئًا يَّغِيۡظُ الۡكُفَّارَ وَلَا يَنَالُوۡنَ مِنۡ عَدُوٍّ نَّيۡلاً اِلَّا كُتِبَ لَهُمۡ بِهٖ عَمَلٌ صَالِحٌ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُضِيۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِيۡنَۙ﴿۱۲۰﴾
৯-১২০ : মদীআন্ নাবাসী ও উহাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সঙ্গত নয় আল্লাহ্র রাসূলের সহগামী না হইয়া পিছনে রহিয়া যাওয়া এবং তাহার জীবন অপেক্ষা তাহাদের নিজেদের জীবনকে প্রিয় জ্ঞান করা ; কারণ আল্লাহ্র পথে উহাদের তৃষ্ণা, ক্লান্তি এবং ক্ষুধায় ক্লিষ্ট হওয়া এবং কাফিরদের ক্রোধ উদ্রেক করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং শত্রূদের নিকট হইতে কিছু প্রাপ্ত হওয়া উহাদের সৎকর্মরূপে গণ্য হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।
وَلَا يُنۡفِقُوۡنَ نَفَقَةً صَغِيۡرَةً وَّلَا كَبِيۡرَةً وَّلَا يَقۡطَعُوۡنَ وَادِيًا اِلَّا كُتِبَ لَهُمۡ لِيَجۡزِيَهُمُ اللّٰهُ اَحۡسَنَ مَا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۲۱﴾
৯-১২১ : এবং উহারা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ যাহাই ব্যয় করে এবং যে কোন প্রান্তরই অতিক্রম করে তাহা উহাদের অনুকূলে লিপিবদ্ধ হয় - যাহাতে উহারা যাহা করে আল্লাহ তাহা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর পুরস্কার উহাদেরকে দিতে পারেন।
وَمَا كَانَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لِيَنۡفِرُوۡا كَآفَّةً ؕ فَلَوۡلَا نَفَرَ مِنۡ كُلِّ فِرۡقَةٍ مِّنۡهُمۡ طَآٮِٕفَةٌ لِّيَـتَفَقَّهُوۡا فِى الدِّيۡنِ وَ لِيُنۡذِرُوۡا قَوۡمَهُمۡ اِذَا رَجَعُوۡۤا اِلَيۡهِمۡ لَعَلَّهُمۡ يَحۡذَرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
৯-১২২ : মু’মিনদের সকলের একসঙ্গে অভিযানে বাহির হওয়া সংগত নয়, উহাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন, যাহাতে তাহারা দীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করিতে পারে এবং উহাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করিতে পারে, যখন তাহারা তাহাদের নিকট ফিরিয়া আসিবে যাহাতে তাহারা সতর্ক হয়।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا قَاتِلُوا الَّذِيۡنَ يَلُوۡنَكُمۡ مِّنَ الۡكُفَّارِ وَلۡيَجِدُوۡا فِيۡكُمۡ غِلۡظَةً ؕ وَاعۡلَمُوۡاۤ اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الۡمُتَّقِيۡنَ﴿۱۲۳﴾
৯-১২৩ : হে মু’মিনগণ! কাফিরদের মধ্যে যাহারা তোমাদের নিকটবর্তী তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর এবং উহারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখিতে পায়। জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তো মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।
وَاِذَا مَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَةٌ فَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّقُوۡلُ اَيُّكُمۡ زَادَتۡهُ هٰذِهٖۤ اِيۡمَانًا ۚ فَاَمَّا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا فَزَادَتۡهُمۡ اِيۡمَانًا وَّهُمۡ يَسۡتَبۡشِرُوۡنَ﴿۱۲۴﴾
৯-১২৪ : যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন উহাদের কেহ কেহ বলে, ‘ইহা তোমাদের মধ্যে কাহার ঈমান বৃদ্ধি করিল ?’ যাহারা মু’মিন ইহা তাহাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তাহারাই আনন্দিত হয়।
وَاَمَّا الَّذِيۡنَ فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ مَّرَضٌ فَزَادَتۡهُمۡ رِجۡسًا اِلٰى رِجۡسِهِمۡ وَمَاتُوۡا وَهُمۡ كٰفِرُوۡنَ﴿۱۲۵﴾
৯-১২৫ : এবং যাহাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, ইহা তাহাদের কলুষের সঙ্গে আরও কলুষ যুক্ত করে এবং উহাদের মৃত্যু ঘটে কাফির অবস্থায়।
اَوَلَا يَرَوۡنَ اَنَّهُمۡ يُفۡتَـنُوۡنَ فِىۡ كُلِّ عَامٍ مَّرَّةً اَوۡ مَرَّتَيۡنِ ثُمَّ لَا يَتُوۡبُوۡنَ وَلَا هُمۡ يَذَّكَّرُوۡنَ﴿۱۲۶﴾
৯-১২৬ : উহারা কি দেখে না যে, ‘উহাদেরকে প্রতি বৎসর একবার বা দুইবার বিপর্যস্ত করা হয় ?’ ইহার পরও উহারা তওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না,
وَاِذَا مَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَةٌ نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ اِلٰى بَعۡضٍؕ هَلۡ يَرٰٮكُمۡ مِّنۡ اَحَدٍ ثُمَّ انْصَرَفُوۡا ؕ صَرَفَ اللّٰهُ قُلُوۡبَهُمۡ بِاَنَّهُمۡ قَوۡمٌ لَّا يَفۡقَهُوۡنَ﴿۱۲۷﴾
৯-১২৭ : এবং যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন উহারা একে অপরের দিকে তাকায় এবং ইশারায় জিজ্ঞাসা করে ‘তোমাদেরকে কেহ লক্ষ্য করিতেছে কি ?’ অতঃপর উহারা সরিয়া পড়ে। আল্লাহ্ উহাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করিয়াছেন, কারণ উহারা এমন এক সম্প্রদায় যাহাদের বোধশক্তি নাই।
لَـقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِكُمۡ عَزِيۡزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيۡصٌ عَلَيۡكُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِيۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِيۡمٌ﴿۱۲۸﴾
৯-১২৮ : অবশ্যই তোমাদের মধ্য হইতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল আসিয়াছে। তোমাদেরকে যাহা বিপন্ন করে উহা তাহার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মু’মিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُلۡ حَسۡبِىَ اللّٰهُ ۖ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ؕ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُ ؕ وَهُوَ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡعَظِيۡمِ﴿۱۲۹﴾
৯-১২৯ : অতঃপর উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া নেয় তবে তুমি বলিও, ‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। আমি তাহারই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহাআর্শের অধিপতি।’